খায়রুল হকের গ্রেপ্তারে সরকারকে ধন্যবাদ জানাই: মির্জা ফখরুল

সময়: 10:08 am - July 24, 2025 |

মানব কথা: সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের গ্রেপ্তারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাদুবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বিলম্বে হলেও এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সরকার (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত হবে এবং সঠিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। দেশের একজন বড় শত্রু অবশেষে গ্রেপ্তার হলো- এটা জাতির জন্য স্বস্তির বিষয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, কারণ বাংলাদেশের একজন বড় শত্রু- যিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশের বিপুল ক্ষতি করেছেন। অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি এমন একটি পদে ছিলেন, যেখান থেকে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। কিন্তু সে জায়গায় তিনি জনগণ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন এবং পরে যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়, তার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ ছিল। সেই রায় দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে বলে আমরা মনে করি। তার এই বেআইনি ও রাষ্ট্রবিরোধী ভূমিকার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

রাজনৈতিক সংকট তৈরিতে নিঃসন্দেহে খায়রুল হক দায়ী ছিলেন, তার কী ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সংকটের জন্য তিনি শতভাগ দায়ী। তবে শাস্তির বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলতে চাই না। আইন অনুযায়ী যেসব বিধান আছে, তা অনুসরণ করেই তাকে প্রসিকিউট করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তবে আমি মনে করি, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করার সাহস না পায়। শুধু তিনি নন, যারা এই ধরনের অপকর্মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আমরা আশা করি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের রায়ের পরেই দেশের সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়। এর পর থেকেই দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটের সূচনা ঘটে, যা জাতিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা মনে করি, বিচার বিভাগ এমন একটি সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, যেখানে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস থাকে। কিন্তু তিনি সেই আস্থার জায়গাটি ধ্বংস করেছেন-শুধু তার রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার কারণে। এতে করে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, কার্জন হলের উল্টো পাশে, হাইকোর্টের পাশেই অবস্থিত শিশু একাডেমির ভবনটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে আলোচনা চলছে বা এরকম কোনো প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি। এই বিরোধিতার কারণ হলো- শিশু একাডেমি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, যার মাধ্যমে শিশুদের মানসিক, সৃজনশীল ও নৈতিক বিকাশের জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং তিনিই এটি প্রথম চালু করেন। বর্তমানে এটি সারা দেশে শাখা বিস্তার করেছে। তাই আমরা মনে করি, শিশু একাডেমিকে ওই স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জাতি গঠনের পথে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, শিশু একাডেমির ভবনটি যেন স্থানান্তর বা অপসারণ না করা হয়।

এই সময় মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর, সদস্য সচিব কফিল উদ্দিন, আফাজ উদ্দিন ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর