গুলিবিদ্ধ সেই ছোট্ট মুসা চোখ খুলে হাত-পা নাড়ছে

সময়: 10:26 am - November 16, 2024 |

মানব কথা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত গুলিবিদ্ধ শিশু বাসিত খান মুসাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল। অবশেষে আহত সেই শিশু আস্তে আস্তে চোখ খুলে হাত-পা নাড়তে শুরু করেছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) শিশু মুসার অলৌকিকভাবে ফিরে আসার গল্পের কথা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন।

শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ঢাকা মেডিকেল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত ২২ অক্টোবর শিশু মুসাকে এয়ার এম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুরে গিয়ে শুরুতেই করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছিল, যা শুনে রীতিমতো কান্না চলে আসছিল আমার। পরে করোনা থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে পুরোদমে চিকিৎসা শুরু হয় এবং এখন আগের চেয়ে উন্নত।

তিনি বলেন, আজকে সকালের আপডেট হলো মুসা হাত-পা নাড়ছে, চোখ খুলছে, বসতে পারছে। এটা আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে। মুসাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর পেছনে দৌড়ঝাঁপ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। এখন আমার চোখে-মুখে কী পরিমাণ আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির এই সদস্য আরও বলেন, মুসা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে ছোট যোদ্ধা। এক বুলেট তার দাদির পেটের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে মুসার মাথায় লাগছিল। দাদি স্পট ডেড হলেও এখনো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে আছে মুসা। এখনো তার বেঁচে থাকাটা এক অলৌকিক ঘটনা। মুসাকে কেন সৃষ্টিকর্তা এখনো বাঁচিয়ে রাখছেন তা একমাত্র তিনিই ভালো জানেন। কোনোভাবেই যেন তার চিকিৎসা ব্যাহত না হয়, সেদিকে সরকার সর্বোচ্চ নজর রাখছে। আমরা চাই তার মতো আহত হয়ে চিকিৎসাধীন সব মুসারাই সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক।

চিকিৎসায় খরচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার প্রথম ধাপে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ ছাড়া মুসার জন্য এককালীন ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ১ কোটি টাকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া সরকারি খরচে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা চলছে আহত আরও ৩ জনের। বাংলাদেশে চিকিৎসাধীন আরও ১০-১২ জনের বিদেশে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

উল্লেখ্য, মুস্তাফিজুর রহমান ও নিশামণি দম্পতির একমাত্র সন্তান মুসা। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকার বাসার নিচে গুলিবিদ্ধ হয় মুসা ও তার দাদি মায়া ইসলাম (৬০)। তিনি মুসাকে আইসক্রিম কিনে দিতে তাকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে নেমেছিলেন। তখন দুজনেই গুলিবিদ্ধ হয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর