বোনদের অভিযোগে মুখ খুললেন ডিপজল

সময়: 2:53 pm - December 8, 2025 |

মানব কথা: জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বোনদের আনা অভিযোগের বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ডিপজল নাতিদীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আল্লাহই সবকিছুর উত্তম বিচারক’, এবং বোনদের অভিযোগকে ‘মিথ্যা অপবাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বোনরা অভিযোগ করেছেন যে, তারা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রয়েছেন। তাদের দাবি, বাবার মৃত্যুর পর ভাইদের দখলে সম্পত্তি থাকলেও তাদের অংশ তারা কখনোই বুঝে দেননি। দীর্ঘ চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর আদালতে আশ্রয় নিয়েছেন বোনেরা। আদালত তাদের পক্ষে স্টে অর্ডার বা নির্দেশনা দিয়েছেন।

বোনদের কথায়, “আমাদের বাবা মারা গেছেন ৪০ বছর হলো। এই সময়ের মধ্যে ভাইদের সাথে কোনো বসা হয়নি। শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু কখনো দিয়েছেন না। জানতে পারছি সম্পত্তি গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে।” এক বোনের দাবি, তার সন্তান ক্যান্সারে আক্রান্ত ও চিকিৎসাধীন থাকলেও ভাইদের কেউ সাহায্য করেননি।

বোনরা আরও জানিয়েছেন, আদালতের রায় সত্ত্বেও কার্যকর করা কঠিন, এবং অভিযোগ প্রকাশের পর হুমকি-ধমকিও বেড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ডিপজল তার ভক্ত ও দেশবাসীর কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন এবং অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করেছেন।

ডিপজল দীর্ঘদিন ইন্ডাস্ট্রি ও এলাকায় ‘দানবীর’ হিসেবে পরিচিত হলেও, এই ঘটনা তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের বিতর্ককে সামনে এনেছে।

ডিপজল লিখেন- সম্মানিত দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম।

সম্প্রতি আমার কিছু বোন আমাকে নিয়ে যে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দিয়েছে, তার বিষয়ে আমি আপনাদের সামনে কিছু বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই।

প্রথমেই পরিষ্কার করে বলতে চাই-এই বক্তব্য দেওয়ার উদ্দেশ্য কাউকে অসম্মান করা নয়। বরং আমার প্রতি ছড়ানো ভুল ধারণা ও মিথ্যা অপবাদের বিষয়ে সত্য তুলে ধরা। মামলার আইনি জবাব আমি আইন অনুযায়ী দেবো, ইনশা আল্লাহ।

আমার বোনদের আমি সবসময় সম্মান, ভালোবাসা ও সাধ্যমতো সহযোগিতা করে এসেছি এ কথা আমার এলাকার মানুষ ও আশেপাশের পরিচিত সবাই জানেন।

একজন বোন ক্যামেরার সামনে কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, তাঁর অসুস্থ সন্তানের খোঁজ কেউ নেয়নি। অথচ, তাঁর সন্তানের চিকিৎসার জন্য আল্লাহর দেওয়া সামর্থ্য অনুযায়ী আমি আমার পক্ষ থেকে একটি বড় অংকের সহায়তা করেছি এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা ভারতে পর্যন্ত করেছি। আজ ক্যামেরার সামনে তিনি যেন সব ভুলে গেলেন! পর্দায় অভিনয় আমি করি, বাস্তব জীবনে নয়। যদি জানতাম কোনোদিন বাস্তব জীবনে এমন অভিনয়ের সম্মুখীন হতে হবে, তাহলে হয়তো প্রতিটি কাজের প্রমাণ রেখে দিতাম।

আরেক বোন বলেছেন, ১১ বছর ধরে নাকি আমার সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই। অথচ মাত্র দুই মাস আগেই তাঁকে ও তাঁর সন্তানকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ সাহায্য করা হয়েছে। আমার সাধ্যের মধ্যে সবসময়ই আমি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এতো কিছু লিখে শেষ করা সম্ভব নয়।

৩৫ বছর পর আজ হঠাৎ তারা কেন এবং কার প্ররোচনায় এমন মিথ্যা বলছে-এ প্রশ্ন আমারও আছে। যদি সত্যিই কোনো দাবি থাকত, ভালোবাসার সম্পর্ক ধরে সরাসরি বললেই আমি তাদের ২/৩ গুণ বেশি দিয়ে দিতে প্রস্তুত ছিলাম। আমি ডিপজল-আমার সাধ্যের মধ্যে কাউকে ফিরিয়ে দেই না আল্লাহর রহমতে, আর তারা তো আমার আপন ভাইবোন।

যে বোন পর্দা করেন বলে প্রতিটি অনুষ্ঠানে আমি আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করেছি, সেই বোনের মুখেই আজ এমন কথা শুনতে হলো—এটা সত্যিই কষ্টের।

আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করছি-মামলার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আদালতেই সত্য প্রকাশ পাবে, ইন শা আল্লাহ।

যদি আইন অনুযায়ী তারা মালিক হোন, তবে তাদের প্রাপ্য অংশ অবশ্যই তারা পাবেন এবং আমার প্রিয় বোনদের বলছি-তোমরা জানো আমি খুব অসুস্থ। জীবনে যতটুকু পেরেছি, আমি তোমাদের জন্য করেছি আল্লাহর রহমতে; যদি আল্লাহ আরো সময় দিতেন, হয়তো আরও করতাম। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এমন আচরণ সত্যিই কষ্টদায়ক।

সম্মান দেওয়ার ও সম্মান রক্ষা করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহই সবকিছুর উত্তম বিচারক।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর