আগামীতে ট্যাগিংয়ের রাজনীতি চলবে না: শিবির সেক্রেটারি
রাজশাহীতে সাথী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ছাত্রশিবির সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে, অলিতে-গলিতে, ক্যাম্পাসের প্রতিটা রুমে-রুমে, প্রতিটা হলে-হলে হাজার হাজার গল্প লুকিয়ে আছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম কায়েমে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা যেটি রেখেছে সেটি হচ্ছে ট্যাগের রাজনীতি। আমাদের দাবি আগামী দিনে কোনো ধরনের ট্যাগিংয়ের রাজনীতি চলবে না’।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর তেরখাদিয়া এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী অঞ্চল পশ্চিমের সাথী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই ট্যাগিংয়ের রাজনীতি গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম কায়েমে সবচেয়ে বেশি করেছে। কথায় কথায় রাজাকার। যাকে রাজাকার বলা হয়েছে তার বাবার জন্ম হয়নি ৭১ সালে। সেই সন্তানকে আপনি রাজাকার বলেন। কথায় কথায় শিবির। কেমন শিবির, যে নামাজ পড়ে সে শিবির। যে দাঁড়ি রেখেছে সে শিবির, টাকনুর উপরে প্যান্ট পরে এজন্য সে শিবির। সে মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করে না সেজন্য শিবির। সে মাদকাসক্ত হয় না এজন্য সে শিবির। ছাত্রশিবিরকে তার ক্যাম্পাসে, ক্লাসে সবচেয়ে ভালো ছাত্র হতে হবে। তার পিতামাতার কাছে সবচেয়ে আদর্শবান সন্তান হতে হবে।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কত নির্মম ছিল এই রাষ্ট্র। আমরা দেখেছি হরতাল চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে মিডিয়া কর্মীদের সামনে। সারা বিশ্ব তা দেখেছে। তাদের অভিযোগ ছিল বিশ্বজিৎ শিবির হিন্দু শাখার সদস্য! কী হাস্যকর, কত নির্মম! আবরার ফাহাদ পানি সন্ত্রাস নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। আজ পানি সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। অথচ আবরার ফাহাদকে সেদিন শিবির আখ্যা দিয়ে সাপের মতো পিটিয়ে মারা হয়েছিল। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের চিত্র যদি হয় এই! এটা শুধু দু-একটি ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। কেউ যদি আমাদের প্রতিপক্ষ বানায় তাহলে তাদের প্রতি আমাদের একটা ম্যাসেজ, আদর্শকে আদর্শ দিয়ে মোকাবিলা করব। আদর্শকে ট্যাগিং বা কোনো ধরনের প্রোপাগান্ডা দিয়ে মোকাবিলা করতে আসব না। মেহেরবানি করে কোনো ধরনের ট্যাগিং, কোনো ধরনের প্রোপাগান্ডা, কোনো ধরনের মিথ্যাচার দিতে আসবেন- তাদের আমরা ফ্যাসিজমের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করব।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবিরের সাথী ভাইদের সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে তৈরি করতে হবে। যিনি যে লেভেলে আছেন তার অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট সামনের দিনে অবশ্যই অবশ্যই ভালো হতে হবে। যারা অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট ভালো করতে পারবে না, ছাত্রশিবিরের সঙ্গে আপনি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেন। ছাত্রশিবির তার ক্যাম্পাসে, তার ক্লাসরুমে ও তার শিক্ষকের কাছে সবচেয়ে ভালো হতে হবে।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি সিফাত উল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ, রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. কেরামত আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন, রাজশাহী মহানগর শিবিরের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন, গোলাম মর্তুজা, তৌহিদুর রহমান সুইট, জসিম উদ্দিন সরকার, হাফেজ খাইরুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন প্রমুখ।