স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাহার দাবি ইউট্যাবের
মানব কথা: গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার নির্মম পতনের পর অন্তর্বর্তীকালিন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালিন সরকার গঠনের কিছুদিনের মাথায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে রহস্যে ঘেরা অভিহিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ছাত্রজনতার মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তিনি দেশের ছাত্রজনতার রক্তের সঙ্গে বেঈমানি এবং বিশ্বাসঘাতকা করেছেন। অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার পূর্বক ক্ষমা চাইতে হবে এবং পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় দেশের ছাত্রজনতা বসে থাকবে না।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা খুবই রহস্যময়। এ বিষয়ে ছাত্রজনতার মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তা প্রশমিত করা কঠিন হয়ে পড়বে যদি না উপদেষ্টা তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। আমরা মনে করি শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনা তাদের শাসনামলে বাংলাদেশের জনগণকে দুঃশাসন ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। বিশেষত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার একের পর এক গণহত্যা চালিয়েছে। গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দলদাস পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেয়। তাদের গুলিতে সহস্রাধিক ছাত্র-জনতার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হয়েছে। অসংখ্য ব্যক্তি বুলেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত। অনেকেই এখনও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। অনেকেই চোখ হারিয়েছেন। চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নজিরবিহীন গণহত্যা চালিয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার। সবকিছু উপেক্ষা করে ছাত্রজনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এখন তাদের রুখে দেওয়ার উপযুক্ত সময়।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত গণহত্যাকারী ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে আবারও সংগঠিত হওয়া এবং শেখ হাসিনার ভালো থাকার আহ্বান জানিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ছাত্রজনতার বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অগণিত শহীদ ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেঈমানি করছেন। এখনো রাস্তায় শহীদের রক্তের দাগ শুকায়নি। এর মধ্য দিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাখাওয়াত হোসেক কী ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের বিশেষ কোনো অ্যাজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তার বক্তব্যে আমরা হতবাক। তিনি অবিশ্বস্ততার পরিচয় দিচ্ছেন বলে আমরা মনে করি। তার এখানেই থামা উচিত।