বিদায়ী ভাষণে গণতন্ত্রের সামনে বিপদ: বাইডেন
মানব কথা: ডেমোক্র্যাটদের ন্যাশনাল কনভেনশনে (ডিএনসি) বলতে ওঠার পরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চোখে পানি। বললেন, গণতন্ত্রের সামনে বিপদের কথা।
বাইডেন যখন বলতে ওঠেন, তখন ডিএনসিতে যোগ দেয়া দলের সমর্থকরা বলতে থাকেন, ‘থ্যাংক ইউ বাইডেন।’
তাদের হাতে ছিল পোস্টার। তাতে লেখা ‘লাভ ইউ বাইডেন’। কয়েক মিনিট ধরে চলে এই দলের কর্মীদের এই স্লোগান। আবেগতাড়িত বাইডেনের চোখে পানি চলে এলো। এরপর দলের কর্মীদের কাছে তার বিদায়-ভাষণ শুরু করেন তিনি।
মাসখানেক আগেই বাইডেন ঘোষণা করেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। তিনি চান, কমলা হ্যারিস প্রার্থী হন। তারপর দলের এই সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনের গুরুত্ব হলো, দল যে একজন প্রার্থীকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে, তা দেখানো। এজন্যই এই সম্মেলন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিদায়-ভাষণ দিতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন বাইডেন।
বাইডেন যা বললেন
বাইডেন দেশের গণতন্ত্রের বিপদ সম্পর্কে সবাইকে সাবধান করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের সামনে বিপদ স্পষ্ট। ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন অতি দক্ষিণপন্থীরা উৎসাহিত হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বাইডেন বলেন, ‘ট্রাম্প তো পুতিনের সামনে ঝুঁকে পড়েন। আমি কখনো তা করিনি। কমলা হ্যারিসও করবেন না।’
তার অভিযোগ, ‘ট্রাম্প দেশের জন্য প্রাণ দেয়া সেনার অপমান করেছেন।’
বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। যখন জিতবে, তখনই শুধু বলবে, দেশকে ভালোবাস, এটা হয় না।’
বাইডেন জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণারও কোনো স্থান নেই।’
তার সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নতির পথে একটা অসাধারণ চার বছর সময় আমরা কাটিয়েছি। মর্কিন অর্থনীতি এখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মানুষের রোজগার বেড়েছে। মুদ্রাস্ফীতি কমেছে। ওষুধের দাম কমানো সম্ভব হয়েছে।’
বাইডেন তার প্রশাসনের প্রশংসা করে বলেন, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে প্রকল্পগুলোর রূপায়ণ হয়েছে। তার দাবি, ট্রাম্পের আমলে কোনো কাজই হয়নি।
দীর্ঘ ভাষণের শেষে বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, আমি আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি।’
তার মতে, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলো, যুক্তরাষ্ট্রের আত্মাকে রক্ষা করার লড়াই। সেই লড়াইয়ে তিনি কমলা হ্যারিসের পাশে আছেন।
বিক্ষোভকারীদের প্রসঙ্গে
ডেমোক্র্যাটদের এই সম্মেলন যেখানে হচ্ছে, তার কাছে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ দেখান। তারা একটি প্রতিরোধ ভেঙে ঢুকে পড়েন। পুলিশ কিছু মানুষকে গ্রেফতার করে।
বাইডেন বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের কথায় একটা যুক্তি আছে। দু’পক্ষেই প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছে।’
ধন্যবাদ জানালেন হ্যারিস
কমলা হ্যারিস এর আগে বলেন, তিনি বাইডেনের প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবেন।
কমলা বলেন, ‘আমি আমাদের অসাধারণ প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রচার শুরু করতে চেয়েছিলাম। তার ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও সারাজীবন ধরে দেশসেবার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে