সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন আর মেনে নেব না: নাহিদ ইসলাম

মানব কথা: সীমান্তে বিএসএফের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা বিএসএফের আগ্রাসী আচরণ আর মেনে নেব না। যদি সীমান্তে আর কোনো আগ্রাসন চালানো হয়, আমাদের ভাইদের ওপর হত্যাচেষ্টা চালানো হয়, তবে আমরা সীমান্তে লংমার্চ ঘোষণা করবো। আমরাই আমাদের সীমান্ত রক্ষা করবো।’
রোববার (৬ জুলাই) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের জুলাই আন্দোলনস্থল শান্তি মোড় থেকে বের হওয়া জুলাই পদযাত্রা শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমাদের সীমান্তের প্রতিরোধের প্রতীক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ মানে সীমান্তে কাস্তে হাতে বসে থাকা সেই কৃষক। আমরা সেই কৃষকের সন্তান, যারা বুলেটের সামনে বুক পেতে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক বৈষম্যের শিকার। শিক্ষা ও চিকিৎসায় বৈষম্যের শিকার। আমরা এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, যে বাংলাদেশে কোনো আঞ্চলিক বৈষম্য থাকবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখায়।’
এনসিপি গত ১ জুলাই থেকে বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করছেন। পদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে আজ রোববার দলটির নেতাকর্মীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ এসে পৌঁছায়। পদযাত্রাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহরের শান্তির মোড় এলাকা থেকে শুরু হয়ে বাতেন খাঁ মোড়, নিমতলা মোড়, বড় ইন্দারা মোড় প্রদক্ষিণ করে কলেজ চত্বর এসে শেষ হয়। পদযাত্রা শেষে কলেজ চত্বরের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাহিদ এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা নিয়ে আমরা আপনাদের কাছে এসেছি। যে বার্তা ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখায়। যে বার্তা একটি বৈষম্যহী সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখায়। আমরা সে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, চিকিৎসায় বৈষম্যের শিকার হয়ে আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সমস্যার কথাগুলো শুনতে এসেছি। আমরা জানি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী, কিন্তু আমকে শিল্পে পরিণত করতে, রপ্তানি করতে কোনো সরকারই উদ্যোগ নেয়নি। আমরা জানি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেশম শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এই রেশম শিল্প দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কোনো ধরনের উদ্যোগই নেওয়া হয় নাই। বাংলাদেশের যে জাতীয় শিল্প রয়েছে, কুটির শিল্প রয়েছে সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’
স্বৈরাচার হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই শহীদের কথা উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘শহীদেরা যে স্বপ্নের দেশ গড়ার জন্য জীবন দিয়েছিল, আমরা যেন সে স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ করতে পারি। নতুন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য তারা জীবন দিয়েছে। শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন আমাদের দায়িত্ব। আমরা তা খেয়ানত করতে পারবো না।’
এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘসময় আপনারা আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। নতুন বাংলাদেশে আমরা আর কোনো রাজনৈতিক বৈষম্য দেখতে চাই না। নতুন এই বাংলাদেশকে নতুন কায়দায় পরিচালনা করার জন্য অবশ্যই একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।’