সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে সেনবাহিনী

মানব কথা: ‘এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা পাইনি। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করব।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা পায়নি সেনবাহিনী। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে সেনবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো: শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠকের পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। যেহেতু সেনাবাহিনী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে সেহেতু সেনাবাহিনী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না প্রশ্ন করা হলে কর্নেল মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা পাইনি। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করব।’
মব ভায়োলেন্সকে সেনাবাহিনী কিভাবে দেখছে। মব ভায়োলেন্স কি বেড়েছে নাকি কমেছে নাকি নীরবে চলছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মব ভায়োলেন্স কিংবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যেকোনো পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা মব ভায়োলেন্স অনেকাংশে কমিয়ে নিয়ে এসেছি। রংপুরের ঘটনাটিতে যে মব ভায়োলেন্স ঘটেছিল সেখানে সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে উপস্থিত হওয়ার কারণে সেই পরিস্থিতিটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল।’
ঈদুল আজহা কেন্দ্রিক কার্যক্রমে সেনাবাহিনী কতটুকু সন্তুষ্ট জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ঈদুল আজহার সময় সেনবাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ বাস ও রেলস্টেশনে এবং লঞ্চ টার্মিনালে দিন-রাত সার্বক্ষণিক টহল দিয়েছেন। এছাড়া স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে বাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আমাদের পুরুষ অফিসারদের পাশাপাশি নারী অফিসার ও সৈনিকরা রাস্তায় নেমে নির্দ্বিধায় ঈদের সময় অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে। আমরা ১২৫৫টি গাড়ি থেকে ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা যাত্রীদের ফেরত দিতে সক্ষম হয়েছি। এই সকল কিছুই সম্ভব হয়েছে আমাদের সেনাবাহিনী সার্বক্ষণিকভাবে দেশের মানুষের পাশে কাজ করার চেয়ে ইচ্ছা, প্রবণতা, সিনসিয়ারিটি, সততা এবং হার্ডওয়ার্কের জন্য সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ঈদের তুলনায় এই বছরের ঈদে মৃতের সংখ্যা এবং গুরুতর আহতের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছি।’
জাতীয় পতাকা বিক্রির সময় এক ব্যক্তিকে পেটানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা জানেন এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল ম্যাচ ছিল। সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য যতটুকু করার প্রয়োজন ছিল তা করা হয়েছে। এটি একটি দুঃখজনক ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল। তবে পরবর্তী সময়ে আমরা ওই পতাকা বিক্রেতাকে ডেকে সমবেদনা প্রকাশ করি। এছাড়া তার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়। যাতে করে তিনি তার ব্যবসাটাকে সফলভাবে চালিয়ে যেতে পারে।’
ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত থেকে পুশইনের বিষয়ে সেনাবাহিনী প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সতর্ক এবং সজাগ আছে। সীমান্ত এলাকায় তারা টহল বৃদ্ধি করেছে। সেসব জায়গায় স্থায়ী এবং অস্থায়ী ক্যাম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ওইসব এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বিষয়ে সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মতো বিষয় এখনো অনুভূত হয়নি সে কারণে তাই বিষয়টি বিজিবি ও কোস্ট গার্ড দেখছে।’
সম্প্রতি অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। এই ধরনের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কোনো তালিকা করা হয়েছে কি না আর হয়ে থাকলে এই বিষয়ে সেনাবাহিনী কি ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী বা যেকোনো সন্ত্রাসী গ্রেফতারের সময় যে আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এক্ষেত্রে আমরা গোপনীয়তা রক্ষা করি। পরবর্তী সময়েও আমাদের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’