হাসানুল হক ইনুর আত্মীয়ের নেতৃত্বে চলছে নাশকতার প্রশিক্ষন

মানব কথা: রাজধানীর বসুন্ধরাআবাসিক এলাকা যেন নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামীলীগারদের অভয়াশ্রমে পরিনত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার আওয়ামীলীগ,যুবলীগ, স্বেচ্ছা সেবক লীগ, ছাত্র/শ্রমিক/কৃষক লীগ নেতা বা কারছুপির ভোটে পাশ করা উপজেলা চেয়ারম্যান; পৌর মেয়র যারা ৫ আগষ্টে ভারতে পালিয়ে যেতে পারেন নি, তাদের সিংহ ভাগই গত এক বছরের বেশির ভাগ সময়ে এই বেসরকারি আবাসিক এলাকায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিলেন। প্রথমে কয়েক মাস তারা একটু জন সমাগম এড়িয়ে চলতেন, মোবাইল ফোনের সিম পালটে বেনামে সিম নিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। কিন্তু এখন তারা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন। পনের বছরে জনগনের টাকা মেরে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া তথা কথিত লীগনেতারা এখন গচ্ছিত সম্পদে আয়েশী জীবন কাটাচ্ছেন। এরা সবাই বিলাস বহুল ফ্ল্যাটে স্বভাব সুলভ ভাবে সারা রাত লাল পানি, সুন্দরী বান্ধবী নিয়ে ফূর্তি করে বেশ বেলা করে ঘুম থেকে উঠেন। এরপর সন্ধ্যা নামতেই নামি দামী ক্যাফে ও রেস্তোতা গুলোতে আওয়ামীলীগাররা সাবেক ও বর্তমান আমলাদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠেন। এসব আড্ডার অধিকাংশই থাকে কন্ট্রাক্ট মিটিং, যেখানে মাঝে মধ্যে স্যারদের খেদমতে সোসাইটি গার্লদের হাজির করা হয়। বেগম পাড়ার কারনে যেমন কানাডায় আবাসনের দাম বেড়ে গেছে তেমনি, বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক এসব আওয়ামীলীগারদের জন্য বসুন্ধরাআবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম আকাশ চুম্বি হয়েছে। এমনকি বাসা ভাড়াও উচ্চ-মধ্যবিত্তের নাগালের বাহিরে চলে গেছে। এই আওয়ামী দূর্বৃত্তরা এখানে বসে নাশকতা সৃষ্টি করে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টির পায়তারা করছে। এদের একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসানুল হক ইনুর ভাগ্নি জামাই সাইফুল ইসলাম টিপু ওরফে টিপু মল্লিক। টিপু মল্লিক ২০২৪ এর উপজেলা নির্বাচনে ঝিনাইদহ জেলার হরিনা কুন্ডু থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। টিপু মল্লিক এর বাবা ঝিনাইদহ জেলায় কুখ্যাত ডাকাত সরদার তথা সর্বহারা নেতা ছিলেন। তিনি হিন্দুর সম্পত্তি দখল করে মল্লিক টাইটেল ধারন করেন। টিপু মল্লিক নিজেও সন্ত্রসীদের গড ফাদার। তিনি ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের ১৫ বছর মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির আহবায়ক আশফাক মাহামুদ জনের পৃষ্ঠ পোষক। এই জন ২৪ এর জুলাই এ ছাত্র-গণ হত্যায় সরাসরি জড়িত। জন তার ক্যাডার বাহীনি নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আরাপপুর, কেসি কলেজ সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে জুলাই যোদ্ধাদের হত্যা করেছে। জন নিজে ভারতীয় ‘র’ এর থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সাথে যুক্ত। তিনি উদীচী শিল্প গোষ্ঠী সহ দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েমের ভারতীয় সফট পাওয়ার সংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ, বাঙ্গালিয়ানার নামে হিন্দুত্ববাদ কায়েম; শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা, ইসলাম বিদ্বেষ ও জঙ্গী ট্রাম্প কার্ড খেলার দেশীয় ও ভারতীয় দোসরদের ভরসার পাত্র ছিলেন। বিএনপি-জামাত অধ্যুষিত জেলা হিসাবে যুবলীগ নেতা আশফাক মাহামুদ জনকে শেখ হাসিনা ইসলাম কোপানোর আইসেন্স দিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের তঞ্চকতা পূর্ন নির্বাচনের পরে সারা দেশে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তা দমনে ভারতীয় কমান্ডোদের সাথে ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরায় বিএনপি ও জামায়েত এর নেতা কর্মীদের হত্যায় অংশ নেন। ২০১৮ এর নির্বাচনের আগে ও পরে, তিনি রাতের বেলা গুম-খুন -ক্রস ফায়ারে আইন শৃংখলা বাহীনির সাথে অংশ নেন। টিপু মল্লিকের আরেক হাতিয়ার আবু সাঈদ। এই আবু সাঈদ আবার সদরের আওয়ামী এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকীরও খুব স্নেহ ভাজন। আবু সাঈদ এক জন পেশাদার খুনি। তিনি যাকে ইচ্ছে যখন তখন ডেগার মেরে দেন। এই দুজনের ছত্রছায়ায় আবু সাঈদ , জেলা স্বচ্ছা সেবক লীগের সাধারন সম্পাদক বনে যান। টিপু মল্লিক নিজে আওয়ামীলীগের ‘বি’ টিম বাম ঘরানার ছার মৈত্রীর সাথে যুক্ত ছিলেন। তার স্ত্রী লিপি, ১৪ দল নেতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর আপন ভাগ্নি। টিপু মল্লিক নিজেও ‘র’ এর প্রশিক্ষিত ক্যাডার । তিনি প্রায় প্রতি বছর ভারতে গিয়ে তালিম নিয়ে আসতেন। ৫ আগস্টের পরে এই ডাকাত সরদারের ছেলে তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। তার ডি ব্লকের বাসায় এদের আশ্রয় দেন। জন ও টিপু দক্ষিনাঞ্চল থেকে ভাড়াটে খুনি এনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর সহ নানা জায়গায় ডাকাতি, ছিনতাই করান। এরা দিনের বেলা বসুন্ধরায় লুকিয়ে থেকে রাত হলে মিরপুর চলে যেতেন। জন মিরপুর ২ এ ঈদগাহ মাঠের কাছে গোপন আস্তানায় দীর্ঘদিন লুকিয়ে থেকে সরকার বিরোধী কার্যক্রম করে যাচ্ছিলো। সম্প্রতি জন মিরপুর থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। টিপু মল্লিক, তার মামা শশুর ইনুর সাথে নানা ভাবে যোগাযোগ কেরে চলেছেন। তিনি তার আপাকে ফিরিয়ে আনার স্বপ্নে বিভোর। ভাড়াটে খুনি আবু সাইদ সহ চল্লিশ জনের একটি গ্যাং তিনি তৈরি করেছেন , যাদের কাজ হলো মব তৈরি করে সরকারের উপর দায় চাপানো। আইনশৃংখলা পরিস্থির ভয়ানক অবনতি ঘটিয়ে দেশে আরেকটি ১/১১ এর পরিবেশ তৈরি করা তাদের উদ্দেশ্য। আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বের করতে তিনি অর্থায়ন করছেন। এরা জনমত ও আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে এরা এখনো বুক ফিরিয়ে চলা ফেরা করছে। মামলা হলেও তাকে নাকি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী খুজে পায় না। এরকম আরও অসংখ্য ভয়ঙ্কর আওয়ামী খুনি অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যা দেখে ২৪ এর জুলাই শহীদদের আত্মা কষ্ট পাচ্ছে। এরকম আরও ফ্যাসিস্ট এর দোসরদের বিরুদ্ধে আমাদের কলম চলবে, আহত-নিহত তরুন তুর্কিদের প্রতি এ আমাদের অঙ্গীকার।