মার্কিন কংগ্রেসে ওয়ার্ক ভিসা প্রকল্প সংক্রান্ত নতুন বিল

মানব কথা: মার্কিন কংগ্রেসে নতুন বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এতে করে লাখ লাখ ভারতীয় শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।
বুধবার (০৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দ্য ইকোনেমিকস টাইমস জানিয়েছে, মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপিত একটি নতুন বিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য চালু থাকা গুরুত্বপূর্ণ অপশনাল প্রাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) প্রোগ্রামকে বিপদের মুখে ফেলেছে। এই প্রস্তাব ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। কারণ প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তে সরাসরি প্রভাবিত হতে পারেন।
ওপিটি প্রোগ্রাম আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের—বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) শিক্ষায় অধ্যয়নরতদের—স্নাতক শেষ করার পর যুক্তরাষ্ট্রে তিন বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ দেয়। এটি শুধু চাকরি পাওয়ার সুযোগই নয়, অনেকের জন্য বড় অঙ্কের শিক্ষাঋণ পরিশোধের মাধ্যমও।
ওপের ডোরস ২০২৪-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ওপিটি প্রোগ্রামে ৯৭ হাজার ৫৫৬ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৪১ শতাংশ বেশি। বিলটি পাস হলে, এই শিক্ষার্থীরা স্নাতকের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে বাধ্য হবেন, যা তাদের ক্যারিয়ার ও আর্থিক নিরাপত্তা উভয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি খুঁজে এইচ-১বি ওয়ার্ক ভিসায় রূপান্তরের চেষ্টা করছেন। তবে এ ভিসা পাওয়া অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ। প্রতি বছর সীমিত সংখ্যক ভিসা দেওয়া হয়। অনেকেই ইতিমধ্যেই বড় প্রযুক্তি কোম্পানিতে আবেদন করছেন, সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
ইমিগ্রেশন আইনজীবী ও লকুয়েস্টের প্রতিষ্ঠাতা পূরবী চৌথানি জানান, ওপিটি শিক্ষার্থীদের এক বছরের কাজের সুযোগ দেয় এবং এসটিইএম ডিগ্রিধারীদের জন্য আরও দুই বছর বাড়ানো যায়। তবে নতুন বিলটি পাস হলে, এই সুবিধা বাতিল হবে এবং শিক্ষার্থীরা স্নাতকের পরই যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগে বাধ্য হবেন।
বিলটির সম্ভাব্য পাসের কারণে বহু ভারতীয় শিক্ষার্থী তাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটির ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন, যাতে দেশে ফিরে আর যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার অনুমতি না হারান। কর্নেল, কলম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের অনানুষ্ঠানিকভাবে দেশে না ফেরার পরামর্শ দিয়েছে।
প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, এই বিলটি বর্তমান প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে কঠোর ভিসা নিয়ন্ত্রণ ও বড় আকারে অভিবাসী বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি এই ধরনের পদক্ষেপকে উস্কে দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।