বাঁকখালী নদীর তীরে শীঘ্রই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হবে : ড. সাখাওয়াত হোসেন

মানব কথা: নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি বাঁকখালী নদী এ জেলার প্রাণ। নদীর পুরোনো চিত্র দেখেছি। বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হলো দখল-দূষণে প্রায় মুমূর্ষু অবস্থা। আমরা নদীবন্দর করবো, আর দখলকারিরা নদীর তীর দখল করে অট্টালিকা বানাবে, এটাতো হতে দেওয়া যায় না। নৌ-মন্ত্রণালয় উচ্ছেদের বিষয়টি দেখবে, আর পরিবেশ মন্ত্রণালয় দেখবে পরিবেশ বিষয়ক ক্ষতিপূরণ। যথা শিগগির এ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে বাঁকখালীর প্রাণ রক্ষা করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজারের বদরমোকাম এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরে দখল হয়ে যাওয়া কস্তুরাঘাট এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন শহরের বদরমোকাম মসজিদ সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট পর্যবেক্ষণে আসেন। তারা নবনির্মিত কক্সবাজার-খুরুশকুল ব্রিজ ও আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরিবেশবিদদের মতে, প্রায় প্রতিদিনই প্রভাবশালীদের নগ্নথাবায় বাঁকখালীর নদীর তীরে কোথাও না কোথাও পাকা দালান ঘর উঠছে। প্রশাসনের সীমাবদ্ধতার অযুহাত এবং আইনি জটিলতায় বেপরোয়া দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকটা অভিভাবকহীন জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ নদী। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার সত্ত্বেও শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীর তলদেশ ভরাট চলছে। নদীর জায়গা দখল ও প্যারাবন ধ্বংস করে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা। মাঝে মাঝে জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও পরবর্তীতে তা আবারও তৈরি হয়। একসময় নৌপথে শহরের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র কস্তুরাঘাট এখন বিশাল আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে।
দীর্ঘদিনের এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আজ বৃহস্পতিবার বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটসহ বিভিন্ন অংশ সরেজমিন পর্যবেক্ষণে আসেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন।
বাঁকখালী ও অন্য নদীর তীর দখল বিষয়ে একই দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় দুই উপদেষ্টা জেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, জেলা পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
বৈঠকে কক্সবাজার নদী বন্দরের অবৈধ দখল-দূষণ রোধ, নদীবন্দরের সীমানা পিলার স্থাপন, ড্রেজিংয়ের বিষয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে নৌপরিবহন উপদেষ্টার একান্ত সচিব জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত উপদেষ্টার সফরসূচিতে উল্লেখ করেন।
অপরদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ও বিআইডব্লিউটিএর ২০২৩-২০২৪ সালের পৃথক প্রতিবেদন বাঁকখালী নদী দখলে জড়িত ১৩১ জনকে চিহ্নিত করেছিল। আজকের বৈঠকে তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত আসে তা নিয়ে কৌতূহল কক্সবাজারের সচেতন মহলে। এরমধ্যে কস্তুরাঘাট সংলগ্ন নির্মিত খুরুস্কুল সেতুর আশপাশ ঘিরে দখলে জড়িত আরও ৫০ জনের মাঝে ২৩ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলাও দায়ের করেছে।
এদিকে, বাঁকখালী নদী পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে চলাচল শুরু করা সী-ট্রাকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন। ৬নং জেটি ঘাট দিয়ে উদ্বোধন করা সী ট্রাকে মহেশখালী গেছেন উপদেষ্টা। সেখানে সুধী সমাবেশে তিনি বক্তব্য রাখেন।৷