হোলি আর্টিজানে হামলা: ৭ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

মানব কথা: প্রায় নয় বছর আগে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মামলায় নব্য জেএমবির সাত সদস্যকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, সেই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
১৭ জুন মঙ্গলবার ২২৯ পৃষ্ঠার এ পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এ মামলায় বিচারিক আদালত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। পরবর্তীতে মৃত্যুদণ্ডাদেশের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স), আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘‘আলোচ্য হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনার ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আপিলকারী আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি।’’
হাইকোর্টের দেয়া রায়টি বাংলায় লিখেছেন বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং এতে সহমত পোষণ করেন বিচারপতি সহিদুল করিম।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন: রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন এবং শরিফুল ইসলাম খালেদ।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে এবং কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ইতালির নয়জন, জাপানের সাতজন, ভারতের একজন এবং বাংলাদেশি তিনজন ছিলেন। এ ছাড়া ওই রাতে অভিযানে অংশ নিতে গিয়ে জঙ্গিদের বোমা হামলায় প্রাণ হারান পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর সাত আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরে মামলাটি হাইকোর্টে আসে এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডে রায় পরিবর্তন করা হয়।