মিয়ানমারে বৌদ্ধ মঠে ভয়াবহ বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২৩

সময়: 10:59 am - July 12, 2025 |

মানব কথা: মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে একটি বৌদ্ধ মঠে জান্তা সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চার শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রতিরোধ যোদ্ধা ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ১টার দিকে সাগাইং অঞ্চলের লিন তা লু গ্রামে এই হামলা চালানো হয়। অঞ্চলটি মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।

স্থানীয় একটি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর এক সদস্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানান, একটি সামরিক জেট বিমানের নিক্ষিপ্ত বোমা ওই বৌদ্ধ মঠে আঘাত হানে, যেখানে চলমান সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছিলেন দেড় শতাধিক সাধারণ মানুষ।

তিনি বলেন, এই হামলায় অন্তত ২৩ জন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৪টি শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন ৩০ জনের মতো, যাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এ হামলা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। অতীতে তারা দাবি করে আসছে, তারা কেবল ‘বৈধ হুমকি’র জবাবেই হামলা চালায় এবং প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে।

এই হামলার আগে ওই এলাকায় কয়েক সপ্তাহ ধরে সামরিক বাহিনীর বড় আকারের অভিযান চলছিল। প্রতিরোধ গোষ্ঠীর দাবি, হামলার মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে সেনাবাহিনী ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে আক্রমণ চালাচ্ছিল। এই হামলাগুলোর লক্ষ্য ছিল প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দখলে থাকা এলাকাগুলো পুনর্দখল করা।

লিন তা লু গ্রামে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের অধিকাংশই আশপাশের গ্রাম থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে সহিংসতা এবং বাস্তুচ্যুতি বেড়েই চলেছে।

বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)-এর মুখপাত্র নেই ফোন লাত জানান, বছরের শেষদিকে অনুষ্ঠেয় কথিত নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী প্রতিরোধশক্তিকে দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সেনা সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

সাগাইং অঞ্চল মিয়ানমারে প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। সামরিক জান্তা এই অঞ্চলে বারবার বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে প্রতিরোধ যোদ্ধারা এসব হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারছে না।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ধরনের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে আসছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর