জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা আরো ২টি জিনিস বেশি পাবে : ডা. শফিকুর রহমান

সময়: 2:03 pm - January 25, 2025 |

মানব কথা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চায় উল্লেখ করে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তার দল ক্ষমতায় গেলে নারীরা এখন যা পাচ্ছেন, তার থেকে আরো দু’টি জিনিস বেশি পাবেন।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তারা মনে করেছিল জামায়াতের কর্মীদের গুম-খুন করে মাটির নিচে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু আজ তারা কই? তারা নিজেরাই পালিয়ে গেছে। তারা কথায় কথায় আমাদের অন্য দেশে চলে যেতে বলত, তারাই এখন দেশের বাইরে। জুলুম করলে এই পরিণতিই ভোগ করতে হয়। জুলুমকারীদের পালিয়েই যেতে হয়।’

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে দিনাজপুর জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, ‘অনেকে বলে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা আর বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। কিন্তু আজ দেখেন, এই সমাবেশে এক পাশে পুরুষ, আরেক পাশে হাজার হাজার নারী। আমরা বলি, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা এখন যা পাচ্ছে এর সাথে আরো দুটি জিনিস নিয়ে চলাফেরা ও কাজ-কর্ম করবে। আর তা হলো- সম্মান ও নিরাপত্তা।’

তিনি বলেন, “দেশে প্রতিটি খুন, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও ঘুষের বিচার হতে হবে। না হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমাদের কলিজার টুকরা ছাত্ররা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিয়ে এই দেশকে মুক্ত করেছেন, আমরা তাদের সাথে আছি। আমরা তরুণদের হাতে দেশ তুলে দিতে চাই।’

ভারতকে উদ্দেশ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘বাংলাদেশকে তারা গোলাম বানাতে চেয়েছিল। আর শেখ হাসিনা তাদের অ্যাজেন্ট। তাই তারা শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত পলাতক সরকার আমাদের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে পাঁচজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। এই দিনাজপুরের একজন বিচারক বলতেন, তিনি নাকি শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। কিন্তু আমরা বলি তিনি শপথ ভঙ্গকারী বিচারপতি। তার বিরুদ্ধে এ কারণেই ফৌজদারি মামলা হতে পারে।’

শাপলা চত্বরে হেফাজতের আলেম-ওলামাদের হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা বলে শাপলা চত্বরে নাকি কোনো আলেমকে হত্যা করা হয়নি। সেখানে নাকি আলেমরা রং ছিটিয়ে দিয়েছেন। কতটা নির্লজ্জ হলে একজন প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলতে পারে!’’

‘তারা (আওয়ামী লীগ) দেশের বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বাধা দিয়েছে। তারা নিজেরাও কিছু করেনি, আমাদেরও করতে দেয়নি,’ বলেন তিনি।

হিন্দু ধর্মের লোকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুজন মানুষ বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এমন একটা বাংলাদেশ চাই যেখানে আতঙ্ক থাকবে না। নির্বাচনের পর আর হামলা-মামলা হবে না। আমরা সনাতন ধর্মের মানুষ আতঙ্ক মুক্ত থাকতে পারব। আমি তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা এমন একটি দল খুঁজেন যারা আপনাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে। একটু বিবেক দিয়ে খুঁজলেই পাবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘রংপুরের পীরগঞ্জে গরু চুরি করে, জমি দখল করে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দিয়ে কোনো তদন্ত ছাড়াই শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বললেন জামায়াত অগ্নিসংযোগ করেছে। কিন্তু দু’দিন পরই জুলুমের শিকার হিন্দুরা বললেন, এখানে জামায়াতরা আসেনি।’

দিনাজপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাদ্দিস ড. এনামুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ইউনিট সদস্য দিনাজপুরের সাবেক জেলা আমির আফতাব উদ্দীন মোল্লা, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ, সাবেক জেলা আমির আনোয়ারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম, জামায়াত নেতা মাওলানা মুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট মাঈনুল আলম, বিরল উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা আফজালুল আনাম, সাবেক ছাত্রনেতা মতিউর রহমান, দিনাজপুর শহর আমির সিরাজুস সালেহীন, সেক্রেটারি কামরুল হাসান রাসেল, নিতাই দেব নাথ প্রমুখ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর