আগামী রোজার আগেই নির্বাচন চায় জামায়াত

মানব কথা: ঢাকায় সফররত মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বুধবার দুপুরে গুলশানে মার্কিন ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন, অর্থনৈতিক নীতি, পররাষ্ট্রনীতি, নারী ও শ্রমিক অধিকার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, এবং আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এবং জামায়াতের অবস্থান প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “তারা জানতে চেয়েছেন, সব রাজনৈতিক দলের অবস্থান কী, আমরা কী চাই। আমরা বলেছি, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি। আমরা চাই, আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন সম্পন্ন হোক। জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করলে বর্ষা ও দুর্যোগের কারণে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।”
জামায়াত নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলকে জানান, দল হিসেবে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা স্মরণ করিয়ে দেন যে, এরশাদ সরকারের সময়েও জামায়াত নির্বাচন অংশ নিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। ডা. শফিক বলেন, “আমরা তাদের অনুরোধ করেছি, এই শুল্ক পুনর্বিবেচনা করা হোক। সরকার থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার হাত বাড়াবে।”
তিনি আরও জানান, “আমরা নিজেদের একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে পরিচয় দিয়েছি, দলীয় কাঠামোর ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা করি এবং দেশের ক্ষেত্রেও তা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি।”
আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “এখনো অনেকে আহত, শহীদের পরিবার এখনো কষ্টে। তাই আওয়ামী লীগের বিচার প্রয়োজন। তবে আমরা চাই, সেটা হোক ন্যায়বিচারভিত্তিক।”
বৈঠক শেষে জামায়াত আমির জানান, এটি ছিল মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তাদের দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক। তারা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন।
ডা. শফিকুর রহমানের ভাষায়, “আমরা একটি ক্রান্তিকালে আছি। সবাই মিলে এই দেশটাকে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।”