আগামী ডিসেম্বরের মধ্য নির্বাচন হতে হবে : তারেক রহমান

মানব কথা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে দেখা করে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্য নির্বাচন হতে হবে।
রোববার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউট মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’র (এনপিপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। এই জন্য আমরা যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম তারা সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। সুতরাং দেশে-বিদেশে সম্মানিত দক্ষ-যোগ্য ব্যাক্তি ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের নেতৃত্বে জনগণ দেশের ইতিহাসে একটি অবাধ-সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দেখতে পারবে।
বাংলাদেশের পক্ষের ও গণতন্ত্রের পক্ষের প্রত্যেকটি শক্তি ও দলের মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ করে রাজনৈতিক গুণগত পরিবর্তনের জন্য দরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার। সময়ের প্রয়োজন পুঁথিগত অর্থাৎ সাংবিধানিক সংস্কার। অল্প কিংবা বেশি বলে কোনো সংস্কার নেই, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
প্রয়োজনীয় সংস্কার বেশি জরুরি বলে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান সংবিধানের ৬৫ -এর ২ অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করে ২০১৪-১৮-২৪ নির্বাচনের নামে প্রহসন চালিয়েছিল। সংবিধানে জনগণের ভোটের অধিকার দেয়া থাকলেও সেটির কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। ফ্যাসিবাদ কায়েম করে জনগণকে সারাদেশে অসহায় ও ক্ষমতাহীন করে রাখা হয়েছিল। রাষ্ট্রের স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ রুখে দিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। জনগণের ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে অবশ্যই সেই পুঁজি জনগণের কাছে জবাবদিহি তা করতে বাধ্য। দেশে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষ থেকে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না। সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে না পারলে ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো নিজের অজান্তেই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের উপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক বৈধতার হয়তো সঙ্কট নেই। তবে অবশ্যই এ সরকার জনগণের কাছ জবাবদিহিমূলক নয়। যেহেতু সরকার জবাবদিহিমূলক নয় সেই নৈতিক কারণে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। জনগণকে অন্ধকারে ও রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা কার্যকর হয় না, হবে না।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাজেটের ঘোষণার আগ মুহূর্তে সরকার হঠাৎ করে এনবিআর-এর সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে একটি অচল অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য খুব ভালো বিষয় নয়। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জবাবদিহি গণতান্ত্রিক সরকার বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে বলে সকলে বিশ্বাস করে।
তিনি বলেন, দেশে স্থিতিশীল-গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় একদিকে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অন্যদিকে, রাজনীতিক অস্থিরতা নিয়ে নানা শ্রেণির মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর মধ্যে কোনো কোনো দিক দিয়ে বিরোধ দৃশ্যমান হলেও দেশে ও জনগণের স্বার্থে ফ্যাসিবাদ উত্থান মোকাবেলায় এক তরফা ইস্যুতে বাংলদেশে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিগত ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধ হবে। এই দৃঢ়তা প্রকাশ করেন তারেক রহমান।