তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার রিভিউ শুনানি দ্রুত চায় সকল রাজনৈতিক দল

সময়: 9:56 am - August 21, 2025 |

মানব কথা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে করা রিভিউ আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সব রাজনৈতিক দল আপিল বিভাগে আবেদন জানিয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির তারিখ আগামী মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নির্ধারণ করেছেন আদালত।

আইনজীবী শিশির মনির এদিন আপিল বিভাগকে বলেন, সামনে কোর্টে বড় ছুটি থাকবে, কিন্তু একটা বিষয়ে সমাধান প্রয়োজন। সেটি হলো তত্ত্বাবধায়কের রিভিউ শুনানি এখনো শেষ হয়নি। এটা লিস্টে আসলেও শুনানি হয়নি।

পরে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, আমরা তো সর্বোচ্চ লিভ দিতে পারব শুনানি শেষ করতে পারব না। এ সময় আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘মাই লর্ড, এটা দিলেই আপাতত কাজ হবে কিছুটা।’ একপর্যায়ে আগামী ২৬ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানির দিন ঠিক করেন আপিল বিভাগ।

২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়। পরে এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের অক্টোবরে একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর আগে, রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি। বদিউল আলম মজুমদার ছাড়াও অন্য চারজন হলেন—তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। পাশাপাশি আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

২০০৮ সালে বাংলাদেশে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন জিতে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়।

এরপর দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি নির্বাচনই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে এবং ব্যাপকভাবে ‘একতরফা’ হিসেবে আখ্যায়িত হয়। কোনোটি ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন’, কোনোটি ‘রাতের ভোটের নির্বাচন’, আবার কোনোটি ‘ডামি নির্বাচন’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী সরকার পতনের পর ভবিষ্যতে সত্যিকারের জনরায়ের ভিত্তিতে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এ বিষয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জনগণ ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে এক অভূতপূর্ব ঐকমত্য গড়ে উঠছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর