কেবল কেষ্টা বেটাই চোর নয়, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবন

সময়: 2:37 pm - August 27, 2025 |

মানব কথা: গত ১১মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে “জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বাণিজ্যিক প্লট বরাদ্দে অনিয়ম, সরকারের ক্ষতি ২০০ কোটি টাকা” শিরোনামে দৈনিক মানব কথায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত করে, ততকালীন চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল বাসির কে ওএসডি করে জনপ্রশাসনে বদলী করা হয়। সুত্রমতে, ঢাকার মিরপুর ৬ নং সেকশনে মেইন রোডে ব্লক-‘ক” ১,২,৩,৪ নম্বর বানিজ্যিক প্লট এবং ব্লক-‘খ’ বাউন্ডারি রোডের ৩৯/১ প্লটটি ২৬৫ তম বোর্ড সভায় পুনর্বাসন প্লট হিসাবে বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৮৬ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত মাফিক বানিজ্যিক প্লট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে দুইটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলাম এর মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। বানিজ্যিক প্লট কে পুনর্বাসন প্লট হিসাবে বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ নেই। বোর্ড মিটিং এ এ সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপনের আগে বিধি মোতাবেক কোন ভূমি বরাদ্দ কমিটির মিটিং হয় নি। কোন প্লটের বরাদ্দ সংক্রান্ত তথ্য বোর্ড সভায় উপস্থাপনের আগে তা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সুপারিশ থাকা বাধ্যতা মূলক। কিন্তু এ কাজে সংশ্লিষ্ট পরিচালক এবং উপপরিচালক ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা সেলিম শাহনেওয়াজ দায় এড়াতে পারেন না। তিনি কি বিদ্যমান আইন কানুন জানেন না?আমরা গোপন অনুসন্ধানে জানতে পেরেছি ফিল্ড থেকে, ”১৮৬ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত মাফিক বানিজ্যিক প্লট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে দুইটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলাম এর মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। বানিজ্যিক প্লট কে পুনর্বাসন প্লট হিসাবে বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ নেই। “ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেয়ার পরেও তিনি পরপর তিন বার একই প্লটের রিপোর্ট দিতে বলেছেন কার স্বার্থে। তাছাড়া বোর্ড সভায় চেয়ারম্যান একা কোন সিদ্ধান্ত নেন না, সেখানে অপরাপর সদস্য এবং মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি থাকেন । তারা এই অবৈধ বরাদ্দে অনাপত্তি না দিয়ে কি অপরাধ করেন নি? অথচ তার কয়েকদিন মাত্র আগে একজন সদস্য (প্ল্যানিং; জানাব খাইরুল ইসলাম) বিতর্কিত গ্রীনফিল্ড স্কুলের বরাদ্দ বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। তা নিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান এর সাথে তার অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরী হয়, ফলে তিনি জাগৃক ছাড়তে বাধ্য হন। তাহলে ২৬৫ তম বোর্ড সভার অপরাপর সদস্যগন দায়মুক্তি পেলেন কিসের বিনিময়ে। কেবল ততকালীন চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল বাসির কে কেষ্টা বেটা বানিয়ে অন্যদের দায় সুকৌশলে কেন আড়াল করা হলো? জাগৃকে এমন দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে লোক দেখানো তদন্ত কমিটি অবশ্য থেমে নেই। এমনই একটি তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি করে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে মিরপুর সেকশন ২ এ অকেজো গাড়ি;মোটরসাইকেল ,জিপ,পিক -আপ ইতাদির নিলাম কারসাজিতে যুক্ত দুই উপবিভাগীয় প্রকৌশলীকে।জনাব মিরাজ হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী, ই/এম ডিভিশন, জাগৃক ,ঢাকার দপ্তর থেকে ২৫.৩৮.০০০০.০০০.৬১২.০১.০১৬.২৫-৩২১ স্মারকে ২১/০৭/২০২৫ খ্রি তারিখে, “মিরপুর ২ নং সেকশনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় গ্যারেজ ও মেরামত কারখানা স্টোরে ও অফিস চত্ত্বরে রক্ষিত অকেজ/ অব্যবহৃত মালামালের সার্ভে রিপোর্টে উল্লেখিত সম্পূর্ন ব্যবহার অনুপযোগী পুরাতন ,মরিচাযুক্ত, ক্ষয় প্রাপ্ত,পরিত্যক্ত, অকেজো মোটর সাইকেল, মাইক্রো (টয়োটা), মাইক্রো (মিটসুবিসি), জীপ (ইসুজু টুপার), জীপ(ল্যান্ড রোভার), কার (টয়োটা), ত্রাক (মার্সিডিস), পিকাপ (টয়োটা), কার (মিটসুবিসি), জীপ (হুইলি), জীপ (মিনিমগ), ট্রাক (অট্রিন) ও যন্ত্রাংশ যেমন-হুজ, ভাল্ব, স্প্রিং,ওয়াসার, বুশ, গ্যাস্কেট, সুইচ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার খুচরা যন্ত্রাংশের স্ক্রাব মালামাল যেখানে যে অবস্থায় আছে এ ভিত্তিতে “ নিলাম আহবান করা হয়। যার জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ০৬/০৮/২০২৫ তারিখ বেলা ১২:৩০ ঘটিকায় এবং উম্মক্ত করনের সময় ছিল একই দিনে ১৫:০০ ঘটিকায়। এই নিলাম প্রক্রিয়ায় পেশী শক্তি প্রয়োগ করে সিন্ডিকেট করা এবং একটি বিশেষ রাজনৈতিকদলের নেতাদের সাথে যোগশাযশে নিলাম ড্রপ করতে বাধা প্রদানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ঊঠে একজন সিভিল ও একজন ইএম উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। অত্যন্ত অল্প সময় দিয়ে তড়িঘড়ি করে একটি তদন্ত করে দোষীদের দায় মুক্তি দেয়া হয়েছে। এই প্রযুক্তির যুগে যেখানে সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো থাকে, সেখানে পাগল না হলে কেউ সশরীরে গিয়ে বাধা প্রদান করেনা। মোবাইল ফোনে দুর্বৃত্তদের নির্দেশ দিয়ে নিজে দূরে বসে থাকবে। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে খুব সহজেই বের করা যায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি কার কার সাথে মোবাইলে ও হোয়াটস অ্যাপে কথা বলেছেন, নিলামের এক সপ্তাহ আগে থেকে তাদের মোবাইল ট্রাক করে তারা কোন রাজনৈতিক নেতার কার্যালয়ে গিয়েছিলেন কিনা তা সনাক্ত করা যায়। এরকম প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে তাদের জেরা করলে আসল সত্য বেরিয়ে আসতো। কিন্তু এখানে রয়েছে রহস্যময় কিছু ঘটনা, নিলামে উদ্ধৃতমূল্য পরে হিসাবে গড় মিল দেখিয়ে কোটি টাকার বদলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা জবে মাত্র কয়েক লক্ষ টাকা। আর শুভঙ্করের ফাঁকির কোটির উর্ধে টাকা ৫০:৫০ রেশিও তে ভাগাগাগি হবে। শুনেছি সেই কোটি টাকার ভাগ পাবেন একেবারে টপ-টু-বটম সবাই। আসলে দুধ দেয়া গরুর কদর বেশি বলেই তাকে বাচাতে কর্তৃপক্ষ এত মরিয়া। এই নিলাম একটি ভবিষ্যৎ কারসাজির এসিড টেষ্ট। মিরপুর হাউজিং এস্টেটে যে ৪১ টি বানিজ্যিক প্লট নিলাম হবে সেগুলোও কারসাজি করে বেনামে নেওয়ার জন্য জাগৃক এর সৎ কর্মকর্তাদের জিভ লকলক করছে।জাগৃকের এই ধূর্ত গ্যাং নুরুল বাসিরের মতো কাচা কাজ করবেনা, আমলা-রাজনীতিবীদ-মিডিয়া-আন্ডার ওয়ার্ল্ড সন্ত্রাসী, ভূমি দস্যু সবাইকে নিয়েই খাবে যেন টূ শব্দটাও না হয়। আর ঘটা করে হাসিনার আমলের মতো অফিসের সামনে লেখা থাকবে, “আমি ও আমার অফিস দূর্নীতি মুক্ত”। জাগৃকে সেবা নিতে আসা মানুষের কাছে যা নিষ্ঠুর আস্ফালনের মতো ঠেকবে। আমরা চাই সামনের নিলাম গুলো কোন থার্ড পার্টি কে দিয়ে করলে , যেমন বুয়েট কে দ্বায়িত্ব দিয়ে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে জমা দ্যেয়ার সুযোগ থাকলে পেশী শক্তি ও সিন্ডিকেটের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। জাগৃক কখনওই স্বচ্ছ নিলাম করবে না, কারন সর্ষের ভিতরেই ভূত রয়েছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর