ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ জেলেকে ফেরত দেয়নি আরকান আর্মি
সময়: 9:12 am - November 7, 2024 |
মানব কথা: বঙ্গোপসাগরের নাফ নদী মোহনায় মাছ শিকারের সময় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ২০ বাংলাদেশি জেলেকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে গেছে। গত সোমবার বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের কাছে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ১৫টি নৌকা ও জালসহ তাদের অপহরণ করা হয়। একদিন পরেও জেলেগুলোকে ফেরত দেওয়া হয়নি, ফলে তাদের পরিবারদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) জানিয়েছে, তারা তাদের ফেরত আনার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, দুই-এক দিনের মধ্যে জেলেদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। বিজিবি কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এই অপহরণের ঘটনা নিয়ে তারা মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে।
অপহৃত জেলেরা হলেন- মো. হাসিম (৩০), মো. হোছেন (২০), মহিউদ্দিন (২২), এনায়েত উল্লাহ (৩২), আব্দুল শুক্কুর (৩৫), নুর হাফেজ (২২), মো. ইয়াছিন (৩০), আবদুর রহিম (২৪), হাসান আলি (৩৩), ওসমান গনি (৩০), শাহ আলম (২২), আসমত উল্লাহ (২০), আব্দুল শুক্কুর (২৬), আবুল হোসেন (১৭), আয়ুব খান (৩০), নুর হোসেন (২২), মো. বেলাল (১৮), মো. সলিম (২৭), আব্দুল কাদের (২২) ও ইবনে আমিন (৩৫)। তারা সবাই শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
শাহপরীর দ্বীপ ইউপি সদস্য আবদুস সালাম জানিয়েছেন, একদিন পরেও জেলেদের ফেরত না পাওয়ায় তাদের পরিবারের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে। অপহৃতদের মধ্যে ইবনে আমিনের বাবা নাছির উদ্দিন জানিয়েছেন, ছেলে ছিল পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস, তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় খুব দুশ্চিন্তায় আছি। এর আগেও মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে আমাদের একজন জেলে মারা গেছে।
স্থানীয় জেলে নুর আলম বলেছেন, এটি প্রথমবার নয়, এর আগেও মিয়ানমারের বাহিনী আমাদের জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে। ফলে জেলেরা খুব ভয় পাচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী এই ঘটনার জন্য কিছুটা দায়ী করেছেন স্থানীয় জেলেদের, যারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষের কারণে নাফ নদীতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকার পরও তা অমান্য করে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে জেলেদের সচেতন করার চেষ্টা চলছে।
এটি মিয়ানমারের নৌবাহিনী ও আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে এ ধরনের অপহরণের নতুনতম ঘটনা। এর আগে ৯ অক্টোবর গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ৫৮ জেলেকে মিয়ানমারের নৌবাহিনী অপহরণ করেছিল, এবং ওই ঘটনায় তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, একজনের মৃত্যু হয়। পরে তাদের ফেরত দেওয়া হয়।