গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী আওয়ামী ল্যাস্পেন্সার শামীম আখতারের হাতে নিরাপদ নয় সচিবালয় ও যমুনা

সময়: 12:35 pm - December 29, 2024 |

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ২৬ ডিসেম্বর সচিবালয়ে সাত নম্বর ভবনে অগ্নি কান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষ দর্শীর বরাতে জানতে পারা যায়, রাত পৌনে দুইটার সময়ে আগুন লাগে।
আগুন নেভাতে গিয়ে মারা যান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একজন কর্মী । প্রায় ছয় ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। কিন্তু ততক্ষনে পুড়ে ছাই রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব পূর্ণ নথি। এই ভবনের ষষ্ঠ তলা থেকে নবম তলা পর্যন্ত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্ললী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রনালয়ের নথিপত্র, আসবাব ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

গনুভ্যূত্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় গত ২৪ তারিখ এক্স হেন্ডেলে তার পরিবারের দূর্নীতির কোন প্রমান পাবেনা এমন ঘোষনা দেয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এমন অগ্নিকান্ডকে নিছক দূর্ঘটনা হিসেবে দেখছেন না নেটিজেনরা। তাদের বধ্যমূল ধারনা শেখ পরিবার ও তাদের দোসর ওবায়দুল কাদের, এ আরাফাতের মতো দূর্বৃত্তদের দূর্নীতি ও দেশ বিরোধী চুক্তির তথ্য প্রমান নষ্ট করতেই এই আগুন লাগানো হয়েছে।

এছাড়া ২০১৪ এর বিনা ভোটে নিররাচন, ২০১৮ এর নিশি রাতের নির্বাচন; ২০২৪ এর ডামি নির্বাচন সফল করতে আমলাদের ভূমিকা নিয়েও সিভিল সোসাইটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মূলধারার গনমাধ্যমে সরব রয়েছেন।
এই আমালাদের বর্তমান ও সাবেকরা মিলে সভা করে সংস্কার এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ঠিক এমন সময়ে এই অগ্নি কান্ডের ঘটনা তাই ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। সেই সঙ্গে জন্ম দিয়েছে কয়েকটি প্রশ্নের। সচিবালয়ের মতো প্রশাসনের প্রান কেন্দ্রে কি ফায়ার এলার্ম নেই? স্বয়ংক্রিয় অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নেই? যদি নাশকতা হয়ে থাকে তবে সিসি টিভি ফুটেজ কি নেই। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা; গনপূর্ত অধিদপ্তর এর কাছে অবশ্যই সিসিটিভি রেকর্দিং থাকার কথা। এখানে নিয়মিত ফায়ার ড্রিল হয়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়ে থাকলে গণপূর্ত অধিদপ্তর দায় এড়াতে পারেনা। অফিস শেষে সব কক্ষ বন্ধ করা ও কেউ ঢুকছে কিনা সব চাবি গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মচারিদের কাছেই থাকে।

জানা গেছে, এ ঘটনায় দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং দুস্কৃতিকারীরা দ্বায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারিদের টাকার বিনিময়ে কিনে ফেলেই নাশকতা করে থাকতে পারে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার এ ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। সচিবালয়ের আউট সোর্সিং কর্মচারিদের শত ভাগ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারের সাথে টাকার ভাগবাটোয়ারা করে শামীম আখতার গোপালীদের নিয়োগ দিয়েছেন। পরবর্তীতে সচিব কাজী ওয়াসী উদ্দীন এর সময়ও এই ধারা অব্যাহত ছিল। গোপালগঞ্জের ঠিকাদার এস এ এন্টারপ্রাইজের মালিক দ্বীন ইসলাম ও জাহিদ মিলে কর্মচারিদের আউট সোর্সিং সিণ্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করতেন। এভাবে সচিবালয়ে এখন ১৫ বছরে নিয়োগ দেয়া প্রায় ৩৫০ জন গোপালগঞ্জের কর্মচারি রয়েছেন।
৫ অগস্ট পট পরিবর্তনের পর শামীম আখতার কয়েকদিন পালিয়ে ছিলেন। অফিসে আসতেন না। পরে সব কিছু ম্যানেজ করে আবার গোপনে অফিস করেন। শামীম আখতার ১ আগস্ট ঢাকায় সব অফিসারদের অডিটোরিয়ামে আটকে রেখে শেখ পরিবারেকে কেন চিরকাল রাষ্ট্র ক্ষমতায় রাখা দরকার সে বিষয়ে ক্লাস নিয়েছেন। তার সেই ক্লাসে মার্কিন যুক্ত্ররাষ্ট্র ও ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি স্পষ্ট বিষোদ্গার ছিল। ১৬ জুলাই সভা করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ৫ আগস্ট শেখ কামালের জন্মদিন ঘটা করে পালন করবেন, সারা দেশে মঞ্চ বানিয়ে প্রতিকৃতিতে অর্ঘ দেয়ার নামে পূজা করবেন, সেদিন সাত সকালে বেলুন উড়িয়ে সাজ সাজ রবে সাংগ পাংগ নিয়ে মজা করে কেক কাটবেন। ৪ আগস্টও এমনকি কারফিউ জারির পরও বিকাল ৪ টার পর অফিস বন্ধের আদেশ থাকলেও শামীম আখতার ঢাকা সার্কেল ১ এর ততকালীন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইলিয়াস আহমেদ, মেট্রোপলিটন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নাছিম খান ও ঢাকা ডিভিসন ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম সানাউল্লাহ পরদিন শেখ কামালের জন্মদিন পালন সফল করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
হাসিনা সরকারের মানবতা বিরোধী অপরাধের প্রতিবাদে কয়েকটি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদুত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছিলেন, অথচ শামীম আখতার তখন পাঁচ তারকা হোটেলে কেক খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

৫ আগস্টের পর শামীম তার ধান্দাবাজি ঠিক রাখতে আউট সোর্সিং এ সব তার নিজের লোক বসিয়েছেন। সচিবালয়ে কর্মচারিদের নিয়ন্ত্রন যাদের হাতে সেই প্রধান প্রকৌশলীর সখা নূসরাত হোসেনের পেয়ারের লোক তার উপবিভাগীয় প্রকৌশলীগণ , উপসহকারী প্রকৌশলী সকলেই বিগত আওয়ামী সরকারের সক্রিয় রাজনোইতিক পৃষ্ঠপোষকতায় মোদ্দা কথা নূসরাতকে খুশি করেই পোস্টিং পেয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম) নিয়াজ তানভীর আলম ও তার পূর্বসূরি ইউসুফও আওয়ামী ফ্যাসীবাদের দালালী করে টানা দশ বছরের অধিক সময় ঢাকায় গুরুত্বপূর্ন চেয়ারে ছিলেন। ই /এম এর উপ বিভাগী প্রকৌশলী এবং উপসহকারী প্রকৌশলী সরাসরি বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের নেতা। এরা কারিগরি জ্ঞানে শূন্য, একেবারে অদক্ষ্য, যেকোন তদন্ত কমিটির কাছে এরা দাঁড়াতেই পারবেনা। এই অযোগ্যদের টাকার বিনিময়ে পোস্টিং দিয়েছেন শামীম আখতার। তিনি সালমান এফ রহমানের খুব স্নেহ ধন্য ছিলেন। তার এক শিষ্যের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে নাগরিকত্ব কিনেছেন। চিকিৎসার সার নামে সিঙ্গাপুর গিয়ে শেখ সেলিম, শেখ হেলাল, আজিজ খান, এস আলম দের সাথে গোপন মিটিং করে এসেছেন। সিঙ্গাপুরের অভিজাত এলাকায় বাড়ি কিনে হয়েছেন আজিজ খান ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিবেশী। তার সর্বশেষ সিঙ্গাপুর সফরে জামিনে থাকা তার পার্টনার নূসরাত হোসেন সফর সঙ্গী ছিলেন। সেখান থেকে গোপন এসাইন্মেন্ট নিয়ে এসেই কান্ড ঘটিয়ে দিলেন। শামীম আখতার যদি প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে থাকেন তাহলে এমন স্যাবোটেজ আরও ঘটার সম্ভাবনা প্রবল। তিন্নি এখনও ভারতের গাজিয়াবাদ থেকে তার প্রিয় আপার সাথে হোয়াটস এপে কথা বলে এমন ব্যক্তিদের মাধ্যমে নির্দেশনা পেয়ে থাকেন। তার প্রিয় হাসিনা আপার নির্দেশনা মোতাবেক বাকশালীদের পুনর্বাসনে তিনি বদ্ধ পরিকর। সে লক্ষেই তিনি অতিসন্তর্পনে কয়েকটি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলো ছিলো সন্দেহাতিত ভাবে অসচ্ছ ও দূর্নীতির দায়ে প্রশ্নবিদ্ধ। চুড়ান্ত নিয়োগের ফলাফল বিশ্লেষনে বেরিয়ে এসেছে আরো ভয়াবহ তথ্য। ০৯/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ২৫,৩৬,০০০০,২১১,৪০২,২০২২,৯৫৮ স্মারকে নিয়মিত মঞ্জুরিকৃত ‘মালী’ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত ৮ জনের মধ্যে ৩ জনই হিন্দু যা ৩৭.৫%। একই ভাবে ১০/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ২৫,৩৬,০০০০,২১১,৪০২,২০২২,৯৬৪ স্মারকে নিয়মিত মঞ্জুরিকৃত ‘অফিস সহায়ক’ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত ১১৭ জনের মধ্যে ২৭ জনই হিন্দু যা ২৩%। তেমনি ১০/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ২৫,৩৬,০০০০,২১১,৪০২,২০২২,৯৬৩ স্মারকে নিয়মিত মঞ্জুরিকৃত ‘নিরাপত্তা প্রহরী’ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত ৩০ জনের মধ্যে ৬ জনই হিন্দু যা ২০%। আবার ১০/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ২৫,৩৬,০০০০,২১১,৪০২,২০২২,৯৬২ স্মারকে নিয়মিত মঞ্জুরিকৃত ‘কার্যসহকারী’ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত ২৩ জনের মধ্যে ৮ জনই হিন্দু যা ৩৫%। বাংলাদেশের জনমিতির যেখানে মাত্র ৮% হিন্দু জনগোষ্ঠী সেখানে গড়ে ৩০% নিয়োগের এই ফলাফল কোন ভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। গণ ভবনের তালিকা, কাজী ওয়াসি উদ্দিন -র,ম, ওবায়দুল মোক্তাদির গংদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছেন শামীম আখতার। কথিত আছে নিয়োগ পাওয়া সবাই ভারতীয় নাগরিক এবং ইসকনের সদস্য। আমরা চাই না বাংলাদেশ +২ তে এসেও আর কোন ওসি প্রদীপ, পরিমল জয়ধর তৈরী হোক। খোদ গণপূর্ত অধিদপ্তরেই ক্রমিক ধর্ষক ড্রাফট ম্যান তপন পাল, খাপ খোলা তলোয়ার নিয়ে বিনা বিচারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি প্রশ্ন বিদ্ধ থাকলেও শামীম আখতার হাসিনার আমলা তন্ত্রের নেক্সাসের সাথে একই উদ্দেশ্য কাজ করেন বিধায় সব ম্যনেজ করে নিয়োগ দিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে আগেও বিস্তর লিখালিখি হয়েছে। এই দুইটি নিয়োগে তিনি প্রায় ২০০ (দুই শত) কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।গত ১৮ জানুয়ারি, জাতীয় দৈনিক কালবেলা তে ‘ গণপূর্তে১৬৯ পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফল গায়েব । জিডিতেই দায় এড়ানোর চেষ্টা ‘ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে জানা যায় ২০২৩ সালের ২০ ও ২৭ মে, ১৮ থেকে ২০ তম গ্রেডের ৬ ক্যাটাগরির ১৬৯ টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৪ জুন থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। কিন্তু তিন মাসেও সেই নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল আলমের দুরভিসন্ধির কারনে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তিনি মৌখিক পরীক্ষার রেজাল্টের ১৫ টি সিলগালা করা খামের একটি গায়েব করে দেন মর্মে সংবাদ সূত্রে জানা যায়। সংবাদ সূত্রে আরো জানা যায়, সিলগালা করা খাম গুলো নিয়োগ কমিটির আহবায়ক এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সংস্থাপন ও সমন্বয় মোঃ শহীদুল আলমের নিকট ট্রাঙ্কে তালা বদ্ধ ছিল, অন্য কারও পক্ষে এই ট্রাঙ্ক কোথায় রাখা ছিল তা জানা সম্ভব নয়। সংবাদ সূত্রমতে ২৮ নভেম্বর,২০২৩ রেজাল্ট এর খাম হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলেও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে শাহবাগ থানায় সাধারন ডায়েরী(জিডি) করা হয় এই সময় এর মধ্যে অধিদপ্তর বিষয় টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। ঠিক কাছাকাছি সময়ে ২৩/১২/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ পরীক্ষায় শহীদ নিজে টিএনটি ল্যান্ড ফোন থেকে এবং WhattsApp ব্যবহার করে পছন্দের প্রার্থীদের বেশী নম্বর পাইয়ে দিতে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। দুই একজন কর্মকর্তা এধরনের অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে যখন সারাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল সেই সময়ে এই পরীক্ষা গ্রহনেরফলে অনেক পরীক্ষার্থীই অংশ নিতে পারেনি। ফ্যাসি বাদের অন্যতম ক্রিড়ানক, ভারতীয় গুপ্তচর সাবেক মন্ত্রী র ম আ উবায়দুল মোক্তাদির কে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে সব যায়েজ করে নিয়েছেন। আশ্চর্য জনক হলেও সত্য, এই বিষয় গুলোও তিনি গণপুর্ত বীটের সাংবাদিকদের ম্যনেজ করে ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছেন। সাংবাদিকদের জনপ্রতি মোটা অঙ্কের টাকা ও থাইল্যান্ডে প্লেজারট্রিপের ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন। শামীম আখতার যে ফ্যাসিবাদের দোসর সে কথা সর্বজন বীদিত। খুনি হাসিনার হেলমেট বাহিনী তোষণ; ডামি নির্বাচনে অর্থায়ন; বিএনপি জামায়াতের ২৮ অক্টোবর ২০২৩ এর সমাবেশে হামলা চালাতে রতন কমিশনারের ক্যাডার বাহিনীকে খিচুরি রেধে খাওয়ানো, গুন্ডালীগকে অর্থনৈতিক পুনর্বাসন সহ এমন কোন অন্যায় কাজ নেই তিনি করেন নি। তিনি নিজেও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার কর্মী ছিলেন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্টেক হোল্ডারদের অনেকেই শামীম আখতার কে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ২০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে অযোগ্য প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে মনে করেন। এর পিছনে তারা অনেক গুলো কারণও রয়েছে বলে মনে করেন। যেমন তিনি মেধা তালিকায় ৭ম স্থানে ছিলেন এবং সামনের ৬ জনকে কূট কৌশলে মাইনাস করে প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ার হাতিয়ে নিয়েছেন। চাকুরী জীবনে এর আগে কখনই মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারেন নি বিধায় ভালো কোন চেয়ার ছিলেন না। এমন কি অদক্ষতার কারনে তাকে ডিজাইন ৬ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে লক্ষ্মীপুরে বদলী করা হয়েছিল। মাঠ পর্যায়ে অভিজ্ঞতা বলতে এই লক্ষীপুরই তার সম্বল। তাই তার আত্মবিস্বাসের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এরপর হাউজ বিল্ডিং এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটে চাকুরির সময় খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন, সুযোগের অভাবে সৎ থাকা এই কর্মকর্তা একপ্রকার হরিলুট করেন। সেখানে নুসরাত নামের এক ঠিকাদারের সাথে মিলেমিশে ভাগবাটোয়ারা করে সরকারি অর্থ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দীর্ঘদিন মন্ত্রণালয়ে চাপা পড়ে আছে। এ বিষয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকায়,” কাজ শেষ না হতেই বিল দেন প্রধান প্রকৌশলী” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।এই নূসরাত নিজে কেরানীগঞ্জে ‘কিংডম বিল্ডার্স’ নামে অবৈধ আবাসন কোম্পানির মালিক। নুসরাতের সাথে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে। কেরানিগঞ্জের গড ফাদার খ্যাত নসরুল হামিদ বিপু ও নুসরাত মিলে ১০০ কোটি টাকার বিনিময়ে শামীম কে চীফ ইঞ্জিনিয়ার বানাতে সাবেক বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান কে মেনেজ করেন। ফেসি বাদের পতন হলে এই নুসরাত হোসেন তার মহাখালী ডিও এইচ এস এর বাসা থেকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শাহ কামালের সাথে বিপুল পরিমানে অবৈধ অর্থ সহ গ্রেফতার হন। মিডিয়া তে তিন কোটি টাকা সহ গ্রেফতারের খবর টি এলেও আসলে উদ্ধার কৃত টাকার পরিমান তিনশত সাতাশ কোটি । এই শাহ কামাল, নসরুল হামিদ বিপুর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে থাকা কালীন নূসরাতের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ঊঠে। নুসরাতের ডেরায় উদ্ধার কৃত টাকার একটা সিংহ ভাগই, টেন্ডার বানিজ্যের মাধ্যমে কামানো শামীম আখতারের টাকা। জিজ্ঞাসা বাদে নূসরাত প্রধান প্রকৌশলীর তিন কেশিয়ার এর নাম বলেছেন। । এই তিন মুরীদ রোজ সন্ধ্যায় মহাখালী ডি ও এইচ এস এ নূসরাতের ডেরায় যেয়ে সুরা পানের আসরে পীর সাহেবের সাথে জিকির করতেন। ঢাকা সহ সারা দেশে কাজ বাগিয়ে নিতে নূসরাত ও তার সহযোগীদের মাধ্যমে জাল বিস্তার করেছেন। প্রধান প্রকৌশলীর সুইস ব্যাংক খ্যাত নূসরাত কে ৫(পাচ) % টাকা অগ্রীম দিলে তবেই কাজ পাওয়া যায়, অন্যথায় নানা ছুতোয় তিনি কাজ বাতিল করে দেন। ফ্যাসিবাদের অর্থ সন্ত্রাসের সেল আর সাড়ে হাজার ভাগিনার টাকা পাচারের মেশিন সি,আর,আই এর সদস্যদের নামে বেনামে তিনি কোটি কোটি টাকার কাজ দিতেন। আই ইবি এর নেতা সবুর সহ অন্যান্য মধ্যম ও নিচের সারির ছাত্র লীগ পুনর্বাসনের এর আখড়া বানিয়ে ফেলেছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরকে। আই ইবি কনভেনশন এর সময় ব্যাপক চাদাবাজি করেছেন এবং নিজে ভোট ডাকাতি করে সেন্ট্রাল কাউন্সিল মেম্বার হয়েছেন। নিজের আত্মীয় ও পছন্দের অফিসারদের আত্মীয়দের মাধ্যমে সফট ওয়্যার কেনার নাম করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। তিনি কবির চাচা খ্যাত শেখ কবির কে এনে গণপুর্ত অধিদপ্তরে রাজনৈতিক সভা করতেন। রাজনৈতিক নেতার মতো ভাসনের শুরুতেই ১৫ আগস্টের নিহত (এই বাক শালীদের তিনি শহীদ বলতেন) দের স্মরনে লম্বা বয়ান দিতেন, এমনকি এই লেবাস ধারী বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ও বলতেন না। তিনি শেখ হাসিনার বিভাগীয় সম্মেলন গুলোতে নিয়মিত টাকা দিতেন। এমন কি এই ২০২৪ এর ডামি নির্বাচনেও টাকা দিয়েছেন। তিনি ডিভিশন ৪ এ , সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাউছার মোল্লা এর ভাগিনা হাসান মোল্লাকে ইচ্ছা মতো ফ্যাসিবাদ কায়েমের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। হাসান মোল্লার ‘মা বাবা কন্সট্রাকশন ‘ এর মাধ্যমে তিনি আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীকে পুষতেন। সেখানে তিনটি রুম দখল করে অবৈধ অস্ত্রের গোডাউন বানিয়েছিলেন। এই গোডাউনেই ছিল শামীম আখতারের আয়না ঘর আর তার সিপাহ সালার ছিলেন হাসান মোল্লাহ। এই হাসান মোল্লাহ ছাত্র জনতার বিপ্লবে নিরিহ ছাত্রদের উপর গুলি চালানোর প্রমান থাকায় সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন। সেগুন বাগিচার কমিশনার ফরিদ উদ্দিন রতন কে তিনি অস্বাভাবিক সুযোগ দিতেন। তাকে মেরামত ও উন্নয়ন খাত থেকে কয়েকশত কোটি টাকার কাজ দিয়েছেন। বিরোধী দলের সভা সমাবেশের দিনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগের পাল্টা কর্মসুচি হিসাবে অথাকথিত শান্তি সমাবেশের নামে যে সন্ত্রাস চলত সেখানে রতন কমিশনার কে তিনি প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করতেন। বিশেষত এসব সভার আগের রাতে আওয়ামী গুন্ডা বাহিনীর জন্য বিশাল ডেকচিতে খিচুরি রান্না হতো প্রধান প্রকৌশলীর কার্লয়ের ভিতরে। ২৮ অক্টোবর ২০২৩ এ এরকম এক রান্নার আয়োজন সবাই প্রত্যক্ষ করেছেন। এমন কি জুলাই আগষ্ট বিপ্লবের সময়ও শামীম আখতার রতন কমিশনার যৌথ প্রযোজনায় গণতন্ত্রের কন্ঠ রোধে ও মানুষ হত্যায় অর্থায়ন করেছেন। সর্বশেষ এই বিতর্কিত নিয়োগটিতে তিনি আরো একটি কাজ করেছেন সেখানে তিনি মুক্তি যোদ্ধা কোটায় নিয়োগ দিয়েছেন সুজন রায় নামে একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান কে। এই কোটা বিরোধী আন্দোলনে এখন আর কোন কোটা প্রযোজ্য আছে কিনা তা আমাদের জানা নেই। শামীম আখতার আসলে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে ধারন করতে পারছেন না। আসল কথা তিনি ধারন করতে চান না। না হলে তড়িঘড়ি করে এই নিয়োগের দরকার কি ছিলো। তার ব্যক্তিগত কমপক্ষে ছয় জন কর্মচারি ভাউচার কিংবা আউট সোর্সিং প্রক্রিয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে বেতন নিচ্ছেন। পুলিশের টাফিক কন্ট্রোল থেকে শুরু করে অনেক জায়গায়ই জুলাই বিপ্লবের কর্মীরা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। শামীম আখতার কি পারতেন না অন্তত এক জন শহীদ পরিবারের সদস্য কে কিংবা আহত কাউকে আউট সোর্সিং এ নিয়োগ দিতে। জেন ‘জি’ দের নূন্যতম ইন্টার্নীর সুযোগ দিতে? গণপূর্ত অধিদপ্তরের মতো সংস্থায় জুলাই বিপ্লবে অংশ নেয়া প্রকৌশল বিদ্যার ছাত্ররা ইন্টার্নের সুযোগপেলে তা হতো তাদের দক্ষতা উন্নয়নের এক দারুন সুযোগ। কিন্তু তিনি তা করবেন না, কারন তিনি বাকশালীদের পুনর্বাসনের শপথ নিয়েছেন। শামীম আখতার গং যমুনা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাদের বসিয়ে রেখেছেন খুনি হাসিনার অনুগত হিসাবে তাদের ডিএনএ টেস্ট করা। কজেই শুধু সচিবালয় না , হাসিনার দোসরদের হাতে যমুনাও নিরাপদ না।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর