সত্য সুন্দরের সন্ধানে: রাজু আহমেদ মোবারক

সময়: 8:25 am - January 7, 2025 |

“মূর্খতারও সীমা থাকে, মূর্খতার সীমা অতিক্রম করাও বড় মূর্খতা”

1)When the going gets tough, the tough get going.”-Frank Leahy

কোন কিছু যখনই এর সীমা অতিক্রম করে তখনই তা অসীমে রুপান্তরিত হয়ে তার আসল রুপ ভিন্ন আকার ধারণ করে।

মানুষ মাত্রই তাদের চলমান জীবনে অল্পবিস্তর মূর্খতার পরিচয় দিয়ে থাকেন কথা ও কাজে। মানুষের কাজের মাধ্যমে আমরা যতটা না মানুষের মূর্খ চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ দেখে থাকি, তার চেয়েও বেশি মূর্খতার বহিঃপ্রকাশ তাদের কথাগুলো থেকেও আমরা শুনে থাকি। মানুষের মূর্খতা মূলত কথা ও কাজে প্রকাশ পেয়ে থাকে যখন মূর্খতার চিন্তার চেতনাটি পূর্ব থেকে উদিত থাকে। আমাদের জীবনে কাজের সাথে চিন্তাকে যদি সম্পৃক্ত করে নিয়ন্ত্রিত ভাবনার মাঝে মনকে নিয়োজিত রাখতে না পারি, একটা সময়ে আমরা সত্য পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সত্যভ্রষ্টতার দিকে ধাবিত হয়ে অপরাধ কর্মে নিযুক্ত থেকে মুর্খতার পরিচয়ও দিয়ে থাকি। এই সত্যভ্রষ্টতার জীবনই আপনার-আমার জীবনের কৃতকর্মের মূর্খতা। মানুষের কৃতকর্মের মূর্খতারও সীমা থাকে। কিন্তু এই মূর্খতার সীমা অতিক্রম করাও আরো বড় মূর্খতা। আপনারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখুন। এই চারটি প্রতিষ্ঠানের উন্নতি যারা করেছেন শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত সকল মানুষ মিলেই করে যাচ্ছেন, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই চারটি প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছেন এই শিক্ষিত মানুষেরাই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশাসনে চাকরিরত কর্মকর্তারা তাদের কর্মজীবনে চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ এসব শিক্ষিত মানুষগুলোই এই খারাপ কাজগুলো করে জাতির সর্বনাশ করছেন। কোন অশিক্ষিত মানুষদের একেবারেই বিচরণ নেই শিক্ষিত পন্ডিত লোকজনদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ এসব নিত্যদিনের কদর্যপূর্ণ কাজগুলো করার। ফলে স্বল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত মানুষ যতটা না তাদের কৃতকর্মে মূর্খতার পরিচয় দিয়ে থাকেন, তার চেয়েও অধিক বেশি মূর্খতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষিত মানুষেরাই। কারণ তারাই রাষ্ট্রকে নাড়াচাড়া করেন তাদের দায়িত্ব থেকে।

পৃথিবীতে যুদ্ধবিগ্রহই বলুন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিপত্তির প্রাধান্যতাই বলুন তা সবই তো শিক্ষিত মানুষেদেরই কাজ। পৃথিবীর যত রকম ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড সংঘটিত হয়েছিল বা হচ্ছে তাও শিক্ষিত রাজনৈতিক পন্ডিত মানুষদের দ্বারাই সম্ভব। সারা বিশ্বের দিকে আমরা যখনই দৃষ্টিপাত করি তখনই দেখতে পাই যে, সন্ত্রাসীদের দ্বারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বোমাবাজি আর গোলাগুলি করে মানুষ হত্যার কাজগুলোও শিক্ষিত পন্ডিত মানুষদের দ্বারাই সংঘটিত হচ্ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে।

জনৈতিক কৌশলে প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের কাজটিও শিক্ষিত স্বার্থপর নেতারাই করে থাকেন। পৃথিবীর কোন কোন দেশে আপনার-আমার জমি-নদী-খাল-বিল এসব মূল্যবান প্রতিষ্ঠানগুলো লোভাতুর নিষ্ঠুর প্রাণের শিক্ষিত মানুষগুলোই দখল করে থাকেন এবং সাথে স্বার্থপর তরুণ যুবসমাজও তাদের সাথে মিশে গিয়ে তাদের স্বপ্নের ভবিষ্যতের সর্বনাশ করে থাকেন। তারা এমন সব নিষ্ঠুর কর্মকান্ড সংঘটিত করে থাকেন যে সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীকে এই যাতনার ভার চিরকালই বহন করে যেতে হয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। তাদের দ্বারা সংঘটিত সর্বনাশার কর্মফল বিশ্বের মানুষের কাছে তাদেরকে মূর্খ মানুষ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। তাদের এসব নিষ্ঠুর কর্মকান্ডে তাদেরকে এমন মূর্খ মানুষ বলে মনে হয় যে, মানুষ তাদের ওপর রাগ-অভিমান করে যে ঘৃণা করবে, সেই ঘৃণা করার ভাষাটাও পর্যন্ত তারা খুঁজে পায় না। পৃথিবীর সকল মানুষই কথা ও কাজে বড় ধরনের মূর্খতার পরিচয় দিয়ে থাকেন, কিন্তু শিক্ষিত মানুষের কর্মের মূর্খতা যখনই তার সীমাটি অতিক্রম করে ফেলে, তখনই মনে বড় দুঃখ লাগে। সব মূর্খতারও সীমা থাকে, কিন্তু শিক্ষিত মানুষেরা যখন বাজে কাজগুলো করে সমগ্র জাতি ও বিশ্বের সর্বনাশ করে, তখনই তারা মূর্খতার সীমা অতিক্রম করে বড় মূর্খ মানুষ হয়ে পড়েন। যারাই মনুষ্যত্বের শিক্ষায় শিক্ষিত না হতে শিখবেন, তারাই চিরজনম সকল কর্ম সম্পাদনে মূর্খতার পরিচয়ে পরিচিত হবেন। এই মানুষগুলোর মাঝে যারা সমাজ ও রাষ্ট্রে চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ এসব নিচু কাজ করে শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হয়ে গেলেও মানুষের ঘৃণা তাদের ওপর প্রতিনিয়তই অর্পিতই হবে। ওরা চিরকালের জন্যই মানুষের কাছে অন্তর থেকেই পরিত্যক্ত, ঘৃণ্য ও অভিশপ্ত। এই একটি সত্যকে উপেক্ষা না করাই উত্তম

যে, তুমি যখনই কারো গলায় ছুরি লাগিয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজত্ব কায়েমে মনোনিবেশ করবে, তুমি তোমার কলংকের কালি দুইটি হাতে লাগিয়ে লাগিয়ে নিজেই তুমি তোমার সর্বনাশ করে সেই স্হান থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে চির বিদায় হবে। তাতে যে তোমার সমস্ত ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে যাবে তা নিশ্চিত করেই বলে দেওয়া যেতে পারে। তুমি বৈশিষ্ট্য শক্তিধর মানুষ হলেও তুমি তোমার নিজের চরিত্রের সৌন্দর্য্যে একবারেই তুচ্ছ। এই তুচ্ছ প্রকৃতির মানুষকে তাদের নিজেদের ঘরেই

পরবাসী হয়ে বিচ্ছিন্ন মানুষের মতো থাকতে হবে। না হয় তোমাকে দেশান্তরিত হয়ে লুকায়িত জীবনে চলে যেতে হবে। কখনো কখনো কোন রাষ্ট্রে যখনই খারাপ লোকের আধিক্যতা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তাদের অন্তরে পুরনো মতবাদ সিলমারা থাকে, তারা কখনো সত্যান্বেষীদের সত্য কথাও হজম করতে পারেন না। ফলে মিথ্যাচারদের মিথ্যাশক্তির কারণে সত্যবাদীদেরও দেশান্তরিত হতে হয়। তবে এটাও সত্যি যে, যারা অন্য মানুষের জীবন আঁধার করে সুখে থাকতে চান, তাদের অন্ধকারের জীবনে কি সঞ্চিত আছে তা তারা কখনোই বলতে পারবেন না। তবে যে কোন অপরাধ কর্মের ফলে আঁধারের সঞ্চিত অর্জনটি বড় দুঃখেরই হয়ে থাকে। শুধুই একটু অপেক্ষা করুন! পথটি আপনার, আপনি কোন্ পথে যাবেন। সত্য পথে না কী, পাপের পথে? তবে সত্য পথে মনটি রাখাই ভালো মূর্খতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।

2) “Fortune does not change men; it unmasks them.”- Madame Necker

তুমি যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানের পথটিকে ছেড়ে দিয়ে বিবেকহীন ও মনুষ্যত্বহীন মানুষে পরিণত হওয়ার পথগুলো খোঁজতে শুরু কর মূর্খতার জীবন তোমার ঘাড়ে চেপে বসে সংসারের সমস্ত শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য ভেতর থেকে নষ্ট করে তোমাকে রুপহীন মানুষেই রুপান্তরিত করে ফেলতে পারে। মানুষে মানুষে মূল্যবোধের ওপর ভর করে যে মধুর সম্পর্ক স্থাপিত হয় এর নিজস্ব রুপ-সৌন্দর্য-মাধুর্য ও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত চারিত্রিক কাঠামোও আছে। যে কোন জিনিসেরই যদি কাঠামোর অভাব থাকে, সেই জিনিস এর রুপ বৈশিষ্ট্যের মূল সত্তাটিও দুর্বল থাকে। তোমার-আমার স্বতঃস্ফূর্ত প্রাণের সম্পর্ক যদি ভেতর থেকে গড়ে না উঠে, সেই সম্পর্কের বাঁধন থেকে যে ভালোবাসা ও ভালোলাগার

মাদকতা পরস্পরের হৃদয়ের পাশে গিয়ে ছোটাছুটি করে, সেটাও সম্পর্কের কাঠামোর অভাবে ভেতরে ভেতরে পচনও ধরতে পারে। সেই সম্পর্কে যখনই পরস্পরের হৃদয়-মন থেকে পচন ধরে ঘৃণার বাষ্পে পুরো হৃদয়-মন দুই পক্ষেরই তখন জ্বলতে থাকে। ফলে, দুই পক্ষের পুড়া হৃদয়-মন আর কিছুতেই পূর্বের অরিজিনাল স্হানে স্থাপিত করে বিশ্বাসের ওপর জোর দেওয়ার শক্তিটাও ধ্বংস করে ফেলে। আমরা যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে হৃদয়-মনকে যত্ন করে বহুকালের পুরনো সহজ-সম্পকর্কে ঘষাঘষি করে নষ্ট না করি, তবেই ঘৃণার বাষ্পের বিস্ফোরণ থেকে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করে হৃদয়ের পরম ভালোবাসা দিয়ে চলতে পারি। মানুষের জীবনে যখনই মূর্খতার চিহ্নিত রুপটি প্রকাশ পেতে থাকে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্রই, তখন কোন দিনই দুই চক্ষু মেলে সংসারের সর্বোত্তম সুখের জীবন দেখাও যেমন সম্ভব হয়ে উঠে না, হৃদয় দিয়ে সংসার জীবনটাকে অনুভব করাও সম্ভব হয়ে উঠে না। কারণ, মূর্খ মানুষ হওয়ার জন্য মূর্খতার বীজটি অন্তরে রোপণ করে মূর্খতার চিন্তাকেই বড় করে আরো বড় করা হয়। শিক্ষিত মানুষ যদি মূর্খ চিন্তার মধ্য দিয়ে মূর্খতার সীমা অতিক্রান্ত করে, সেসব মূর্খ মানুষদের ঔষধ সেবনেও তাদের অন্তরের মূর্খতার রোগটি দূর করে অন্তরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা পর্যন্ত যায় না। কারণ, আপনার-আমার অন্তরে যদি খারাপ কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের অন্তর ধূসর হতে হতে কালো রং ধরে যায়, সেই কালো রং সাদা করাও বেশ কঠিনই হয়ে যায়। যে শিক্ষিত মানুষটি দীর্ঘকাল চুরি-দুর্নীতি-ঘুষ-হত্যাযজ্ঞ এসব নিত্যদিনের কাজে নিয়োজিত থাকেন, তাদেরকে আপনি শত-সহস্র উপদেশ নির্দেশেও সহজে ভালো মানুষে পরিণত করতে সক্ষম হবেন না। যদি এসব কদর্যপূর্ণ অপরাধ কাজে আইনের চোখে ধরা পরার পর সরকার আইনানুগ ব্যবস্থা করেন তবে তারা শুধুই শাস্তি পেয়ে থাকেন। তারা কিন্তু কখনোই প্রাণ খুলে প্রাণের সৌন্দর্য্যে ভালো মানুষ হয়ে যায় না।

পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রমাণ আজও পাওয়া যায়নি, যারা নিজেদের সিদ্ধান্তে চোর-ডাকাত আর নানান অভিধায় ভূষিত হয়ে নষ্ট মানুষের নামটি ধারণ করেছেন, তারা কখনোই তাদের জীবনে আর পুরোপুরি ভালো মানুষ হয়ে উঠেনি। আপনার জীবনে যদি একজন ভালো মানুষ হয়ে মৃত্যু বরণ করতেই চান তবে পৃথিবীর মানুষকে ভালোবেসে মানবিক

মানুষ হয়ে মৃত্যুর জীবনে চলে যান। মানুষের অন্তরে যদি নষ্টতার আলামত ত্বরান্বিত হতেই থাকে, নিজেদের চরিত্রের মূল শেকড় শক্ত করে সত্য পথে থাকাও অধিক দূরহ হয়ে পড়ে। যারাই জীবনে নিজেদের মান-সন্মানের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো মর্যাদার পথ অনুসরণ না করে চলেন, তাদের অন্তরেই মূর্খ চিন্তার শক্তিটি বড় হতেও থাকে। ফলে মানুষের কৃতকর্মের ভুলে যে মূর্খতার মতো নিন্ম আচরণটি আছে তাও প্রকাশ পেয়ে থাকে। এই মূর্খ চিন্তা চেতনা দিয়ে যারাই তাদের বিবেক বুদ্ধিকে ক্ষুদ্র করে রাখেন, সামান্য লোভাতুর কাজের সুযোগ পেলে চরিত্রের মূল শেকড় উপড়ে ফেলতে তাদের কয়েক সেকেন্ড সময়ও লাগেনা। মূর্খতার সীমা অতিক্রম করে যারাই বড় মূর্খ মানুষ হয়ে যায়, তারা মূর্খতার পরিচয় দিয়ে যত অপকাজ করেছেন, তা সমস্ত কিছুই সাথে নিয়েই মৃত্যু বরণ করলেও সমস্ত কিছুই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মাঝেই রেখে যান। আমরা আমাদের চিন্তা দিয়ে সমগ্র পৃথিবীকে যেখানে সুন্দর করতে পারি, সেখানে মানুষের ক্ষতিসাধন করে এত মূর্খতার কাজ আমরা কেনই বা করি? আমরা কি পারিনা আমাদের চিন্তার মাঝে যে মূর্খতা আছে, তা দ্রুত গতিতে দূর করে ভালো চরিত্রের মানুষ হতে? অন্তরের মূর্খতা দূর করে ভালো চিন্তার শক্তি দিয়ে আমরা এই সুন্দর পৃথিবীকে আরো সুন্দর করতে পারি। আমরা চাইলেই আমরা ভালো মানুষ হতে পারি যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে জীবনকে মুল্যবোধের নিরিখে চালিত করে সমগ্রকাল ভালো মানুষ হয়ে চলি। এটা আমাদের সবাইকেই মনে রেখে চলা উচিত যে, আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যতের স্বপ্নের পথটি নষ্ট না করে তাদের

সন্মান রক্ষা করা। তুমি যদি সর্বক্ষণই তোমার বাজে কাজের দ্বারা মূর্খতার চিন্তাকে পুন্জিভুত করে পাহাড়ের মতো উঁচু করে রাখো,

তুমিই একদিন তোমার মূর্খতার কর্ম ফলের পুন্জিভুত স্হানটিতেই

আটকে গিয়ে শুধুই চিৎকার করে বলবে, আমার জীবনে কৃতকর্মের মূর্খতার সীমা যে অতিক্রান্ত করেছি তারই জলন্ত প্রমাণ। তোমার জীবনটি এবং একই সাথে তোমার পাপ ও অপরাধের পুন্জিভুত ফলাফল পাহাড়ের মতো উঁচু করেই রাখো, তুমি কিন্তু কলংকের কালি তোমার দুই হাতেই ছড়িয়ে দিয়ে সর্ব দিকের সর্ব মানুষের ক্ষতিসাধনও করছো।

3) “I have never been poor, only broke. Being poor is a frame of mind. Being broke is temporary.”– Mike Todd

যাকে তোমরা প্রাণ দিয়ে ভালোবাস তাদের সাথে কথা বলার সময়, পরস্পরে খুঁটিনাটি বিষয়ে কথা বললেও সেই খুঁটিনাটি বিষয়ের ওপর মনোযোগ প্রদর্শন করিও। কারণ, এই খুঁটিনাটি বিষয়কে খুঁটিনাটি মনে করে তুচ্ছতার দিকে ধাবিত করলে, সেই খুঁটিনাটি বিষয় থেকে যে ভুল বোঝাবুঝি শুরু হয়, তোমার-আমার দীর্ঘকালের মধুর সম্পর্কটি চিরকালের জন্যও ভেঙ্গে যেতে পারে। আসলে, খুঁটিনাটি জিনিস বলতে কোন জিনিস নেই জীবনের সমস্ত কিছুতে। যে কোন জিনিস বা ঘটনা

ছোট হোক বা বড় হোক সব কিছুরই মূল্য আছে। আমাদের জীবন চলার পথে কোন বিষয় বা জিনিস ছোট মনে করে হালকা ভাবে যেন আমরা তা মূল্যায়ন না করি। তাতে আমাদের চিন্তা থেকে যে শক্তি বের হয় তা মূর্খতার শক্তিতেই প্রকাশিত হয়। সব কথা কানে ধরতে না

পারলেও কোন কোন কথা কানে ধরতেই হয়। কারণ, এসব খুঁটিনাটি বিষয় যখন খুঁটিনাটির রুপের ধারায় না থেকে, জীবনকে ভিভ্রান্তিকর অবস্থানে উপনীত করে অচলায়তন জীবনে নিপতিত করে। তখন আর মনে হয় না ছোট জিনিস বলতে এই বিশ্বে কোন কিছু আছে। ছোট হোক আর বড় হোক সব কিছুরই শক্তির জোর আছে। যে ছোট কাজের ছোট শক্তিকে তুমি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মনে করে পাশে রেখে দিয়ে তোমার অন্তর থেকে রহিত করে রেখেছ, এই রহিত করা পাশে থাকা শক্তিও তোমার

মাথার ওপর ছেপে বসে কঠিন শক্তিতে পরিণত করতে পারে। তোমাকে কঠিন জীবনের মুখোমুখিতে দন্ডায়মান করেও ফেলতে পারে। তোমরা কি দেখতে পাওয়ার না? সব ছোট ছোট জিনিসই যা আপনার-আমার দ্বারাই সৃষ্ট তা তার আপন গতিতে বড় হতে পারে। মোট কথাটা হলো, সব কথা শোনার পর কিছু কথা আছে, সেই কথা থেকে আর শত কথা বের হতে পারে। যে কথা ভবিষ্যতে কারণ্যে-অকারণেই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, সেই কথাগুলোর গুরুত্ব যেন আমরা অবলোকন করি। আমরা আমাদের পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ মানুষও পেয়ে থাকি। যাদের ওপর নির্ভর করে আমরা ভরসা পাওয়ার মন পেয়ে থাকি। তাদের সাথে মধুর সম্পর্ক করে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার অভ্যেসও করে থাকি। আমরা ভিভ্রান্তিকর জীবন থেকে মুক্ত হয়ে ভালো

মানুষও হতে পারি যদি আমরা আমাদের মনকে যত্ন করে অন্তরের মূর্খতা দূরীকরণে সত্য সুন্দরের সন্ধানে থেকে অন্তরের চোখে শৃঙ্খলিত মানুষ হতে থাকি। তুমি যখনই প্রকৃতির পরম সৌন্দর্যকে হৃদয়ে অনুভব করে ভালোবেসে থাক, তোমার অন্তরে যদি নিষ্ঠুরতার মতো জঘণ্যতার আলামত থেকে থাকে, প্রকৃতির সৌন্দর্য তোমার অন্তরের জঘণ্যতার শক্তিকেও দুর্বল করে দিতে পারে। তোমরা প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে শুরু করো, তোমাদের অনেকের অন্তরে মানুষরূপী পশুত্বের রুপ যাদের আছে, তারা মাত্র একটি মাসের প্রকৃতির সান্নিধ্যে অন্তরের নিষ্ঠুরতার পশুত্বকে দূর করে ভালো মানুষেও পরিণত হতে পারো। প্রকৃতিকে যদি তুমি আঘাত না করো, প্রকৃতি কখনোই তোমাকে আঘাত করবে না। তুমি প্রকৃতিকে ভালোবাসার প্রাণ নিয়ে অন্তর খুলে ভালোবেসে দেখো। প্রকৃতি কখনোই তোমার ক্ষতি করবে না। তুমি যদি তোমার অন্তরের সংস্কৃতির অভাবে মূর্খ ও অভিশপ্ত মানুষ হয়ে থাকো, তোমার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে শুধু মূর্খতার পরিচয়টাই তুমি দিয়ে যাবে। এই প্রকৃতির সৌন্দর্যে যখনই তুমি মুগ্ধিত প্রাণের মানুষ হয়ে যেতে পারো, তোমার চিন্তা ও অন্তরের মূর্খতা ধীরে ধীরে দূরীভূত করে সত্য সুন্দরের সন্ধানে থাকার সত্যিকারের পথ পাবে। মানুষের জীবনে যত প্রকার দুর্বল শক্তি মোকাবিলা করে জীবন অতিক্রান্ত করে যেতে হয়, তার মাঝে সবচেয়ে দুর্বল শক্তি হলো কর্ম পরিচালনা ক্ষেত্রে মানুষের মূর্খ চিন্তার প্রকাশ। আমরা মানুষ হিসেবে আমাদের চলমান জীবনে নানান ভাবে, নানান কারণে ঘূর্ণায়মান অবস্থায় পড়ে সারাকাল ঘূর্ণিপাকেও থাকতে হয়। আমরা যত খারাপ চিন্তা করি ততই আমরা খারাপ জিনিস অর্জন করি। আবার আমরা যতই ভালো চিন্তা করি ততই ভালো জিনিস অর্জন করি। আপনি যদি শিক্ষিত মানুষ হয়ে চোর, ডাকাত ও দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ হতে চান তাও হতে পারবেন। কারণ, আপনি এসব নষ্ট চরিত্রের মানুষ হওয়ার জন্যই সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেদিন আমরা জন্ম গ্রহণ করেছি সেইদিন আমরা পুতপবিত্র ও ভালো মানুষ হয়ে জন্ম করেছি। আমাদের জন্মে আমরা কেউ চোর-ডাকাত-দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ ছিলাম না। আপনি তো সিদ্ধান্তই নিয়েছেন ভালো মানুষ না হয়ে চোর-ডাকাত-দুর্নীতিপরায়ণ সন্ত্রাসী মানুষ হওয়ার জন্য। আপনি যে একজন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষিত মানুষ হয়েও মূর্খ মানুষে পরিণত হয়ে গেলেন, একটি

বারও কি ভেবে চিন্তে দেখেননি? আপনার-আমার সন্তানদের প্রয়োজনে হলেও অন্তত আমরা যেন চোর-ডাকাত-দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ না হয়ে, ভালো মানুষ হয়ে এই পৃথিবী থেকে বিদায় গ্রহণ করি। তাদেরকে যেন আমাদের কৃতকর্ম দ্বারা সন্মানজনক স্হানে রেখে বিদায় গ্রহণ করি। দেখুন একটা কথা বলি, মূর্খতারও সীমা থাকে। কোন কিছুরই সীমা অতিক্রম করলে এই সীমার অতিক্রান্ত শক্তির শক্তিটুকুও আপনার কাছেই ফিরে এসে আপনাকে ভুগিয়ে বড় করেই পীড়ার জ্বালা দিবে। এই পীড়ার যন্ত্রণা আপনাকে যে ভোগ করে অশান্তির প্রাণ নিয়ে যে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে তা অনেকটা নিশ্চিত কল্পেই বলা যায়। কেউ-ই মূর্খতার পীষণের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়নি। আপনি যদি মনে করেন আপনার কোন খারাপ কাজে আপনি কোনই কষ্ট পাবেন না, সেই আশাটা না করাই বাতুলতা। আপনার নষ্ট কাজের নষ্টামীর ভারটি কিন্তু আপনার সন্তানদের মাথার ওপর রেখে গেলেন বংশানুক্রমিক ভাবে। দেখুন না, মূর্খ মানুষগুলোর মূর্খতার চিন্তা-কর্ম প্রতিটি জাতি গোষ্ঠীর ওপর রেখে গেলেন। তাদের মূর্খতার নষ্টতার ভার সমাজ রাষ্ট্রের ওপর এমন ভাবে বিস্তার লাভ করে আছে, মানুষ না বুঝেই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় যুদ্ধে লিপ্ত থেকে পরস্পর পরস্পরের ক্ষতিসাধন করছে। অথচ ওরা যে জন্য ক্ষতিকর কাজটি করে নিজেরাই ধ্বংস হচ্ছে বা মারা যাচ্ছেন সেটির আসল কারণও তারা সঠিক ভাবে উপলব্ধি করে জানেন না। মানুষ যখনই মূর্খতার সীমা অতিক্রান্ত করে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেই মরেণ। যে কারণে তাদের ক্ষতিটা হলো সেটাও তারা জেনে মারা গেলেন না। কারণ, তারা সীমা অতিক্রমকারী মূর্খ মানুষ।

4) “Those at the top are those men and women who have done the jobs they had with everything they had of energy,enthusiasm and hard work.”-Harry S. Truman

আমার ভবিষ্যত আমি। তোমার ভবিষ্যত তুমিও। আমার জীবন আমার

চিন্তা ও কর্মের ওপর নির্ভরশীল। তুমি যদি তোমার জীবনে বৈষয়িক উন্নতি চাও, তুমি বর্তমানে যে কাজটি করে সময় অতিক্রান্ত করছো তাতে যদি নতুন কিছু অর্জিত না হয়, সেই ক্ষেত্রে শুধুই জীবন থেকে সময় অতিক্রান্ত করে জীবনকে পিছনে দিকেই ফেলে দিচ্ছ। তোমার

জীবনের প্রতি মনোসংযোগ করার জন্য যে মনন শক্তির প্রয়োজন তার জন্যও যোগ্যতা শক্তিকে দূরে রেখে জীবনে সাফল্য অর্জন কঠিন হয়ে পড়ে। কিছু কিছু মানুষের অন্তরের মূর্খতা মারাত্মক জটিল রোগের চেয়েও অধিক বেশি ভয়ানক। যারাই এই ভয়ানক মানুষরুপী মূর্খ রোগীর মুখোমুখি হয়ে জীবন অতিক্রান্ত করে যাচ্ছেন, তারাই শুধু জানেন কত বড় ভয়ঙ্কর মানুষ তারা। এরা আমার-আপনার পাশেই

হাঁটাহাঁটি করেন। আমার-আপনার সাথেই কথা বলে হাসাহাসি ও আনন্দ উল্লাসে করে মানুষের কাছে ভালো মানুষের স্বীকৃতি আদায়েও ব্যস্ত থাকেন। সমাজে ও রাষ্ট্রে ওরা আমাদের সকলকে শাসনও করে যাচ্ছেন দায়িত্বশীল কোন পদে বসে। অন্তরের মূর্খতা দূরীভূত না করে যোগ্যতা শক্তির দিকে প্রাধান্য প্রদান করাও দূরহ। আমরা যদি আমাদের হৃদয়কে বড় করে মানুষের কল্যাণে কাজ না করি, অন্তরের ভেতরে নানা স্হান থেকে আবর্জনার মতোই নোংরা উপাদান যুক্ত হতে থাকে। অন্তরে স্তুপীকৃত এই আবর্জনা পরিস্কার করার জন্য রাস্তা পরিস্কার করার মতো বড় ধরনের ঝাঁটা মেশিনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই ঝাঁটা মেশিন যদি একবার তোমার-আমার জীবনে অন্তরের আবর্জনা পরিস্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে তাহলে সারাকাল এই আবর্জনা পরিষ্কারের মেশিন ব্যবহার করে যেতেই হবে। আমাদের অন্তরে সব সময়ই কিছু না কিছু ধূলোবালি থেকেই যায়। যে ধূলোবালি সমস্ত ঘরকেই ধূলান্ধাকার করে রেখে পরিবারের সকল আলো নিভিয়েও দিতে পারে। আমরা যদি আমাদের সুন্দর বাড়িটি প্রিয় মনে করে প্রতিদিন ঘরের দরজা জানালা দিয়ে নির্মল স্নিগ্ধ আলো বাতাস ঢুকতে দিয়ে ঘরের প্রত্যেকটি রুমকে মনোরম সৌন্দর্য ও ভালোলাগার আবহ তৈরি করে রাখি, বাহির থেকে মানুষ ঘরে প্রবেশ মাত্রই মনোরম প্রাণের ভালোলাগার অনুভব অন্তরে অনুরিত হতে থাকবে। তোমার-আমার অন্তর যদি বিছানা পরিস্কার করার মতো প্রতিদিন ঝাড়িয়ে ঝাড়িয়ে পরিস্কার করে রাখি, অন্তরে কখনোই আবর্জনা যুক্ত হয়ে আমাদের অন্তর ধূসর বর্ণ ধারণ করে

কালো হয়ে যাবে না। আমরা মানুষ হিসেবে সুখদুঃখ নিয়ে জীবন যাপন করলেও তাতে বড় দুঃখ নেই, কিন্তু আমাদের অন্তরের ভেতর আবর্জনা যুক্ত হয়ে তা যদি স্তুপাকার ধারণ করে, এই আবর্জনার স্তুপ চিরকালের জন্যই চিরস্থায়ী হয়ে পড়ে। যারাই এই আবর্জনার স্তুপের পাশে যাবে,

তারা এসব আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ সংগ্রহ করে চারিদিকেও ছড়িয়ে দিতে পারে। মানুষের কিছু কিছু রোগ আছে একটি নির্দিষ্ট স্হানে শুরু হলেও তা সর্ব শরীরেও ব্যথা জড়িয়ে দেয়। এই সর্ব শরীরের ব্যথা যখন তীব্র আকার ধারণ করে, রোগী তখন জীবনের সমস্ত কিছুতেই হতচৈতন্য ও দূর্ভাগা মানুষ বলেই বিবেচিত করেন। তোমরা তোমাদের নিজেদের ঘরে স্বচ্ছ আলো বাতাস প্রবেশ করার জন্য যদি দরজা জানালা খোলার ভয় পেয়ে থাক, উন্মুক্ত আকাশের সৌন্দর্য দেখার সুযোগ কখনোই হবে না। তুমি যদি তোমার হৃদয়কে আকাশের মতো বড় করে উন্মুক্ত করতে না শিখ, অন্তরের ভেতর আবর্জনার মতোই হাজারো রকমের বর্জ্য পদার্থ স্তুপীকৃত হতে থাকবে। যা দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলে হৃদয়ের আসল রুপটি ধূসর বর্ণের বর্জ্যরসে পরিণত হয়ে যায়। আমরা সত্যিই যদি আমাদের হৃদয়ের যত্ন করার প্রাণ হারিয়ে ফেলি, একদিন নিজেদেরকে মনে হবে সারাকাল শুধুই মূর্খতাকেই যত্ন করে চলেছি। তোমার বাগানের গাছগুলো যখনই পুষ্প-পল্লবে নিজস্ব রুপ-সৌন্দর্য

দিয়ে স্বস্ব স্হানে আসীন থেকে। আমরা প্রত্যেকেই যদি আমাদের অন্তর থেকে ফুঁটে উঠে ফুলের মতোই সুগন্ধ দান করতে পারি, মানুষ পরস্পর পরস্পরে ঘষামাজার জীবন থেকেও মুক্ত হতে পারেন।

মানুষকে সুগন্ধি দানের পূর্বে আমরা যেন হাড়ি পাতিলের মতো ঘষামাজা জীবনে চলে না যাই। আমাদের এই পরস্পর পরস্পরের ঘষাঘষির জীবন থেকে রাজনৈতিক যুদ্ধ, অর্থনৈতিক যুদ্ধ এমন কি ধর্মীয় যুদ্ধে পৃথিবীর অনেক দেশ আজ এর নিজস্ব সৌন্দর্য নষ্ট করে চলছে। আপনি যখনই কারো চামড়ার ওপর ঘষা দিবেন, তাদের নিজেদের চামড়া যাতে ছিড়ে না যায় সেই জন্যই তো তারা তাদের চামড়াকে রক্ষা করার চেষ্টা করবেনই। তুমি তোমার মতো চলো। আর আমি আমার মতো চলি। এই নিয়ম মেনেই পরস্পর পরস্পরে নির্ভরযোগ্য সম্পর্ক স্থাপন করে যার যার স্বকীয় দায়িত্ব পালন করাই উত্তম। আমরা যত কিছুই করি অন্য মানুষের চামড়ার ওপর যতই ঘষা দিতে চাইব, ততই আমাদের নিজেদের চামড়া অন্যদের ঘষাতে ছিড়ে যাবার উপক্রম হবার সম্ভাবনাও থাকে। তা যদি করি আমরা আমাদের জীবনে মূর্খতার সীমা অতিক্রম করে সমাজ ও রাষ্ট্রে বড় করেই মূর্খতার পরিচয় দিয়ে থাকি। তুমি ধর্মকর্ম, সমাজকর্মী, রাজনৈতিক নেতা হিসেব

যত কিছুই করে জীবন চালিত করে চল না কেন, তুমি যে একজন

ভালো মানুষ তা কিন্তু কিছুতেই বলা যায় না। তুমি যদি মানুষের মনকে ফুলের মতো ফুঁটিয়ে তোলার মন তৈরি করতে পারো তবেই তুমি ভালো মানুষ হবার উপযুক্ত হতে পারো। কারণ, পাপ ও অপরাধ কর্মের সাথে যারাই নিযুক্ত থাকেন, তারা কিছুতেই ভালো মানুষ হওয়ার যোগ্য নয়। তুমি যখনই মানুষ হিসেবে পৃথিবীর যে কোন মানুষকে তোমার অন্তরের পরম ভালোবাসা ও হৃদয়ের পরম অনুভূতি দিয়ে মায়া করে যাবে তবেই তুমি অন্য মানুষের মনকে ফুলের মতো ফুঁটিয়ে তুলতে পারবে। অন্যকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসার মাধ্যমেই বিবেক ও মনুষ্যত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করার প্রাণ তৈরি হবে। পৃথিবীর যে কোন দেশের যে কোন মানুষই বৃহত্তর জিনিস অর্জনই করে থাকুক না কেন, তা যদি মানবতা বিরোধী হয়ে যায়, হাজার বছর পরে হলেও ঐ চেতনা শক্তিটির পতন হবে। মানুষের যে চিন্তা ও কর্ম মানবতা বোধের মূল চেতনাকে ধ্বংস করে, সেই ধ্বংসাত্বক স্তুপ থেকেও সেই চেতনা শক্তির বিকাশের রুপটি স্হায়িত্ব লাভের নতুন মুখ খুলে। যে মুখটি খুলে মানুষ ভেতরে গিয়ে শান্তি ও সুখ পেতে চায়। যারাই তা বন্ধ করার চেষ্টা করেন তারাই তাদের সেই বন্ধ করা নিজের শক্ত কপাটেই আটকে যাবেন। তোমার-আমার অন্তরের আলোক শিখা নিভো নিভো রেখে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য মহত্বের ও বৃহত্তর কাজ করা দূরহ হয়ে পড়ে। কারণ, যা তুমি বোঝ না বা তুমি দেখতে পাও না তা তুমি অন্যকে বোঝাতে যেমন পারবে না, তেমনি তা অন্যকে দেখাতেও পারবে না। আমরা যদি সত্য সুন্দরের সন্ধানের জীবনকে অন্তরের অনুভূতির চেতনায় পরিচালিত করি, অন্তরের ভেতরে যে কখনো কখনো লোভ লালসার কারণে হিংস্রতা ও নিষ্ঠুরতার মতো মূর্খতার চেতনা উদিত হয় তা যেন দূরে রাখি মনুষ্যত্বের বিকাশের জন্য। মানুষের জীবন চালিত করার ক্ষেত্রে মূর্খতার সীমা যখনই অতিক্রম করতে শুরু করে, তখনই তারা বিবেক ও মনুষ্যত্বের শক্তির চেতনা থেকেও অন্তরের ভেতরেই নির্মূল হতে থাকে।

“It takes time to succeed because success is merely the natural reward of taking to do anything well.”–Joseph

লেখক: কলামিস্ট, গবেষক ও সমাজ বিশ্লেষক

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর