৯০ দিনের মধ্যে আছিয়া হত্যার বিচার কার্যকর দেখতে চাই : জামায়াত আমির

সময়: 10:34 am - March 15, 2025 |

মানব কথা: এই শিশুর হত্যাকারীদের বিচার আমরা দ্রুত দেখতে চাই এবং বিচার কার্যকর হয়েছে এটাও আমরা দেখতে চাই। তাহলে হয়তো এ পরিবার একটু মানসিক সান্ত্বনা পাবে। দেশবাসী একটা সান্ত্বনা পাবে এবং এ রকম যারা লম্পট তারা ভবিষ্যতে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সর্তক হবে।

মাগুরায় শিশু আছিয়া খাতুনের পরিবারের সাথে দেখা করতে গিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা এ শিশু হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার শুধু দেখতে চাই না, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে তা দেখতে চাই। সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে বিচার ও তার রায় কার্যকর দেখতে চাই।’

আজ শনিবার সকালে মাগুরায় আছিয়ার কবর জিয়ারত শেষে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সোনাইকুন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরে মাগুরা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন তিনি।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর হাইস্কুল মাঠে অবতরণ করেন জামায়াত আমির।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পিছনে বিচারহীনতাকে দায়ী করে বলেন, ‘ধর্ষণের শাস্তি সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড থাকলেও কয়জনকে তা প্রদান করা হয়েছে।’ দেশে যদি ধর্ষণের রায় দ্রুত কার্যকর করা যেত তাহলে ধর্ষণের হার কমে যেত বলে তিনি মনে করেন।

ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়ার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের পাশে থাকার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত দোয়া নিতে এসেছি। তাদেরকে সান্ত্বনা দিতে এসেছি। তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে এসেছি। তাদের পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায়, তা বুঝতে এসেছি।’

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে জামায়াতে আমির বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ শুধু আছিয়া নয়, আছিয়ার বিষয়টা অবশ্যই, এর পাশাশাশি সমাজে এ ধরনের ভয়ঙ্কর যত অপরাধ সংগঠিত হবে আপনারা সাংবাদিক মহল সত্যকে সত্য হিসেবে তুলে ধরবেন। সাদাকে সাদা হিসেবে তুলে ধরবেন এবং কালোদের চেহারা সমাজের সামনে আপনারা খুলে দেবেন। যাতে করে ওদের শাস্তি নিশ্চিত হয়। সমাজ তাদের ঘৃণার পাশাপাশি বয়কট করবে। আমরা এমন সমাজ আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করি।’

তিনি আরো বলেন, এই মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার আমরা দ্রুত দেখতে চাই এবং বিচার কার্যকর হয়েছে এটাও আমরা দেখতে চাই। তাহলে হয়তো এ পরিবার একটু মানসিক সান্ত্বনা পাবে। দেশবাসী একটা সান্ত্বনা পাবে এবং এ রকম যারা লম্পট তারা ভবিষ্যতে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সর্তক হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এর আগেও এ রকম লম্পটদের হাতে অনেক মা-বোন ও মেয়ের জীবন তছনছ হয়েছে। যখন জনগণ কথা বলে তখন তাদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এরপর আর কোনো বিচার দেখি না। এ বিচারহীনতার কারণে একটার পর একটা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি আমাদের সমাজে অপসাংস্কৃতির সয়লাব।

তিনি বলেন, ভারতীয় আকাশ অপসংস্কৃতির ছোবলে ঘরে ঘরে আজকে এ নিলজ্জতা ও বেহায়া ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বলেছে এক সপ্তাহ না, এক সপ্তাহে হবে না। আমরা এ জন্য ৯০ দিন বলেছি। কিন্তু আমরা ৯১ দিনে দেখতে চাই না।

বক্তব্য শেষে আছিয়ার আত্মার মাগফিতার কামনায় দোয়া করা হয়।

এরপর জেলা জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আছিয়ার পরিবারের খবর নিতে আছিয়ার বাড়িতে যান। সেখানে তিনি আছিয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন ও সবার খোঁজখবর নেন।

এ সময় ডা. শফিকুর রহমানের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও কুষ্টিয়া মাগুরা অঞ্চলের নায়েবে আমির মোবারক হোসাইন।

আছিয়ার পরিবারের সাথে কুশল বিনিময় শেষে সব্দালপুর হাইস্কুল মাঠে রওনা হয়ে সেখান থেকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন জামায়াত আমির।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর