আওয়ামী লীগের আমলে মাদক ব্যবসায়ীদের ভাগ্য নির্ধারন হতো চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরের পানশালায়
রাজশাহী প্রতিনিধি: গোদাগাড়ী এলাকা মাদকের জন্য বেশ পরিচিত। এই ব্যবসা করে শুন্য থেকে অনেকেই হয়েছেন কোটিপতি। আবার কেউ মাদক ব্যবসায়ীদের রক্ষা করেও হয়েছেন কোটিপতি। মাদক কারবারিরা দল বদল হলেই তারা রুপ বদলায়।যখন যে দলের সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলেই তাদের বিচরণ। সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে মিশে গিয়ে করেন তাদের ব্যবসা পরিচালনা। বিগত ১৫ বছরে এমনটি দেখেছেন সচেতন মহল।
তারা বলছেন, এই মাদক কারবারিরা এক সময় বিএনপির সাথে থাকলেও আওয়ামী লীগের আমলে দেখেছি তাদের ঢের দাপট। টাকার বিনিময়ে কিনেছেন নেতাদের। র্যাব, পুলিশ, ডিবিকে ম্যানেজ করেছেন আওয়ামী নেতাদের মাধ্যমেই। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বাধাহীন ব্যবসা করেছেন মাদক কারবারিরা। অগাধ টাকা আর আওয়ামী নেতাদের দাপটেই জুলুম করেছেন অবৈধ ব্যবসায়ীরা। সন্ত্রাসীদের পেছনেও ঢেলেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। আওয়ামী লীগের সংগঠনের বিভিন্ন সভা সমাবেশের খরচ বহন করতেও দেখা গেছে তাদের। এসব অবৈধ মাদক কারবারিদের দলীয় প্রভাবে রক্ষা করেছেন আওয়ামী নেতারা।
মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ অগাদ টাকার বিনিময়ে কিনেছেন দলীয় পদ। এই পদ ব্যবহার করে মাদক মামলা থেকে রেহায় পেয়েছেন তারা।
জানা যায় গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল ইসলাম নাসিম এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের যোগসাজশে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী দলের ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা করেছেন। এদের মধ্যে সারাংপুরের গোলাম কাওসার মাসুম, সরমংলা লালবাগের মিজান ও মোর্ত্তজা ওরফে বিটিশ, মহিশালবাড়ির ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম ও ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোফা, পদ্মা চর জেলেপাড়া এলাকার পিয়ারুল ইসলাম, ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল জাব্বার, ডাঙ্গা পাড়ার কানা মাহবুব ও জাহাঙ্গীর, মেডিকেল মোড়ের দুরুল হোদা, রেলগেটের বাবু মেম্বার ও নয়ন ডাক্তার, ফাজিলপুর এলাকার আনারুল, রেলবাজারের তোফায়েল অন্যতম।
একটি সুত্র বলছে সরমংলার মিজান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসলে বিশ মন মিষ্টি বিতরণ করেন তার নিজ এলাকায়। তার নামে বেনামে ৬০ বিঘা জমি, রাজশাহী মহানগরীতে বসবাস উপযোগি কয়েকটি ভিটা মাটি ক্রয় করেছেন তিনি। সরমংলা এলাকায় করেছেন আলিশান বাড়ি। যার মোট সম্পদ পঞ্চাশ কোটিরও বেশি। তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা সমাবেশে খরচ ডোনেট করতেন বলেও জানা যায়। মিজান ২০২০ সালে সরকার মাদক ব্যবসায়ীদের চাপ সৃষ্টি করলে তিনি প্লট ব্যবসায় নাম লেখান।আড়ালে করেন মাদক ব্যবসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কন্সটেবল জানান, গভীর রাতে মাদক ব্যাবসায়ীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম ও যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে সার্কেল এসপি ও ওসির উপস্থিতিতে মিটিং চলতো। মিটিংয়ে ঠিক করা হতো কোন মাদক ব্যবসায়ীর কাছে মাসিক কত টাকা নেবেন। মাসে কয়েক কোটি টাকা আদায় করা হতো অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।
তিনি আরও বলেন, গোপনে মিটিং করার জন্য জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের পানশালা খ্যাত ধানের চাতাল মফস্বল এলাকায় সার্কেল এসপির অফিস নেওয়া হয়। গোপনে মিটিংয়ে নির্ধারন করা হতো কোন ব্যবসায়ীকে থানায় উঠিয়ে আনা হবে আর কার কাছে কত টাকা নেওয়া হবে। সেখানে মধ্যপানের আয়োজন করা হতো বলেও জানান তিনি।