নতুন ডিজাইনের নোট সম্পর্কে যা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক

পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই নতুন ডিজাইনের টাকা বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১ জুন থেকে প্রথমবারের মতো নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট বাজারে প্রচলন শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সকল মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট আগামী ১ জুন থেকে প্রথমবারের মতো বাজারে প্রচলনে করা হবে।
এতে আরো বলা হয়, নোটগুলো সেদিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে। এ সকল মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সকল কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে।
এছাড়া মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা টাকা জাদুঘর, মিরপুর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
নতুন নোটের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
১০০০ টাকার নোট : নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’-এর মুখ, ‘১০০০’ ও ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।
1000
নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার এর ছবি ও মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে।
পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা-এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈবশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে, যাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’ অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার উপর থেকে নিচে উঠানামা করে।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে
‘১০০০’ লেখা দৃশ্যমান হবে।
৫০ টাকার নোট : নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগা ‘-এর মুখ’, ‘৫০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামী রঙের আধিক্য রয়েছে। ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা-এর ছবি এবং মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (পঞ্চাশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে।
নোটের পেছনভাগে জলছাপ এলাকার ডানপাশে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’ মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘৫০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘৫০’ মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ২ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা যাতে ‘১০০০ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘৫০’ লেখা দৃশ্যমান হবে।
২০ টাকার নোট : নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’-এর মুখ, ‘২০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুর-এর ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে।
নোটের পেছনভাগে জলছাপ এলাকার ডানপাশে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, নওগাঁ-এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘২০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডানকোণে মূল্যমান ‘২০’ মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ৫ ধরনের নিরাপত্তা বৈবশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ২ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘২০ বিশ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘২০’ লেখা দৃশ্যমান হবে।