মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ যুবক

মানব কথা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর এলাকায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন, যাদের বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
ঘটনা ঘটে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে, দুই দফায়। নিহতরা হলেন সুজন ওরফে বাবুল (১৯) ও হানিফ (২৬)। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোররাতের দিকে নবীনগর হাউজিং এলাকায় জনতা ছিনতাইকারী হিসেবে দুই যুবককে ধরেছে এবং গণপিটুনি দিয়েছে।
প্রথমে, ১৬ নম্বর হাক্কারপাড়া রোডে ছিনতাই করতে গিয়ে সুজনকে ধরে জনতা মেরেছে। পরে পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে রেফার করা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই এলাকায় অপর যুবক হানিফও ছিনতাই করতে গিয়ে জনতার হাতে আহত হন। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হানিফও মারা যান। নিহত দুজনই মোহাম্মদপুর থানার বছিলা ৩নং রোড এলাকার বাসিন্দা।
ওসি রফিক জানান, নিহতদের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে চারটি করে মামলা রয়েছে, যা ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ঘটনায় শরীফ ও নাটা ফয়সাল নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত তিনটার পর স্থানীয় জনতা সুজন ও শরীফকে গণপিটুনি দেয়। আহত অবস্থায় তাদের পুলিশ হাসপাতালে পাঠানোর পর সুজন মারা যান। ভোররাতের দিকে ফয়সাল ও হানিফকেও গণপিটুনি দেওয়া হয়, পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে হানিফের মৃত্যু হয়।
এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন, ঘটনাস্থলে চায়ের দোকানদার জাহিদ, হাউজিং এলাকার নাইটগার্ড মালেক, হাবিব, হাসনাইন, মোহাম্মদ মালেক, মুরগি ব্যবসায়ী আলামিন ও তার ভাই কবির এবং বাড়ি মালিক সমিতির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আহতদের রক্তের দাগ চায়ের দোকানদার জাহিদ মুছে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
নাটা ফয়সাল ও তার বন্ধু ‘রক্তচোষা জনি’ স্থানীয় পেশাদার ছিনতাইকারী এবং গাঁজা বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরেই নবীনগরে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।