সালিশ বিচার থেকে বিরত থাকার কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মানছেন না স্থানীয় বিএনপি নেতা

সময়: 10:40 am - September 19, 2025 |

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির হাইকমান্ড স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ বিচার, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তি, পাওনা আদায় ইত্যাদি বিরোধ নিস্পত্তিতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য কঠোর নির্দেশনা প্রদান করলেও সেটি মানছেন না খুলনা জেলার অন্তর্ভুক্ত দিঘলিয়া উপজেলার বিএনপির আহবায়ক সাইফুর রহমান মিন্টু মোল্লা।
গত ২৮ আগস্ট দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে হট্টগোল ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে দেখা যায়। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ওই ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ভুক্তভোগীকে গালি দেওয়ার পাশাপাশি গায়ে হাত তুলতে দেখা যায়। এসময় দিঘলিয়া বিএনপির আহবায়ক মিন্টু মোল্লার ক্যাডার হিসেবে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জনি উপস্থিত রয়েছেন। স্থানীয় ইট ভাটা, নগর ঘাট মার্কেট ও গোডাউনের মালিক স্বনামধন্য ব্যবসায়ী মোঃ খলিলুর রহমানকে তার পরিবারের উপস্থিতিতে বিচার মানতে চাপ প্রয়োগ করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষই উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার সামনে হাতাহাতি ও গালিগালাজ করতে থাকেন। বিব্রত পুলিশ কর্মকর্তা উভয় পক্ষকেই তখন অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেন। ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের অভিযোগ, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মিন্টু মোল্লা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ইটভাটা পরিচালনার একটি জাল চুক্তিনামা তৈরি করেছেন এবং সেই জাল চুক্তিনামাকে প্রকৃত দলিলনামা হিসেবে মেনে নিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপের পাশাপাশি পুলিশি হয়রানি করছেন। পুলিশের উদ্যোগে বিষয়টি সুরাহ করতে গেলে তিনি সকলের উপস্থিতিতে দুর্ব্যবহার করেন। ভুক্তভোগীরা আরো অভিযোগ করেন, থানার ভেতরে জমি দখলের পায়তারা করেন এবং শারিরীক হয়রানির নিমিত্তে হামলা বা মারধরের হুমকি দিয়ে থাকেন মিন্টু মোল্লা।
স্থানীয় সাধারণ অধিবাসীরা জানান, মিন্টু মোল্লারা বিএনপির জন্য অভিশাপ। তিনি বিএনপির ক্ষমতা ব্যবহার করে দখলবাজি, চাদাবাজী, মামলাবাজি ইত্যাদি অপরাধের সাথে যুক্ত আছেন। তার কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
ইট ভাটার মালিক ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ব্যবসায়িক পার্টনার সেলিম রেজা ওরফে আবদার যোগসাজশে দিঘলিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মিন্টু মোল্যা আমার ইটভাটা জোর করে দখল করতে চাই। এসব বিষয় নিয়ে গত ২৮ আগস্ট থানায় সালিশী বৈঠক চলাকালে মিন্টু মোল্যা আমার ওপর চড়াও হয় এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। তিনি বলেন, থানার মধ্যে ওই হট্টোগোলের কারণে মিমাংসা আর হয়নি। আমাকে বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এজন্য থানায়ও একটি জিডি করেছি। ব্যবসায়ী খলিল বলেন, মিন্টু মোল্যা একজন চাঁদাবাজ। কেউ এলাকায় বাড়ী করতে গেলেও তাকে চাদা দিতে হয়। আমার এবং অন্যান্য ভাইদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে নগদ টাকা এবং ইট মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে। এই চাঁদার প্রতিবাদ করায় মূলত আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ইটভাটার ওপর নজর দিয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে মিন্টু মোল্যার ব্যক্তিগত মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পাওয়া গেছে। এজন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর