গণপূর্তের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ন চেয়ারে বসলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ খাইরুল ইসলাম, এই নিয়ে অধিদপ্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
মানব কথা ডেস্ক:গণপূর্ত অধিদপ্তর এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ঢাকা মেট্রোপলিটন জোন হলেন জনাব মোঃ খাইরুল ইসলাম। গত ২৮ অক্টোবর ২০২৫খ্রিঃ তারিখে জনাব খালেকুজ্জামান চৌধুরী প্রধান প্রকৌশলী হলে দীর্ঘদিন এই চেয়ারটি ফাঁকা ছিলো। কথিত আছে, প্রধান প্রকৌশলীর পরে এটি দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ন চেয়ার, তাই এটি পেতে মুখিয়ে থাকেন যোগ্যদের অনেকেই। জানা যায় এই দৌডে ছিলেন ১৫ বিসিএস এর জনাব আবুল খায়ের, ১৭ বিসিএস এর জনাব কাজী আবু হানিফ ( চট্টগ্রাম জোন), কাজী ওয়াসিফ (সিলেট জোন), গফফার , শাহা জালাল মজুমদার প্রমুখ। প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বাধ্য মতো তদবীর করে গেছেন। ফলে গুরুত্বপূর্ন এই চেয়ারটিতে রেগুলার পদায়নে বিলম্ব হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তর এর জেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিনিয়র মোস্ট হিসাবে জনাব খায়েরই হয়তো এই চেয়ারটি পাবেন। আবার অনেকের মতে, কাজী ওয়াসিফ দীর্ঘদিনের মাঠ পর্যায়ে অভিজ্ঞ ও স্মার্ট, ফলে এই পদের যোগ্যতম দাবিদার। অবশেষে ১৬ নভেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ২৫.০০.০০০০.১৩০.১২.০০১.১১.৮৭ স্মারকে জনাব মোঃ খাইরুল ইসলামকে এই পদে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। খাইরুল নিজেকে প্রধান প্রকৌশলীর সবচেয়ে আস্থাভাজন প্রমান করতে সক্ষম হয়েছেন। এর পাশাপাশি খাইরুল ইসলাম নিজের একটি দূর্নীতিমুক্ত এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজ গড়তে সক্ষম হয়েছেন। ফলে কর্মকর্তা ও অংশীজনদের বড় একটি অংশ এই প্রজ্ঞাপনটিকে সুদৃষ্টিতে দেখছে মর্মে প্রতিভাত হয়। ফলে পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী হবার দৌড়ে তিনি স্পষ্টতই এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। তবে তার বিরোধী শিবিরও থেমে নেই, তারা তাকে এধরনের পরিচ্ছন্নতার সনদ দিতে রাজি নন। তাদের মতে তার বিরুদ্ধে পক্ষপাত দুষ্ট হয়ে রাষ্ট্রের স্বার্থক্ষুন্ন করে অভিযুক্তকে বাচিয়ে দেয়ার প্রমান রয়েছে। শেরে বাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ ১ এর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল হক মধুর বিরুদ্ধে নিউরো সাইন্স হাসপাতাল নির্মান কাজে জিকে শামীম কে ১০ কোটি টাকা অগ্রীম বিল দেয়ার অভিযোগে অধিদপ্তরের গঠিত প্রাথমিক তদন্ত কমিটির প্রধান হিসাবে তিনি ফজলুল হক মধুকে দায় মুক্তি দিয়ে প্রতিবেদন দেন। তিনি প্রচলিত পিপিআর ও আর্থিক বিধির ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রতিবেদনে বলেন যে, জিকে শামীমের অন্যান্য কাজের সিকিউরিটি মানি ( নিরাপত্তা জামানত) থেকে অগ্রীম বিল সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে। যদিও তার এই গোজামিল মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিতে ধোপে টেকেনি, ফলে মধুকে দুই বছরের জন্য বেতনের নিম্ন ধাপে অবনমনের শাস্তি দেয়া হয়েছে। তাদের ভাষ্য মতে , এক মাত্র মুন্সীগঞ্জে কয়েকদিন উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর পদে দায়িত্ব ছাড়া , মাঠ পর্যায়ে কখনো দায়িত্ব পালন করেন নি। ফলে তার মাঠ পর্যায়ে অভিজ্ঞতার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। তাছাড়া তিনি ফ্যাসিবাদের সময়ে একাদিক্রমে চার জন প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ ইয়ামিন(২ বছর) কবির আহমেদ ভূঁইয়া ( সাড়ে চার বছর) , হাফিজুর রহমান মুন্সী (১ বছর) , রফিকুল ইসলামের(ছয় মাস) সময়ে স্টাফ অফিসারের মতো গুরুত্বপূর্ন চেয়ারে ছিলেন। তিনি ফ্যাসিবাদের সাবেক শিল্প মন্ত্রী নূরুল মাজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এর ঘনিষ্ট ছিলেন। তাছাড়া কুষ্টিয়া মেডিকেলে নানা অনিয়মের অভিযোগে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগন জবাব দিহিতার আওতায় আসলেও, ২০১৯ সালে তিনি পিপিসির দায়িত্ব থাকাকালীন ৭০ কোটি টাকার দরপত্র ভবন থেকে আহবান করেও থেকে গেছেন ধরা ছোয়ার বাহিরে। ঢাকার বাহিরে আজীবন চাকুরি করা বঞ্চিত কর্মকর্তারা আক্ষেপের সুরে বলেন, তিনি কখনও ঢাকার বাহিরে চাকুরি করেন নি, ফ্যাসিবাদের সুবিধা নিয়ে করেছেন ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচে সরকারি সফর; অথচ তিনিই আবার প্রাইজ পোস্টিং পেলেন। গনপূর্তের স্টেইকহোল্ডারদের সাথে কথা বলে জানা যায় তার খোকন, রঞ্জু, লিটনসহ জিকে বিল্ডার্স; এনডিই; দ্য আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আর্কিটেক্টস এর প্রতি বিশেষ সফট কর্নার রয়েছে। এদেরই এক জন তাকে গুরুত্বপুর্ন চেয়ারে বসিয়েছেন মর্মে কয়েক জন ঠিকাদার জানান। এই সব বিতর্ককে পাশ কাটিয়ে তিনি কতটুকু নিজেকে মেলে ধরতে পারেন সেটা সময়ই বলে দিবে।


















