কেন সন্তানরা বড় হলে বাবা-মায়ের কাছে কম যায়

সময়: 1:30 pm - November 19, 2025 |

মানব কথা:প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানরা বিভিন্ন কারণে বাবা-মায়ের কাছে কম যেতে পারে। এটি প্রায়শই স্বাধীনতার স্বাভাবিক পরিবর্তন এবং জীবনের নতুন অগ্রাধিকারের কারণে ঘটে থাকে।

পেশাগত ও ব্যক্তিগত ব্যস্ততা

ক্যারিয়ার এবং পরিবার: প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানরা প্রায়শই তাদের নিজস্ব ক্যারিয়ার তৈরি করতে এবং পরিবার শুরু করতে ব্যস্ত থাকে। এই নতুন দায়িত্ব এবং অগ্রাধিকারের কারণে তাদের বাবা-মায়ের সাথে দেখা করার জন্য সময় কমে যায়।

ভৌগোলিক দূরত্ব: কাজের সুযোগ বা জীবনধারার পরিবর্তনের কারণে অনেকে বাবা-মায়ের থেকে দূরে অন্য শহর বা দেশে চলে যায়। এই ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে নিয়মিত দেখা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

সময়সূচির সীমাবদ্ধতা: প্রত্যেকেরই নিজস্ব ব্যস্ত জীবন থাকে। ছুটি বা অবসর সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঘন ঘন দেখা করা সম্ভব হয় না।

মানসিক ও আবেগগত কারণ

স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা: প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সাথে সাথে সন্তানরা ব্যক্তিগত স্থান এবং আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের চেষ্টা করে, যা বাবা-মায়ের থেকে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করে। এটি একটি স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়া।

সীমানা নির্ধারণ: প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানরা প্রায়শই তাদের বাবা-মায়ের সাথে নতুন করে সীমানা নির্ধারণ করার চেষ্টা করে। যদি বাবা-মা এই সীমানাগুলিকে সম্মান না করেন বা অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ করেন, তবে দূরত্ব তৈরি হতে পারে।

অনুত্তরিত দ্বন্দ্ব বা শৈশবের সমস্যা: শৈশবের অমীমাংসিত সমস্যা, মানসিক অবহেলা, বা নির্যাতনের মতো বিষয়গুলি প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে বাবা-মায়ের সাথে সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

যোগাযোগের ধরন: অকার্যকর যোগাযোগ বা ঘন ঘন মতবিরোধ সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে। যখন সন্তানরা মনে করে যে তাদের কথা শোনা হয় না বা তাদের অনুভূতি বোঝা হয় না, তখন তারা দূরত্ব বজায় রাখতে পারে।

মূল্যবোধের পার্থক্য: প্রজন্মগত ব্যবধান এবং মূল্যবোধ, যেমন রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিশ্বাস, জীবনধারা বা পরিচয় নিয়ে মতপার্থক্য সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারে।

অন্যান্য কারণ

মানসিক চাপ এবং অপরাধবোধ: অনেক প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান বাবা-মায়ের কাছে কম যাওয়ার জন্য অপরাধবোধে ভোগেন। এই অনুভূতি এড়াতে তারা আরও বেশি দূরে সরে যেতে পারে।

মানসিক অসুস্থতা বা আসক্তি: বাবা-মায়ের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা বা আসক্তির মতো সমস্যা থাকলে তা সন্তানের জন্য একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে পারে, যার ফলে সন্তানরা দূরত্ব বজায় রাখতে বাধ্য হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, এই দূরত্ব একটি জটিল প্রক্রিয়ার ফলাফল এবং এটি সবসময় সন্তানের দোষ নয়। পারস্পরিক বোঝাপড়া, কার্যকর যোগাযোগ এবং একে অপরের সীমানাকে সম্মান করার মাধ্যমে এই সম্পর্ক উন্নত করা সম্ভব।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর