প্রেস সচিবের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, সাত কলেজের আন্দোলন চলবে
মানব কথা: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলমের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা কলেজের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারি।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের মূল দাবি থেকে সরে আসব না। সাত কলেজের সমন্বয়ে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি, সেটি আমাদের থাকবেই।
জাকারিয়া বারি আরও বলেন, মন্ত্রণালয় সাত কলেজের বিষয়ে যে কমিটি করেছে, সে কমিটি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। দ্রুত সময়ে মধ্যে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে। সাত কলেজ নিয়ে যেকোনো ধরনের চক্রান্ত প্রতিরোধ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের অবিবেচক বক্তব্য প্রত্যাহার, কমিটি বাতিল, কমিশন গঠন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করার দাবিতে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী রোববার ও সোমবার সাত কলেজের অভ্যন্তরীণ সকল ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেবে না। একইসঙ্গে সাত কলেজের সবগুলো ক্যাম্পাসে দাবির পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। দাবি আদায় না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তার আগে কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। অধিভুক্ত সাতটি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে এই সাতটি কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, সাত কলেজ স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার যোগ্যতা রাখে৷ শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হলেও শিক্ষার মানের কোনো উন্নতি হয়নি, বরং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেড়েছে৷তাই সাত কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করছেন কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সাত কলেজের প্রতিনিধিরা কথা বলেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটা জায়গার ঠিক করা হবে। যেখানে সাত কলেজের প্রশাসনিক কাজ করা হবে। তাদের আলাদা রেজিস্ট্রার থাকবে। পুরো বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্টস কমিশনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য একটা আলাদা ফেসিলিটি হবে। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট ভবনে আলাদা ফেসিলিটি হবে। তাদের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রি থাকবে। তাদের জন্য আলাদা অফিসিয়াল থাকবেন। তাদের জন্য যে সার্ভিসটা দরকার সেটা যেন ডেডিকেট ওয়েতে দিতে পারে।