আবাসিক হোটেল থেকে সন্দেহজনক ১৮ জন ইউপি মেম্বার আটক
মানব কথা: কক্সবাজারে আবাসিক হোটেলে গোপন বৈঠকের অভিযোগে ১৮ ইউপি সদস্য আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় কক্সবাজারের কলাতলীর ইউনি রিসোর্ট থেকে তাদের আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, আওয়ামীপন্থী ইউপি সদস্যরা গোপনে বৈঠক করছেন এ তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। গোপন সভার খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ শহরের কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল ইউনি রিসোর্টে অভিযান চালিয়েছিল। অভিযানকালে অনেকে পালিয়ে গেলেও ৪০ জনকে আটক করা হয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাইয়ের পর যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের ইন্ধন ও পরিকল্পনাকারি হিসেবে রয়েছে সদরের ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত মেম্বার নাসির উদ্দিন। মূলত নানামূখি পরিকল্পনায় তার ইন্ধনে এসব ষড়যন্ত্রমূলক কাজ হচ্ছে বলে জানান অনেকে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারেেদর সংগঠন হলেও এখানে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সংদস্য সংস্থা (বাইসস) এর চেয়ারম্যান দেখানো হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুনকে।
সেখানে ঢাকায় বসবাসরত মহেশখালীর আতা উল্লাহ খান, উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট নেজাম উদ্দিনসহ আরো বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। আটককৃত অনেক মেম্বাররা জানান, এই বৈঠক যে এভাবে হবে তারা জানেন না। মেম্বার এসোসিয়েশন এর নেতারা তাদের ভুল তথ্য দিয়ে তাদেরকে এনেছেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফয়জুল আযীম নোমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা (বাইসস) কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
কলাতলীর ইউনি রিসোর্টে পার্বত্য এলাকা এবং কক্সবাজারের তিন শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরা সভা করছেন খবর পেয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দারা ঘিরে রাখেন। তিন ঘণ্টা যাচাই-বাছাই করে সন্দেহজনক ১৮ জনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আটকদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন, সদরের চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের মোহাম্মদ মিয়া জঙ্গী ও টেকনাফ উপজেলার জহির আহমেদ। তারা দুজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
আটকরা বলেন, জেলার ৯টি উপজেলার ইউপি সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভা চলছিল। এ সময় পুলিশ ও অর্ধ-শতাধিক সমন্বয়ক তাদের হল রুম ঘেরাও করেন। এরপর পুলিশ ও সমন্বয়ক পরিচয়ধারীরা এসে তল্লাশি যাচাই-বাছাই শুরু করেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি বলেন, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ইউপি সদস্যরা গোপন বৈঠক করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এখানে অনেক ইউপি সদস্য আছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তাদের আটক করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
সুত্র মতে, পুলিশের কাছে খবর পৌঁছে আলোচনা সভার নামে আওয়ামী লীগের দোসর ইউপি সদস্যরা হোটেল ইউনি রিসোর্টে জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন। এমন খবর পেয়েই পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।
সবশেষ-পুলিশ সুপার যে নির্দেশনা দিবেন প্রকৃত যারা জড়িত ও মামলা আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানা গেছে।
পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়া মহেশখালী এলাকার ইউপি সদস্য সেলিম জানান, আমাদের মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভা ছিল। সেখানে সব রাজনৈতিক দলের মানুষও ছিল।
পুলিশ সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুলিশি অভিযানের সময় অধিকাংশ ইউপি সদস্য সটকে পড়েন। তবে ৪০ জনের মতো ইউপি সদস্যকে হোটেলে আটকে দেয়া হয়। পরে যাচাই-বাছাই করে মামলার আসামি থাকা ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।