সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি

সময়: 6:42 am - June 1, 2025 |

মানব কথা: বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে প্রতি বছরের মতো এবারো ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটক প্রবেশ এবং মাছ ও কাঁকড়া ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ।

রোববার (১ জুন) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা সুন্দরবনের বাংলাদেশের অংশে বহাল থাকবে।

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এ জেড এম হাছানুর রহমান।

খুলনা রেঞ্জের আওতার এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যেই মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সব ধরনের পাস-পারমিট ইস্যু এবং পর্যটক প্রবেশ। নিরাপত্তা জোরদারে বাড়ানো হয়েছে বন বিভাগের টহল কার্যক্রম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবনের ডিএফও এ জেড এম হাছানুর রহমান। বিগত দু’তিন দিন ধরে খুলনা রেঞ্জের সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের জানানো হয়েছে। একইসাথে সুন্দরবনের ভেতরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্ষাকালে সুন্দরবনের অন্তত ২৫১ প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে। এই সময় মাছ ধরা বন্ধ রাখলে প্রাকৃতিকভাবে মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভয়াবহ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালরা। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় তিনটি মাস তাদের কষ্টের মধ্যে দিন পার করতে হবে বলে জানিয়েছেন কয়রার অনেক বনজীবী।

শনিবার (৩১ মে) সকালে সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়ায় নদীর তীরে নৌকা বেঁধে রাখা ও মেরামতের দৃশ্য দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার নৌকা মেরামত করার জন্য বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর উঠিয়ে রেখেছেন।

খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে সব স্টেশনে পাশপারমিট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের অধীনস্ত এলাকায় টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।’

কয়রার বনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া, মধু আহরণ করে আমাদের সংসার চলে। তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ থাকবে। এলাকায় তেমন কোনো কাজ নাই, ভাবছি কিভাবে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সংসার চালাব।’

সুন্দরবন-সংলগ্ন শাকবাড়িয়া নদীর তীরবর্তী পাথরখালী গ্রামের জেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবার ১ জুন থেকে ৯২ দিনের জন্য সুন্দরবন বন্ধ। বন্ধের সময় সাগরে মাছ ধরা জেলেদের সরকারি সহায়তা করা হলেও সুন্দরবনের জেলেদের কিছুই দেয়া হয় না। এর মধ্যে সবকিছুর দাম বেড়েই চলছে। বন্ধের সময় সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য না পেলে আমাদের সামনের দিনগুলো খুবই কষ্টের মধ্যে যাবে।’

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সাহিদ বলেন, ‘১ জুন থেকে সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিট। এ সময় বন্য প্রাণী শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ আহরণ বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন বিভাগ।’

সূত্র : ইউএনবি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর