আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিতর্কিত বুয়েট শিক্ষক ডঃ মিজানুর রহমান পেলেন সরকারী ফ্ল্যাট

সময়: 10:44 am - July 7, 2025 |

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর তড়িৎ কৌশল বিভাগের ছাত্র আবরার ফাহাদ কে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার নেতৃত্বে নির্মম নির্যাতনে হত্যার পরে লাশ নিচ তলায় একটি তোষকে ফেলে রেখে মেডিকেল অফিসারকে খবর দেয় খুনিরা। পুলিশ এসে সেখান থেকেই আবরারের লাশ উদ্ধার করে। মেডিকেল অফিসার মাশুক এলাহী রাত তিন টার দিকে আবরার ফাহাদকে মৃত ঘোষনা করেন। সে সময় বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ভীষন সন্দেহের অবকাশ রয়ে গেছে। বিশেষত সত্য প্রসাদ মজুমদার ও তার উত্তরসূরী ততকালীন ছাত্রকল্যান পরিচালক প্রফেসর ডঃ মিজানুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি রাখে। কেননা এই দুজন বুয়েটকে ছাত্রলীগের গুন্ডামী ফলানোর কুরুক্ষেত্র বানিয়ে ফেলতে যারা ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের মধ্য অন্যতম। সত্য প্রসাদ পরে বুয়েটের ভিসি হয়েছিলেন। সে আমলে প্রচন্ড ভারত পন্থী না হলে ভিসি, ডিএস ডাব্লিও এর পদায়ন করা হতো না। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় তৎকালীন ছাত্রকল্যান পরিচালক প্রফেসর ডঃ মিজানুর রহমান সোমবার রাত ৩টা ২৬ মিনিটে শেরে বাংলা হলের সামনে আসেন এবং হত্যাকারীদের সাথে কথা বলে চলে যান। পরে ৮ তারিখে ক্যাম্পাসে ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভের মূখে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এই মিজানুর রহমান নিজেও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী এবং ইসকনের সদস্য। তিনি একাধিক বার ভারতে প্রশিক্ষন নিয়েছেন। ২০২৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আই ই বি এর ডামি নির্বাচনে তিনি সবুর-মঞ্জু প্যানেলে নির্বাচনে জয় লাভ করেন। ভোটার বিহীণ এই সব পেশাজীবিদের নির্বাচনে ভোটও দিয়েছে ছাত্র লীগের ভাড়া করা গুন্ডারা। আর এই সব নির্বাচনে তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের প্যানেলে নমিনেশন পেয়েছেন গন ভবনের আস্থা ভাজন হিসাবেই। বিতর্কিত এই দলদাস শিক্ষককে ফ্যাসিবাদী সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী তার মন্ত্রনালয়ের নিজস্ব জমিতে সরকারি অর্থে গড়ে উঠা প্রকল্পে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় কর্তৃক উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে দিয়া বাড়ি এলাকায় ‘বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ’ ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় এর কর্মচারিদের জন্য নির্মিত ফ্ল্যাট প্রকল্পের “কর্ণফুলী” ভবনের ২/ডি ফ্ল্যাট টি তিনি বরাদ্দ পেয়েছেন। ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাদ্দাম-লেখক ভট্টাচার্যদের সাথে ততকালীন সময়ে তার মোবাইল , হোয়াটস এপ সহ সকল ধরনের যোগাযোগ প্রযুক্তির ট্র্যাক করলে আনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে। তিনি ও সত্য প্রসাদরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক, কেননা তারা তখন কোন ছাত্র/ছাত্রী আওয়ামীলীগ অথবা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে শিবির কিংবা জঙ্গী ট্যাগদিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলার লাইসেন্স দিয়েছিলেন। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই তিনি কোন ক্যাটাগরিতে যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের ফ্ল্যাট পেলেন? আর জনগনের করের টাকায় প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে, প্রকারান্তরে বৈদেশিক ঋনের বোঝা বাড়িয়ে গুটি কয়েক দলবাজকে পানির দরে ফ্ল্যাট দেয়ার এখতিয়ার কি যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের আছে? আবরার ফাহাদ ৩৬জুলাই যোদ্ধাদের কাছে এক অকুতোভয় বীরের নাম। তার মহান আত্মত্যাগই ২০২৪ এর বিপ্লবে ছাত্র-তরুন -যুবা তথা আপামর জনসাধারণকে সাহস জুগিয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘাতক বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাড়াতে, একাকী নিরস্ত্র তরূনীকে এপিসির সামনে পথ রোধ করতে। আবরার ফাহাদের খুনিদের পৃষ্ঠ পোষক যদি রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিয়ে দিব্বি ঘুরে বেড়ায় তবে তা জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মার সাথে বেইমানী। আমরা চাই লেখন ভট্টাচার্যের এই ভৃত্য প্রফেসর ডঃ মিজানুর রহমান এর এই ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিল করা হোক। আবরার ফাহাদ হত্যা ও এর পূর্ববর্তী সময়ে হত্যার পটভূমি ও পরিবেশ তৈরীতে প্রত্যক্ষ ভূমিকার জন্য তাকে আইনের আওতায় আনা হোক।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর