আগামী নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে: জামায়াত

মানব কথা: জুলাই সনদের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মগবাজার আলফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন,জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। অতীতে সব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল। সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে। আমরা লক্ষ্য করছি, নির্বাচনের উপযুক্ত যে পরিবেশ থাকার কথা ছিল তা সরকার তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত টাইমলাইন অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে তার আইনি ভিত্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন অভ্যুত্থান ও আন্দোলন হয়েছে—পরবর্তী সময়ে তার আইনি ভিত্তি দেওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন—১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর লিগাল ফ্রেম ওয়ার্ক এর ভিত্তিতে ৭০-এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত গণপরিষদে ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুমোদন হয়েছিল।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ১০ মাস মুজিবনগর সরকারের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং স্বাধীনতার পরবর্তী সরকার গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ৭৫-এর পটপরিবর্তনের পর এবং প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ ও দেশ পরিচালনা, দল গঠন, সামরিক প্রশাসক থেকে প্রেসিডেন্ট-এর দায়িত্ব গ্রহণসহ ৭৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত শাসনকালের গণভোট, অধ্যাদেশ জারি করে তার ক্ষমতায় আরোহণ ও দেশ পরিচালনার মতো বৈধতা দিয়েছিল, যা পরবর্তী সংসদ অনুমোদন করে।
তিনি বলেন, উপরন্তু ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখার ভিত্তিতে বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তার আইনি ভিত্তি না থাকায় এ রূপরেখার অন্যান্য বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি। অতীতে এত নজির থাকার পরও এখন জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি দিতে বাধা কোথায়?
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির বলেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পূর্বে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন দ্রুত সম্পন্ন করে অধ্যাদেশ, এলএফও বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি প্রদান করা না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম বিফলে যাবে। তাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনী ও সংস্থাকে কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ও প্রশাসনের মধ্যে স্বৈরাচারের দোসরদের মুক্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের সব স্তরে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।