বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ হলো ভারতের হোটেল
মানব কথা: বাংলাদেশি নাগরিকদের হোটেলের ঘর ভাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি শহরের হোটেল মালিকরা। সোমবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী সংগঠন। তবে শৈল শহর দার্জিলিংয়ের হোটেল মালিকরা এখনো এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত নির্যাতন ও বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে এ কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে হোটেল মালিক অ্যাসোসিয়েশন।
এর আগে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদার হোটেল মালিকরা ঘোষণা করেছিলেন যে, বাংলাদেশি নাগরিকদের তারা ঘর দেবেন না। যদিও পরে আগরতলার হোটেল মালিকরা সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন। কারণ হিসেবে তারা জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘর ভাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাদের ব্যবসায় বড় ধরনের ক্ষতি করছে।
শিলিগুড়ি শহর ও আশপাশ অঞ্চলের হোটেল মালিকদের সংগঠন গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব উজ্জ্বল ঘোষ বিবিসিকে বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক যে সংঘাতের আবহাওয়া চলছে, বিশেষত সে দেশে ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের একাংশের উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বাংলাদেশের নাগরিকদের আমাদের কোনো হোটেলে থাকতে দেওয়া হবে না।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, দার্জিলিং পুলিশ জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন হোটেল এবং তার বাইরেও যেসব হোটেল রয়েছে তাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছে। সেখানে শিলিগুড়ি হোটেল মালিকদের প্রায় ৯৭ শতাংশ ভোট দিয়েছেন বাংলাদেশি পর্যটকদের বিরুদ্ধে। তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উজ্জ্বল ঘোষ জানান, ‘শিলিগুড়ি ছাড়াও আমরা কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের হোটেল মালিকদের সংগঠনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। দার্জিলিংয়ের হোটেল মালিকদের সংগঠনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তবে দার্জিলিংয়ের হোটেল মালিকরা এখনই এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না বলেই আমাদের জানিয়েছেন।
খবরে বলা হয়, শীতের পর্যটন মৌসুমে দার্জিলিংয়ে প্রায় তিরিশ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন। শিলিগুড়ি ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার ফলে বাংলাদেশি পর্যটকরা বেশি আসছিলেন। এদের একটা বড় অংশ শৈল শহরগুলোতে যাওয়ার আগে শিলিগুড়ির হোটেলে ঘর ভাড়া নেন।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, শিলিগুড়ি এলাকার হোটেল মালিকরা বাংলাদেশিদের ঘর না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তার খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কারণ এমনিতেই এখন ভারতীয় ভিসা দেওয়ার কড়াকড়ি থাকায় ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশিরা ভারতে কম আসছেন।