পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির সুযোগ থাকছে না, নতুন নেতৃত্বের অঙ্গীকার

সময়: 5:44 am - August 26, 2024 |


মানব কথা:
পরিবহণ সেক্টরে আর কখনো কোনো চাঁদাবাজির সুযোগ থাকবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা সড়ক মালিক সমিতির নতুন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

শনিবার রাজধানীর পরীবাগের বোরাক টাওয়ারে মালিক সমিতির অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী দিনের পরিবহণের সংস্কার ও এ্যাকশন প্লান সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সেখানে তারা ভবিষ্যতে পরিবহন সেক্টরে আর চাঁদবাজি থাকবে না বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে নেতৃবৃন্দ আগামী দিনের টেকসই ও গণমূখী পরিবহণ সিষ্টেম চালু করার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

পরিবহন নেতারা বলেন, যেকোনো মূল্যে বিগত সরকারের আমলে পরিবহণের নৈরাজ্য অরাজকতা ও দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো হবে। রাজধানী থেকে দেশের সর্বত্র পরিবহণ পরিচালিত হবে একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও যাত্রী মালিকদের স্বার্থ সুরক্ষায়। এতে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নতুন আহ্বায়ক কমিটির কনভেনর সাইফুল আলম ও আব্দুল বাতেন।

সংবাদ সন্মেলনে জানানো হয়, অতীতে যখনই যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারাই পরিবহনের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লাঘামহীন চাঁদাবাজি করেছে। এবার আর সে সুযোগ থাকছে না। একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে যাত্রী ও মালিকের স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণ করেই পরিচালিত হবে দেশের এ খাত। ঢালাওভাবে কেউ চাইলেই এখানে চাঁদাবাজি করে রাতারাতি হাজার কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারবে না।

পরিবহন নেতারা বলেন, এবারের জুলাই বিপ্লবের পর পরিবহণে আগের কমিটির লুটেরা চক্রের হোতারা গা ঢাকা দেওয়ায় এ সেক্টর নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গত ১৪ আগষ্ট তলবী সভায় সাইফুল আলমকে কনভেনার করে ৩১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তারপর গত ১৯ আগষ্টের সভায় ঢাকা সড়কের নেতৃত্বে চাঁদাবাজিমুক্ত জনকল্যানমূখী সড়ক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য ৭টি সিদ্বান্ত নেওয়া হয়।

গৃহীত সাত সিদ্ধান্তগুলো— সড়কে চাদাবাজি বন্ধ করে যাত্রীবান্ধব সেবা নিশ্চিত করা; যাত্রীদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ সড়ক গড়া; সকল টার্মিনালে খরচের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করা; সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা; মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে জনকল্যাণমূখী সড়ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা ও প্রতিটি আঞ্চলিক কমিটিতে বৈধ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুল আলম বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস এক সময় পরিবহন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন, যেহেতু তার গাড়ির ব্যবসা ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর, রাতের অন্ধকারে তার সবগুলো গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ময়মনসিংহের দুটো গাড়ি ভেঙ্গে স্ক্র্যাব হিসেবে বিক্রি করে দেয় চাঁদাবাজরা। তারপর থেকে তিনি আর কোনোভাবেই পরিবহণে যুক্ত নন। ভবিষ্যতেও থাকবেন না। যদিও কয়েকটি মিডিয়ায় এ নিয়ে গসিপ করছে। আসলে এক সময় পরিবহনে যুক্ত ছিলেন বলেই এখনো সঙ্গত কারনেই মিডিয়ায় তার নাম এসে যাচ্ছে।’

বিগত পনের বছরে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ও মালিক সমিতির আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধারে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে বর্তমান কমিটি এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল আলম বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ। একের পর এক সবগুলো চ্যালেঞ্জই আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হবে। তবে অতীতে যাই হয়েছে, ভবিষ্যতে সেটার পুনরাবৃত্তি হবে না সে নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি।’

সড়কে শৃঙ্খলা আনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নতুন কমিটির এই কনভেনর বলেন- ‘এবার সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে আমরা বসব। আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই- ২০০১ সালে আমাদের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে বিআরটিএ ও হাইওয়ে পুলিশ গঠন করা হয়। এখন আমরা তাদের সাথে নিয়েই সত্যিকার অর্থে একটা অর্থবহ পরিবহন ব্যবস্থা দাঁড় করাবো। যা ভবিষ্যতে আর কোনো কায়েমী স্বার্থবাদীর পক্ষে ভাঁঙ্গা সম্ভব হবে না।’

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর