বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত

সময়: 11:29 am - April 9, 2025 |

মানব কথা: বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। ফলে বাংলাদেশি পণ্য ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে রপ্তানি করা যাবে না। মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

এর আগে ভারতের রপ্তানিকারকরা—বিশেষ করে পোশাক খাত—বাংলাদেশকে এই সুবিধা বাতিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। পিটিআই-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সুবিধা বাতিলের ফলে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে পণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল, যা এখন আর সম্ভব হবে না।

ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের ৮ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “২০২০ সালের ২৯ জুনের সার্কুলার বাতিল করা হয়েছে, এবং সংশোধিত সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে পূর্বের সার্কুলারের আওতায় ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।”

এটি এমন সময়েই এসেছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে। ভারতের সরকার আশা করছে, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানির বিশেষ কিছু খাত—যেমন পোশাক, পাদুকা, রত্ন এবং গহনা—কৃতজ্ঞ হবে, কারণ এটি তাদের জন্য লাভজনক হতে পারে।

ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য অতিরিক্ত কার্গো পরিবহন সক্ষমতা তৈরি করবে। ভারতের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন (এফআইইও) এর মহাপরিচালক অজয় সাহাই জানান, “অতীতে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নিয়ে বন্দর ও বিমানবন্দরে জায়গার সংকটের বিষয়ে অভিযোগ করতেন, এখন সেটি সহজ হবে।”

এর আগে, ভারতের পোশাক রপ্তানিকারক সংগঠন এপিসি বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার আহ্বান জানায়, কারণ এতে দিল্লি এয়ার কার্গো ভবনে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্গো তৃতীয় দেশে পাঠানো আরও জটিল হয়ে পড়েছিল। এপিসির চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেন, “প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লিতে আসছে, যা কার্গো চলাচলের গতি কমিয়ে দেয় এবং এয়ারলাইন্সগুলো অযৌক্তিক সুবিধা নিচ্ছে।”

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব মন্তব্য করেছেন, “এই সুবিধা বাতিলের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।”

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর