অবশেষে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বাহিরে বদলী শহীদুল আলম

সময়: 12:23 pm - February 27, 2025 |

মানব কথা: গণপূর্তের পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে মুজিব শত বর্ষের অর্থ বন্টনকারী শহীদুল আলমকে অবশেষে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বাহিরে বদলী করা হয়েছে ।

গতকাল ২৬ ফ্রেব্রুয়ারী ২০২৬ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জার্রি করে ধর্ম মন্ত্রনালয়ের ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসাবে পদায়ন সুপারিশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পত্র জার্রি করছেন।  মুজিব শত বর্ষের অর্থ বন্টনকারী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে এবং সাজসজ্জা বিভিন্ন কাজে কোটি টাকা লোপাট করছেন শহীদুল আলম।
বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার অবসরে যাবেন ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫। এক সময়ে শামীম আখতারের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ ও আশরাফুল আলম প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে নানা কারনে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন। তাই লম্বা সময় চাকুরি আছে এমন সম্ভাবনাময় প্রকৌশলীরাই পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী হতে বেশ আগে ভাগেই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এ তালিকায় আছেন ১৫ বিসিএস এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ময়মনসিংহ জোন জনাব মইনুল ইসলাম। মেধা তালিকায় দ্বিতীয় এই কর্মকর্তা ২০২০ সালেও আলোচনায় ছিলেন। প্রধান প্রকৌশলী পদের পরবর্তী দাবিদারদের মধ্যে তিনিই সিনিয়র মোস্ট। কিন্তু বহিঃ বাংলাদেশ ছুটি সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় তিনি মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারবেন কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে।
বরিশাল কেন্দ্রিক কর্মকর্তাদের লবিগ্রুপ তাকে প্রধান প্রকৌশলীর আসনে বসাতে গোপনে কাজ করছে। তাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল আলম সংস্থাপনে চার বছর ধরে বসে থেকে মইনুল এর বিদেশে থাকার ফাইলটি খড়গ হিসেবে জিইয়ে রেখেছেন। তারা আরও বলেন শহীদ নিজেই নিয়ম ভেঙ্গে লিয়েন নিয়েছেন, তারও সার্ভিস ডিসকন্টিনিউটি রয়েছে। সিনিয়রিটি বিবেচনায় এর পরেই আছেন ১৫ বিসিএস এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ খালিকুজ্জামান চৌধুরী। সদ্য লিয়েন থেকে প্রত্যাগত কর্মকর্তা বেশ জোরেশোরে তদবীর করছেন বলে জানা যায়। এছাড়া এবছরই শামীম আখতারকে হটিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসতে চান এমনদের মধ্যে আছেন ১৫ বিসিএস এর কর্মকর্তা হিসাবে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল খায়ের ও শামছুদ্দোহার নাম শোনা যায়। তম্মধ্যে আবুল খায়ের নিজেকে বিএনপি পন্থী দাবি করেন , তিনি বিগত ১৫ বছর নানা বঞ্ছনা ও নিবর্তন মূলক বদলীর স্বীকার হয়েছেন দাবি করেন। ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামছুদ্দোহা খুব সতর্কতার সাথে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। মাঠ পর্যায়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ চেয়ারে চাকুরির অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই কর্মকর্তা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দুটোই দেখেছেন বলে হিসেব করে পা ফেলছেন। এছাড়া অবসরে যাওয়া অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুও একটি রাজনৈতিক দলের লবি ব্যবহার করে নিজেকে বৈসম্যের স্বীকার দাবি করে চুক্তি ভিত্তিক প্রধান প্রকৌশলীর পদ পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ কে টার্গেট করে আরও যাদের নাম শোনা যায় তাদের মধ্যে রয়েছেন ১৭ বিসিএস এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ডঃ মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন হায়দার । কিন্তু এক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্ব্য) শহীদুল আলম পিছন থেকে কল কাঠি নেড়ে জিল্লুর এর শাস্তি প্রলম্বিত করছেন মর্মে তার শুভাকাঙ্খিরা জানান। তবে শহীদুল আলম সুনির্দিষ্ট লক্ষ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে তার প্রধান প্রকৌশলী হওয়া প্রায় গুছিয়ে ফেলেছেন। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে গুরুত্বপূর্ণ পদের সব নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে নিজের লোক বসিয়েছেন। শামীম আখতারের আস্থাভাজন থাকায় তিনি একটু লেভারেজ পেয়েছেন। যেমন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সমন্বয়) থাকা কালে এপিপির বরাদ্দ বিতরনে প্রভাব বিস্তার করে নিজের আস্থা ভাজন প্রকৌশলীদের ও থোক বরাদ্দ প্রদানে পছন্দের ঠিকাদারদের বিশেষ সুবিধা দিতে পেরেছেন। ফলে তখন থেকেই তার জন্য লগ্নি করার একটি বড় সিন্ডিকেট কাজ করেছে। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার পরে পুরো ঢাকা শহরকে নিজের অনুগত লোক দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছেন । ফলে তার প্রতিদ্বন্দীদের সচিবালয় ও অন্যান্য দপ্তরে গতিবিধি নজরে রাখতে পারছেন। এ বিষয়ে তার কোরামের বাহিরের লোকদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্বজন প্রীতির যত অভিযোগঃ শহীদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত নির্বাহী প্রকৌশলীদের অন্যতম নগর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। ২৪ বিসিএস এর এই কর্মকর্তা সাবেক পূর্ত সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসাবে পুর্তমন্ত্রণালয়ে যান। জিকে বিল্ডার্সের কর্ণধার গোলাম কিবরিয়া শামীমের আশির্বাদে তিনি মন্ত্রণালয়ে বহাল তবিয়তে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ফেসিস্ট হাসিনার ওয়ার্ড কমিশনার ফরিদ উদ্দিন রতনকে নিয়ম ভেঙ্গে ৫ কোটি টাকা উর্ধদরে কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। পুরস্কার হিসাবে রতন তাকে ঢাকা ডিভিশন ৩ এ নিয়ে আসেন। সেখানে কুশলী নির্মাতাকে গেমন বাংলাদেশে দুইটি টেন্ডার পাইয়ে দেন। ঠিক ১০% কম দর মিলে যাওয়ায় বর্তমান উপদেষ্টা তা বাতিল করেছেন মর্মে জানা যায়। আনুগ্যত্যের প্রমান দেয়ায় এই টেন্ডার বাজ কর্মকর্তাকে বেছে নেয়া হয়েছে আরেক দূর্নীতিবাজ মাহাবুবকে সরাতে। এযেন শিয়াল তাড়াতে খাটাশ নিয়ে আসা। নগর গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব সিঙ্গাপুরে শহীদের হীপ রিপ্লেস্মেন্ট সার্জারির ব্যায়ভার বহন করেছেন, এক কোটি টাকা খরচ করে তার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পদ নিয়মিত করনে কাজ করে দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর মাহাবুব সাবেক সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকারেরও খুব স্নেহভাজন ছিলেন। মাহাবুব ঢাকা ডিভিশন ৪ এ থাকার সময় হাসান মোল্লাকে ক্যাম্পাসে অস্ত্র রাখার জন্য ৩ টি কক্ষ দিয়ে দেন। তিনি শাহা বুদ্দিন চুপ্পুর ছেলে রনির ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। ফ্যাসিবাদ পতনের পর সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ও পরে আইন সচিবকে ধরে টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নাগরিক সমাজের চাপের মুখে ফ্যাসিবাদের দোসর মাহাবুব কে শরিয়তপুর বদলী করতে বাধ্য হলেও তিনি সেখানে নিজের লোক সেট করে দিয়েছেন। মেডিকেলের আজমুল হক মুন তার লোক। আরেক ছাত্রলীগের গুন্ডা শাহ আলম ফারুক চৌধুরীও তার অর্থের যোগান দাতা। ঘটনা চক্রে ফারুককে বাগেরহাটে বদলী করলেও সেখানে বসিয়ে দিয়েছেন এ এস এম সানাউল্লাহকে, তিনিও ফ্যাসিবাদের একনিষ্ঠ কর্মী। গোপালী সচিব কাজী ওয়াসী উদ্দিনের ভাগ্নে ৩২ বিসিএস এর কর্মকর্তা মেহেদী হাসানকে শেরে বাংলানগর ২ এ পোস্টিং দিয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদ বিদায়ের পর এখনো মেহেদী ঢাকায় টিকে আছেন তার বদান্নতায়। সাবেক পূর্তমন্ত্রী র,ম,আ উবায়দুল মোক্তাদিরের আত্মীয় রক্ষনাবেক্ষন ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার কবির তার সবচেয়ে বিস্বস্ত ক্যাশিয়ার। তার মাধ্যমে শহীদ দুদুক ও একটি বিশেষ সংস্থার সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন। কায়সার কবির নিজেও ফ্যসিবাদী তালিকায় গণভবনের সেই বিশেষ ৩২ তম বিসিএস এর কর্মকর্তা। শহীদের আরেক শাগরেদ সম্পদ গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলই নাসির উদ্দিন। নাসির মতিঝিলে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী থাকা কালে ব্যাপক চুরি করে নিম্ন মানের কাজ করে ঠিকাদারের সাথে টাকা ভাগাভাগির অভিযোগে দুষ্ট। ফলে এলোটি গন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। প্রতিটি বাসার সকল দরজা খুলে খুলে পড়ে যাচ্ছিলো। এ নিয়ে এই বছর প্রথম আলো পত্রিকায় ৬ জুলাই ২০২৩, “ ছিটকিনি লাগেনা , দেয়ালে শেওলা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঐ কাজের ঠিকাদার জামাল এন্ড কোম্পানিকে অনৈতিক সুবিধা দিতে নাসির এই অপকর্ম করেন । শহীদকে ২ কোটি টাকা দিয়ে এপিপি বাড়িয়ে নিয়ে সেই টাকা গচ্চা দিয়ে নিজে কোন মতে মতিঝিলে তার পাপ ঢাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সম্পদ বিভাগের যে অধিক্ষেত্র তাতে সর্বোচ্চ আড়াই কোটি টাকাও খরচ করার জায়গা নেই বলে সেখানে পূর্বে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার সূত্রে আমাদের জানিয়েছেন। তাহলে বাকি টাকা যে শহীদের বাহারি টাই কিনতে ব্যবহৃত হয় সন্দেহ নেই। তাছাড়া নাসির এখন এলেনবাড়ি কোয়াটারের মাছ চুরিতেও নেমেছেন। এনিয়ে দৈনিক যুগান্তরে ২২/০২/২০২৪ তারিখে সংবাদ প্রকাশ হলে সবাই ছিঃ ছিঃ করছে। একজন কর্মকর্তা কতটা নীচে নামলে এমন কাজ করতে পারে?
 মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, দেশের বাড়ি কক্সবাজার হওয়ায় শহীদ, সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব; পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের স্নেহ ভাজন ছিলেন। তিনি এডিবি ( Asian Development Bank) এ লিয়েন নিয়ে চলে যান, কিন্তু তখনও দুই জায়গায় বেতন উত্তোলন করে ধরা খান। ফলে ২০১৬ সালে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবির সদর দফতর থেকে ততকালীন প্রধান প্রকৈশলী হাফিজুর রহমান মুন্সীর কাছে শহীদের আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়। তাছাড়া প্রাপ্যতার অনেক বেশি অতিরিক্ত সময় , প্রায় দশ বছর তিনি লিয়েন কাটিয়েছেন। ফলে তার চাকুরি থাকারই কথা না। সে যাত্রায় ততকালীন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমেদের প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত ধামাছাপা দেন। তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির ফাইল গায়েব করে ফেলেছেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি পররাষ্ট্রে মন্ত্রণালয়ের কাজে এক বছরে সাত বার সরকারি সফরে বিদেশ গিয়েছেন, অথচ বিধিমোতাবেক তা ঢাকা মেট্রোপলিটন জোন এর কর্মক্ষেত্র। তিনি কোন ভাবেই প্রকল্প সংশ্লিষট না হওয়া স্বত্বেও কেবল বিদেশে টাকা পাচার করতে এই সুবিধা নিয়েছেন। নিজেকে সৎ দাবি করলেও তার বিরোধিদের মন্তব্য ভিন্ন। যেমন ২০১৮ নিশিরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সাথে দুবাই আন্তর্জাতিক এক্সপোতে গিয়ে তিনি সেখানে ভিলা কিনেছেন এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের সাথে আজিজ পরিবারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠক করে এসেছেন। শহীদ যখন দুবাই যান তখন অলঅরেডি দুবাই এক্সপো শেষ হয়ে গিয়েছিলো, তারপরও তিনি ঘুষের টাকা পাচার করতেই জনগনের করের টাকায় প্রমোদ ভ্রমন করে এসেছেন। তিনি সৌদি আরবে একাধিকবার ভ্রমন করে হারাম টাকায় ওমরা করেছেন। শহীদ আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সহায়তায় অর্থ নিয়ে সিঙ্গাপুরে গিয়ে এস আলম; সাল্মান এফ রহমান; সামিট গ্রুপের মাধ্যমে শেখ পরিবারের কাছে শত কোটি টাকা পাচার করেছেন। অধিদপ্তরে ফ্যাসিবাদের বয়ান জারি রাখতে ফি বছর হাসিনা শেখের কবির চাচাকে ডেকে এনে সেমিনার করতেন; কখনো ডঃ নূজহাত; কখনো ডঃ আনোয়ার হোসেন; কখনো অধ্যাপক রহমতুল্লাহ কে ডেকে এনে জোর করে সবাইকে আওয়ামী ভেল্কী বাজি শুনাতেন।
 অতি আওয়ামীলীগার প্রমান করতে গণপূর্তের মেরামত খাতের বাজেট থেকে মুজিব শত বর্ষ উদযাপনে পর পর দুই বছর নিয়ম বহির্ভুতভাবে ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ী বদীর আত্মীয়। নিয়োগ-বদলী বানিজ্য ও দূর্নীতির যত অভিযোগঃ শহীদ ও সাবেক পূর্তসচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন; প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ মিলে ৪০০ কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। শোনা যায়, সেই নিয়োগে নাকি জন প্রতি ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। নিয়োগ প্রাপ্তরা সকলেই গণভবন থেকে সরবরাহ কৃত তালিকা ভুক্ত। এই দুর্নীতির টাকা তিনি দেশে শেখ সেলিমের বনানীর বাসায় নিজে পৌছে দিয়েছেন, বড় একটা অংশ চিকিৎসার নামে সিঙ্গাপুর গিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দিয়ে এসেছেন। এ নিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি, জাতীয় দৈনিক কালবেলা তে ‘ গণপূর্তে১৬৯ পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফল গায়েব । জিডিতেই দায় এড়ানোর চেষ্টা ‘ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে জানা যায় ২০২৩ সালের ২০ ও ২৭ মে, ১৮ থেকে ২০ তম গ্রেডের ৬ ক্যাটাগরির ১৬৯ টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৪ জুন থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। কিন্তু তিন মাসেও সেই নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল আলমের দুরভিসন্ধির কারনে। ঐ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তিনি মৌখিক পরীক্ষার রেজাল্টের ১৫ টি সিলগালা করা খামের একটি গায়েব করে দেন মর্মে সংবাদ সূত্রে জানা যায়। সংবাদ সূত্রে আরো জানা যায়, সিলগালা করা খাম গুলো নিয়োগ কমিটির আহবায়ক এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সংস্থাপন ও সমন্বয় মোঃ শহীদুল আলমের নিকট ট্রাঙ্কে তালা বদ্ধ ছিল, অন্য কারও পক্ষে এই ট্রাঙ্ক কোথায় রাখা ছিল তা জানা সম্ভব নয়। সংবাদ সূত্রমতে ২৮ নভেম্বর,২০২৩ রেজাল্ট এর খাম হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলেও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে শাহবাগ থানায় সাধারন ডায়েরী(জিডি) করা হয় (পত্রিকার কপি সংযুক্ত)। এই সময় এর মধ্যে অধিদপ্তর বিষয় টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। মিডিয়া কে ম্যানেজকরতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ঢালেন। এবিষয়ে সংবাদ কর্মীরা ততকালীন মন্ত্রী রম উবায়দুল মুক্তাদিরকে প্রশ্ন করলে তিনি তদন্তের আস্বাস দিলেও, মোটা অঙ্কের ঘুষ খেয়ে কোন ব্যবস্থা নেন নি। শহীদের রুম পর্যন্ত পৌছাতে যেকোন ব্যক্তিকে কমপক্ষে ২টি পাসওয়ার্ড প্রটেক্টেড দরজা পেরিয়ে যেতে হয়, সেখানে বায়োমেট্রিক সনাক্তকরন ব্যবস্থা রয়েছে। আর পুরো পূর্ত ভবনই সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। তাহলে ঘটনা সনাক্তে কেন সিসিটিভি ফুটেজ কেন দেখা হলোনা, তা সন্দেহের অবতারনা করে। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি এই কাজে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সংস্থাপন নন্দিতা রাণী শাহা ও সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ নূর রাজি না থাকায়, শহীদ ও সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাহমুদুল হাসান যোগশাজসে এই চুরির ঘটনা ঘটান। ঠিক কাছাকাছি সময়ে ২৩/১২/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ পরীক্ষায় শহীদ নিজে টিএনটি ল্যান্ড ফোন থেকে এবং WhattsApp ব্যবহার করে পছন্দের প্রার্থীদের বেশী নম্বর পাইয়ে দিতে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। দুই একজন কর্মকর্তা এধরনের অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে যখন সারাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল সেই সময়ে এই পরীক্ষা গ্রহনের ফলে অনেক পরীক্ষার্থীই অংশ নিতে পারেনি। এই নিয়োগেও শহীদ, ডামি মন্ত্রী ভারতের চর উবায়দুল মোক্তাদিরকে কয়েকশ কোটি কামানোর ব্যবস্থা করে দেন। ফলে শহীদ তার প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন মূলত শামীম আখতারকে কাঠের পুতুলের মতো বসিয়ে তিনিই ডিফেক্টো চীফ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ব্যাপক বদলী বানিজ্য চালাচ্ছেন। তবে তিনি যেভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছেন তা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে বৈকি। অতিরিক্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সংস্থাপন ও সমন্বয় থাকার সুবাদে পরিত্যক্ত সম্পত্তি তার অধিভুক্ত। তিনি বরিশালে পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখলের জন্য আট বার সরকারী খরচে সফর করেছেন। প্রয়োজন না থাকা সত্বেও বরিশালে মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন (এ পিপি) এর বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই অর্থ তিনি আইন জীবিদের ব্যক্তিগত বাডিতে উপঠৌকন ও জুডিশিয়ারির কয়েকজন কে ঘুষ দিয়ে নিজের পক্ষে রাখতে ব্যয় করেন। এত অভিযোগ আর প্রতিদ্বন্দীদের বিরোধিতাকে ডিঙ্গিয়ে শহীদ কি পারবেন প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসতে? আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় সব কিছুই তিনি ম্যানেজ করে ফেলেছেন । কিন্তু অপেক্ষার পালা আরও দুই বছর দীর্ঘ হতে পারে যদি শামীম আখতার দুই বছরের এক্সটেন্সন পেয়েযান। সে জন্য শামীম আখতার যেন কোন ভাবেই এক্সটেনশন না পান সে লক্ষেই তার টিম জোড়েসোরে মাঠে নেমেছে। কে বিজয়ী হয় সেটা দেখতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
Share Now

এই বিভাগের আরও খবর