ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ গ্রেফতার

মানব কথা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি জানান, উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে নিজ বাসা থেকে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ তুরিন আফরোজকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট মো. জব্বার (২১) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। উত্তরা পশ্চিম থানা ছাড়াও নীলফামারিতে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে রাত ১০ থেকে অভিযান শুরু হয় বলে জানান তালেবুর রহমান।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেয় প্রসিকিউটর ছিলেন আইনজীবী তুহিন আফরোজ। ওই ট্রাইব্যুনাল গঠনের তিন বছরের মাথায় প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তুরিন আফরোজ।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় তিনি ভূমিকা রাখেন।
তাকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে ওই মামলা চলার মধ্যেই ২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তুরিনকে।
যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ওয়াহিদুলের সাথে গোপন বৈঠকের ঘটনায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তাকে অপসারণ করে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার।
বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা ওই সময়কার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তখন বলেছিলেন, তুরিন আফরোজকে অব্যাহিত দেওয়াটা ‘জরুরি’ হয়ে পড়েছিল।
গত ৫ অগাস্ট সরকার পতনের দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। সেদিন বিকালে নীলফামারীর জলঢাকায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ব্যক্তিগত কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়েছিল। ক্ষমতার পালাবদলের সপ্তাহ দুয়েক পর ২০২৪ সালের ২০ অগাস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুরিন আফরোজসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগ তদন্তের আবেদন করা হয়। ওই আবেদনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।