নতুন মামলায় গ্রেফতার সালমান-মামুন-জিয়াউল
মানব কথা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর খিলগাঁও পল্লীমা স্কুলের সামনে আহত পরিবহন শ্রমিক সোহেলের হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাপত্তারক্ষীকে অপহরণ ও গুমের ঘটনায় করা মামলায় বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার সকালে কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক আতিকুজ্জামান সালমান এফ রহমান ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। আর জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক মো: তহিদুল ইসলাম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তাদের এসব মামলায় গ্রেফতার দেখান।
গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পর দিন ১৪ আগস্ট তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।
গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে মামুনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যার অভিযোগে করা মামলার পরের দিন ৪ সেপ্টেম্বর তার আট দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় মোহাম্মদ ইসমামুল হক নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সালমান এফ রহমান ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টায় খিলগাঁও থানাধীন শহীদ বাকি সড়ক খিলগাঁও পল্লিমা স্কুলের সামনে ছাত্র জনতার আন্দোলনে যুক্ত হন মো: সোহেল (৩৪)। তালতলা মার্কেটের সামনে থেকে সরকার দলীয় সমর্থকসহ পুলিশ ছাত্র জনতার দিকে ইট পাটকেল, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট, ছড়া গুলিসহ সাউন্ড গ্রেনেড চার্জ করে।
ফলে মামলার বাদি পুলিশের ছড়া গুলির আঘাতে ডান হাতের ওপর এবং কপালের গুলি লাগে। গুরতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন। ছাত্র-জনতা হাসপাতালে নেয়ার পর কপাল থেকে এবং হাতের ওপর থেকে একটি গুলি বের করে ফেলে এবং কপালে অন্য গুলিটি মাংসের ভেতরে থেকে যায়।
এ ঘটনায় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৯ জনের নামে খিলগাঁও থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন।
মেজর জিয়াউলের মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৯ সালে পিলখানার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করার কারণে সেনাবাহিনী থেকে জোর করে কর্নেল তৌহিদুল ইসলামকে অবসরে পাঠানো হয়। এরপর ২০১৬ সালে খালেদা জিয়ার প্রধান প্রটেকশন অফিসার (নিরাপত্তা রক্ষী) হিসেবে কাজ শুরু করেন। খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা রক্ষী থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। সরতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে তাকে গুম করা হয়। এরপর দু’টি মামলায় গ্রেফতার দেখায়। এসময় অন্যায়ভাবে ২৫ দিন তাকে জেল খাটায়।