কালিয়ায় আগুন ভাংচুর লুটপাট, নিহত ১

সময়: 1:49 pm - April 12, 2025 |

নিজস্ব প্রতিবেদক: নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি আতাউর রহমান আত্তাব ও উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি মিলন মোল্যার গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় আত্তাব গ্রুপের সমর্থক ফরিদ মোল্যা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত ফরিদ মোল্যা কাঞ্চনপুর গ্রামের সুরত মোল্যার ছেলে। আহতদের নড়াইল জেলা হাসপাতাল ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তৌহিদ মোল্যা ও বছির মুন্সীর অবস্থা আশংকাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
ফরিদ নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্তাব গ্রুপের সোহরাব মোল্যা, পারভেজ শেখ, নাঈম শেখ, সোবহান শেখ, এনায়েত কাজী, আজিজুর মোল্যা, ফায়েক মোল্যা, নেসার মোল্যা, শিমুল শেখ, শামীম শেখ, ইকবাল গাজীসহ আরো অন্তত ২০ জন রাতভর প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়ীঘর ও দোকানপাট ভাংচুর এবং লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা নারী ও শিশুদের মারধর করে ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এলাকায় একটা ভীতির রাজত্ব তৈরি করে রেখেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করলেও আফতাব গ্রুপের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হতে দেখেও তারা নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
এতে জনি মল্লিক, আকার মল্লিক, শামরুল মল্লিক, মোস্তাক মল্লিক, মকিম, তুহিন, রজিবুল মোল্যা, শিরিন মোল্যা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ইকবাল মোল্যাসহ আরো অনেকের বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করায় বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বেলায়েত শেখের দোকান ভাংচুর ও মালামাল লুটপাট করায় কমপক্ষে ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
আজ শনিবার রাতেও আফতাব গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষের সংরক্ষিত অন্যবাড়ীগুলোতেও ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে বলে স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আত্তাবের কাছ থেকে গত ৫ আগস্টের পর বড় অংকের টাকা খেয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পিকুল শেখ আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। তার নির্দেশেই মূলত আত্তাবের লোকজন অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকার পরও আবারো যেকোনো সময় হামলা-ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের আশংকায় এলাকার মানুষ নিরাপত্তাহীনতাবোধ করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পুরুষশূন্য গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় মহিলারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চলছিল, যার ভয়াবহ রূপ দেখা গেছে শুক্রবার রাতে।
কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় যৌথবাহিনী রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশী অস্ত্রসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর