সিরিয়ায় ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি ট্যাংক
মানব কথা: সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল আসাদের পতনের পর রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। বিদ্রোহীদের দখলে এখন দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার গণমাধ্যম সূত্রে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের বিজয়ের পর ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে প্রবেশ করেছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী গোলান মালভূমির সিরিয়া-ইসরায়েল সীমান্তে তাদের সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এটি ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো ঘটছে। এ পদক্ষেপ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল সেনারা আরও জানায়, তারা গোলান মালভূমি এবং সীমান্তের আশপাশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা পাঠিয়েছে। তবে গোলান মালভূমি অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য নতুন কোনো নিয়মাবলি চালু করা হয়নি।
এদিকে, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী দামেস্কের কাছে রাসায়নিক অস্ত্রের গুদাম এবং অন্যান্য সামরিক স্থাপনাগুলিতে আকাশ থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে। এর উদ্দেশ্য ছিল এসব অস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে না পড়ুক এবং তারা সিরিয়ায় আরও অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে না পারে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জাতিসংঘ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে বিদ্রোহীদের প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী হাদের শহরে অতিরিক্ত স্থল ও বিমানসেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গোলান মালভূমি থেকে আর্টিলারি শেল নিক্ষেপের খবরও পাওয়া গেছে, যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
ইসরায়েল সেনারা একই সঙ্গে লেবানন সীমান্তের কাছে থাকা হেজবুল্লাহর একটি কনভয়ে আক্রমণ করেছে, যেগুলো সিরিয়া থেকে পালিয়ে লেবাননে যাচ্ছিল। এই কনভয়ে অন্তত ১৫০টি ট্যাঙ্ক ও সামরিক গাড়ি ছিল।
এসব পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে ইসরায়েল তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছে এবং তারা সিরিয়ায় চলমান বিদ্রোহ ও অস্থিতিশীলতার মধ্যেও নিজেদের সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে।
ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সিরিয়ার অভ্যন্তরে আরও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইসরায়েলের সরাসরি সংঘর্ষ হলে এটি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ অংশ দখল করে। ১৯৮১ সালে সেটির পুরোটাই তারা নিয়ন্ত্রণে নেয়। ১৯৭৪ সালের পর এটি প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি বাহিনী ইসরায়েল এবং সিরিয়ার মধ্যে বাফার জোনে অবস্থান নিয়েছে। আইডিএফ অতীতেও বেশ কয়েকবার সংক্ষিপ্তভাবে বাফার জোনে প্রবেশ করে।