সোহান ঝড়ে হেরে গেল বরিশাল
মানব কথা: বিপিএলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে রংপুর রাইডার্স। অসম্ভবকেই যেন সম্ভব করলেন নুরুল হাসান সোহান। ফরচুন বরিশালের হাতের নাগাল থেকে জয় ছিনিয়ে আনলেন রাইডার্স অধিনায়ক। শেষ ওভারে ৩০ রান তুলে জেতালেন দলকে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেটে মুখোমুখি হয় ফরচুন বরিশাল ও রংপুর রাইডার্স। যেখানে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৯৭ রান তুলে তামিম বাহিনী। বিপরীতে দমবন্ধ লড়াই শেষে শেষ বলে এসে ৩ উইকেটের জয় পায় রংপুর।
প্রথম দেখায় বড় ব্যবধানে হারানোর পর সামাজিক মাধ্যমে বরিশালকে খোঁচা দিয়েছিল রংপুর। এবার সে খোঁচার জবাব দেয়ার সুযোগ আসে বরিশালের কাছে। তবে খুব কাছে গিয়েও সেই আশা অপূর্ণ থেকে গেল, এক সোহানের কাছে বিফলে গেল তাদের সব প্রচেষ্টা।
সোহান বল খেললেন মাত্র সাতটি, যেখানে সমান তিনটি করে চার-ছক্কা! তবুও আবার এমন মুহূর্তে, যখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ৬ বলে ২৬ রান। বেশ দুরূহ কাজ বটে। তবে সোহান তার ধার ধারেননি, প্রতিটি বলেই মায়ার্সকে মেরে পাঠিয়েছেন সীমানার ওপারে।
অথচ জয়ের পথেই ছিল বরিশাল। এমনকি তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জয় নিশ্চিত ভেবে ‘জাগো বাহে জাগো’ লিখে একটা পোস্টও আপলোড করা হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই পোস্ট ডিলিট করা হয় তাদের পেইজ থেকে।
১৯৮ রানের বিশাল এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই এলেক্স হেলসকে (১) হারায় রংপুর। সাইফ হাসান ১৯ বলে ২২ ও তৌফিক খান ২৮ বলে ৩৮ করে আউট হোন। ৯ ওভারে ৬৬ রানে ৩ উইকেট হারায় রংপুর।
সেখান থেকে ইফতেখার আহমেদ ও খুশদিল শাহ মিলে দলকে পাড় করে দেন দেড় শ’ রানের গণ্ডি। ৫৩ বলে করেন ৯১ রানের জুটি। তবে ৪ বলের ব্যবধানে দু’জনে ফেরেন। ইফতেখার ৩৬ বলে ৪৭ ও খুশদিল করেন ২৪ বলে ৪৮ রান।
তাদের বিদায়ের পর ম্যাচ ফের হেলে পড়ে বরিশালের দিকে। শেখ মেহেদী শিকার হন বিতর্কিত ‘অবস্ট্রাকিং দ্য ফিল্ড’ আউটের (১)। পরের বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ফেরেন সাইফুদ্দিন। ১৮.৫ ওভারে ১৭২ রানে ৭ উইকেট হারায় রংপুর।
এরপর শেষ ওভারে মায়ার্সকে পাত্তাই দেননি সোহান। ওভার কার্ড ছিল— ৬, ৪, ৪, ৬, ৪, ৬। বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েই জয় নিশ্চিত করেন সোহান। তাতে রংপুর পায় ৩ উইকেটের জয়।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তর উদ্বোধনী জুটিতে বড় পুঁজির ভিত পায় বরিশাল। ১০ ওভারেই উঠে বিনা উইকেটে ৮০ রান। টানা ব্যর্থতার পর রানের দেখা পান শান্ত, ১০.১ ওভারে ফেরার আগে করেন ৩০ বলে ৪১।
একই ওভারের শেষ বলে ফেরেন তামিম ইকবালও। আউট হোন ৩৪ বলে ৪১ করে। তবে মায়ার্স ও তাওহীদ হৃদয় ধরেন হাল। হৃদয় ১৮ বলে ২৩ রানে ফেরার আগে জুটিতে যোগ করেন ৩৫ বলে ৫৯ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অবশ্য রান পাননি (২)।
তবে শেষ দিকে ফাহিম আশরাফকে নিয়ে ৯ বলে আরো রান যোগ করেন মায়ার্স। আশরাফ থামেন ৬ বলে ২০ করে। মায়ার্স অপরাজিত থাকে ১ চার আর ৭ ছক্কায় ২৯ বলে ৬১ রান নিয়ে। কামরুল ইসলাম নেন ২ উইকেট।
ফলে ৬ ম্যাচের সব কটিতে জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান পাকাপোক্ত করল রংপুর। অন্যদিকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বরিশাল দুটি ম্যাচে হারল, দুটিই রংপুরের বিপক্ষে। মুখোমুখি দেখায় আগের ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরেছিল তারা।